আইসিইউতে পড়ে রয়েছে ৬ করোনা রোগীর মৃতদেহ, ক্যান্টিনে লুকিয়ে চিকিৎসক-নার্সরা!

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, অক্সিজেনের অভাবের কথা প্রশাসন ও রোগী পরিবারদের জানানো হয়েছিল। অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

আইসিইউতে পড়ে রয়েছে ৬ করোনা রোগীর মৃতদেহ, ক্যান্টিনে লুকিয়ে চিকিৎসক-নার্সরা!
আইসিইউতে পড়ে রয়েছে মৃতদেহ।

|

May 06, 2021 | 9:40 AM

নয়া দিল্লি: ফাঁকা হাসপাতাল চত্বর, গোটা হাসপাতাল ঘুরলেও দেখা মিলবে না একজন চিকিৎসক বা নার্সের। রোগীর পরিবার চিকিৎসকের খোঁজে আইসিইউতে ঢুকতেই আঁতকে উঠলেন। কারণ একের পর এক বিছানায় কেবল মৃতদেহই পড়ে রয়েছে করোনা রোগীদের। মৃতদের পরিবারের অভিযোগ, অক্সিজেনের অভাবে ছয়জন রোগীর মৃত্যু হওয়ার পরই হাসপাতাল ছেড়ে পালান চিকিৎসক, নার্স।

শুক্রবার রাতে গুরগাঁওয়ের একটি হাসপাতালের ভিডিয়ো সম্প্রতি ভাইরাল হওয়াতেই গোটা ঘটনাটি সামনে আসে। ভিডিয়োয় দেখা যায়, রোগীদের পরিজনেরা বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসক বা নার্সের খোঁজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু গোটা হাসপাতালে একজন নিরাপত্তারক্ষীরও দেখা নেই।

পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আইসিইউতে ঢুকতেই তাঁরা আরও চমকে ওঠেন। দেখতে পান, পরপর বেডে করোনা রোগীর মৃতদেহ পড়ে রয়েছে শুধু। এই দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সকলে। ভিডিয়োয় শোনা যায়, পরিবারের লোকজন উপস্থিত পুলিশকর্মীদের প্রশ্ন করছেন যে, “এভাবে কী করে চিকিৎসকদের পালিয়ে যেতে দিলেন আপনারা? একমাত্র যাঁরা নিজেদের আপন কাউকে হারান, তাঁরাই একমাত্র বোঝেন।”

অক্সিজেনে ঘাটতি নিয়ে মৃত রোগী পরিবারের এক সদস্য জানান, তিনি নিজে ভাগ্নের জন্য তিন সিলিন্ডার অক্সিজেন জোগাড় করে এনেছিলেন। কিন্ত কয়েক মিনিটের মধ্যে তা শেষ হয়ে যায় এবং মৃত্যু হয়।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা জানান, চিকিৎসকেরা হাসপাতালেই ছিলেন কিন্তু প্রাণ ভয়ে ক্যান্টিনে লুকিয়ে ছিলেন। হাসপাতালের ডিরেক্টর স্বাতী রাঠোর বলেন, “দুপুর ২টো নাগাদই সমস্ত সরকারি আধিকারকদের অক্সিজেনের অভাবের কথা জানানো হয়েছিল। সেদিনই অক্সিজেন ফুরিয়ে যাবে বলেও জানানো হয়েছিল।”

তিনি আরও বলেন, “অক্সিজেনের অভাবের কথা জানিয়ে দুপুর চারটের সময়ই আমরা রোগী পরিবারদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কোথাও থেকে কোনও সাহায্য পাইনি। রাত ১১টা নাগাদ ছয়জনের মৃত্যু হয়।” এরপরই রোগীর পরিজনের ক্ষোভের হাত থেকে বাঁচতে ক্যান্টিনে লুকিয়ে থাকার পরামর্শ দেন। কারণ এর আগে গত ২৪ এপ্রিলও রোগীমৃত্যুর কারণে স্বাস্থ্যকর্মীদের মারধর করা হয়েছিল। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছতেই চিকিৎসক, নার্সরা তাঁদের কাজে ফিরে যান বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন: ময়নাতদন্তের নামে ৪ দিন মর্গেই পড়ে থাকল দেহ, অর্ধেকের বেশি দেহ খুবলে খেল পিপড়ে-ইদুর