Bengal Gold Mines: বাংলার এই ৯ জেলায় সোনার খনি থাকার সম্ভাবনা! আপনার জেলা লিস্টে আছে? দেখে নিন
Gold Mines beneath Bengal: সংসদের উত্তরে খনি মন্ত্রক জানিয়েছে, এই সমস্ত এলাকা বর্তমানে জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (Geological Survey of India)-র নজরদারিতে রয়েছে। ক্রমান্বয়ে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা হচ্ছে কোথায়, কতটা গভীরে এবং কী পরিমাণে সোনার অস্তিত্ব থাকতে পারে। প্রয়োজন হলে ভবিষ্যতে আরও উন্নত স্তরের অনুসন্ধান অর্থাৎ G-2 বা G-1 Stage-এ যাওয়ার কথা বিবেচনা করা হবে।

আজ সোনার দাম কত? আজ আবার কতটা বাড়ল ১০ গ্রামের দাম? এ জাতীয় প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আদিখ্যেতা বাঙালি নেটিজেনরা প্রতিদিনই করে থাকেন। তবে চিন্তা করবেন না। এইবার ধুপধাপ করে নেমে আসতে পারে সোনার মূল্য। হ্যাঁ, এমনটাই ঘটতে পারে আমাদের রাজ্যে। কারণ আমি নই, সামনে এনেছেন বিজেপির এক হেভিওয়েট নেতা। রাজ্যজুড়ে সোনার খোঁজের যে তথ্য আপনাদের দেব, তা কিন্তু একেবারেই রূপকথা নয়, বরং সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে উঠে এসেছে বাংলার সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের কথা! কী সেই সম্ভাবনা? কেন এতটা আশা জোগাচ্ছে ওই একটা মাত্র প্রশ্ন?
পশ্চিমবঙ্গের মোট ৯টি জায়গায় সোনার খনি (Gold Mine) থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, এমনটা বলছে কেন্দ্রীয় খনি মন্ত্রক ওরফে Ministry of Mines। বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya)-এর এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে এই চমকপ্রদ তথ্য সামনে এসেছে। রাজ্যের একাধিক জেলায় প্রাথমিক সমীক্ষায় সোনার অস্তিত্বের ইঙ্গিত মিলেছে, পাওয়া যাচ্ছে এমন তথ্যও! কেন্দ্রীয় খনি মন্ত্রকের তথ্য বলছে, পুরুলিয়া (Purulia), বাঁকুড়া (Bankura), ঝাড়গ্রাম (Jhargram), কালিম্পং (Kalimpong), দার্জিলিং (Darjeeling) সহ মোট ৯টি জেলায় সোনার খনি থাকতে পারে। এই এলাকাগুলির মধ্যে অধিকাংশ এলাকাই বর্তমানে প্রাথমিক সমীক্ষার স্তরে রয়েছে অর্থাৎ, খনিজ অনুসন্ধানের ভাষায় যাকে বলা হচ্ছে জি-৪ স্টেজ (G-4 Stage – Reconnaissance)।
ইতিমধ্যেই বৃহৎ ভৌগোলিক অঞ্চলে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা হচ্ছে কোথায় খনিজ উত্তোলনের সম্ভাবনা তুলনামূলক বেশি। নিরীক্ষণের এই স্তরে মূলত কোনও খনি চিহ্নিত বা খননযোগ্য সম্পদের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় না। বরং, ভবিষ্যতে বিস্তারিত সমীক্ষার জন্য সম্ভাবনাময় এলাকাগুলিকে আলাদা করে চিহ্নিত করাই এই স্টেজের মূল উদ্দেশ্য। তবে এর মধ্যেও একটি জায়গা বিশেষভাবে লিস্টের উপরে উঠে এসেছে। বাঁকুড়া জেলার হংসাডুগরি (Hansadugri)-র ক্ষেত্রে সম্ভাবনা আরও এক ধাপ এগিয়েছে বলে জানাচ্ছে কেন্দ্র। ওই এলাকাকে রাখা হয়েছে জি-৩ স্তরে (G-3 Stage)। খনিজ অনুসন্ধানের পরিভাষায় জি-৩ স্তরের অর্থ জানেন? আসলে প্রাথমিক সমীক্ষার পর সেখানে বিস্তারিত অনুসন্ধান হয়েছে এবং তাতে এটা বোঝা গিয়েছে যে, এখানে খনিজের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে বেশি। যদিও এখনই খনি খোলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, তবে সম্ভাবনা যে ‘উজ্জ্বল’, তা স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে মন্ত্রকের তরফে।
সংসদের উত্তরে খনি মন্ত্রক জানিয়েছে, এই সমস্ত এলাকা বর্তমানে জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (Geological Survey of India)-র নজরদারিতে রয়েছে। ক্রমান্বয়ে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা হচ্ছে কোথায়, কতটা গভীরে এবং কী পরিমাণে সোনার অস্তিত্ব থাকতে পারে। প্রয়োজন হলে ভবিষ্যতে আরও উন্নত স্তরের অনুসন্ধান অর্থাৎ G-2 বা G-1 Stage-এ যাওয়ার কথা বিবেচনা করা হবে।
আর এই সোনার খনির সম্ভাবনা নিয়ে কিন্তু রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে। একদিকে যেমন রাজ্যের খনিজ সম্ভাবনা নিয়ে নতুন করে আলোচনা হচ্ছে, তেমনই অন্যদিকে প্রশ্ন উঠছে একাধিক। এই সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ পেলে রাজ্যের অর্থনীতি (State Economy) ও কর্মসংস্থানের (Employment) ক্ষেত্রে কতটা প্রভাব পড়তে পারে? সে বিষয়ে আশাবাদী বিশেষজ্ঞদের একাংশ। যদিও বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ সাফ জানিয়েছেন যে, জি-৪ বা জি-৩ স্তরের তথ্য মানেই যে অবিলম্বে সোনার খনি পাওয়া যাবে, এমনটা ভাবা ঠিক নয়। এই যে পশ্চিমবঙ্গের মাটির নীচে টন টন সোনা লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনা উঠে এসেছে খাতায়-কলমে, এই বা কম কীসে! বাংলায় কর্মক্ষেত্রের বেহাল দশা বারংবার যেভাবে সংবাদের শিরোনামে উঠে আসে, সোনার খনি খোঁড়া হলে সেই দুর্দশা অন্তত কিছু মাত্রায় কমবে বলেই আশা করছে ওয়াকিবহাল মহল। এইবার প্রশ্ন হচ্ছে, সোনা কি পাওয়া যাবে? পাওয়া গেলে সোনার দাম কি কমবে আমাদের বাংলায়? সেই প্রশ্নের উত্তর দেবে সময়।
