নয়া দিল্লি : দেশে করোনার সংক্রমণ (COVID 19 Cases in India) ফের একবার লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে। করোনার এই নতুন ঢেউয়ে একটি বড় অংশের সংক্রমণের জন্য ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টকেই (Omicron Variant) দায়ী বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এমন এক সময়ে, আরও একটি বিষয় নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। ওমিক্রন কি সম্পূর্ণ আলাদা একটি মহামারী? তবে কি একইসঙ্গে সমান্তরালভাবে দুটি মহামারী চলছে? তারই উত্তর খুঁজছেন বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট তথা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের (ICMR) প্রাক্তন প্রধান চিকিৎসক টি জ্যাকব জন। তাঁর মতে, খুব সম্ভবত দুটি মহামারী একইসঙ্গে চলছে — একটি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে এবং অন্যটি ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণে।
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উৎস সম্পর্কে এক নতুন দিশা দিচ্ছেন ভাইরোলজিস্ট জ্যাকব জন। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, “ওমিক্রন উহান-ডি৬১৪জি, আলফা, বিটা, গামা, ডেল্টা, কাপা বা মিউ ভ্যারিয়েন্ট থেকে তৈরি হয়নি। এটি নিশ্চিতভাবে বলা যেতে পারে”। জ্যাকবের মতে, ওমিক্রনের উৎস সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি তবে যে করোনা ভ্যারিয়েন্টটির থেকে মহামারীর শুরু হয়েছিল, অর্থাৎ উহান-ডি৬১৪জি – তার সঙ্গে এর কোনও নিকট সম্পর্ক নেই।
তিনি আরও জানিয়েছেন, “যেহেতু ওমিক্রনের উৎস সম্পর্কে আমাদের বিশেষ জানা নেই, তাই করোনা মহামারী কীভাবে এগোচ্ছে, তার ‘স্ক্রিপ্টের’ মধ্যে এটিকে রাখা যায় না। তাই আমাদের অবশ্যই সমান্তরালভাবে চলতে থাকা দুটি মহামারীর কথা ভাবতে হবে। এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এবং তার সঙ্গে মিল রয়েছে এমন ভ্যারিয়েন্টগুলির একটি মহামারী। অন্যদিকে ওমিক্রন এবং তার সঙ্গ মিল রয়েছে এমন স্ট্রেনগুলির একটি মহামারী।”
নিজের বক্তব্যের সমর্থনে জ্যাকব আরও জানান, “এই কারণেই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সংক্রমণ জিনোম সিকোয়েন্সিং দ্বারা নিশ্চিত করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে তাঁদের উপসর্গগুলি কোভিডের সাধারণ উপসর্গ থেকে অনেকটাই আলাদা দেখা গিয়েছে। কোভিডের অতীতের ভ্যারিয়েন্টগুলি শ্বাসযন্ত্রকে প্রভাবিত করে, তবে ওমিক্রনের প্রভাব বেশিরভাগই গলার দিকে (শ্বাসনালীর উপরের দিকে)।”
ভারতের করোনার তৃতীয় ঢেউকে ঘিরে যে দুশ্চিন্তার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেই বিষয়ে ভাইরোলজিস্ট জ্যাকব জানাচ্ছেন, “মেট্রো শহরগুলি দ্রুত ওমিক্রনের শিখরে পৌঁছবে এবং সংক্রমণ শেষও হবে তাড়াতাড়ি।” সম্প্রতি, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক জন বেল বলেছেন, “ওমিক্রন আগের কোভিড স্ট্রেনের মতো একই রোগ সৃষ্টি করছে না।”
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে, এটিকে একটি মৃদু ভ্যারিয়েন্ট বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এ ক্ষেত্রে রোগীদের জটিলতা এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রবণতা কম। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অনেকেই এটিকে করোনা অতিমারির শেষের শুরু হিসাবেও দেখছেন।
আরও পড়ুন : PM Modi on vaccination: ‘ভারত গর্বিত’ টিকাকরণ কর্মসূচির বর্ষপূর্তিতে বার্তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর