কলকাতা: অবশেষে এপারে এল বাংলাদেশি ইলিশ। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবারই (২৬ সেপ্টেম্বর), বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ মেট্রিক টন ইলিশ এসেছে পশ্চিমবঙ্গে। এটাই এই মরসুমে বাংলাদেশি ইলিশের প্রথম চালান। তবে, সেই ইলিশের আকার, মৎস্যপ্রেমীদের মন ভরাতে পারবে না বলে আশঙ্কা করছেন আমদানিকারকরা। কারণ, বাংলাদেশ থেকে আসা ইলিশগুলির আকার বেশ ছোট বলে জানা গিয়েছে। আকারে ছোট হলেও, মাছগুলির দাম পড়বে বেশ বেশি। আসলে এবার মাছ উঠেছেই বেশ কম, তাই এমন পরিস্থিতি বলে জানিয়েছেন আমদানীকারকরা। পশ্চিমবঙ্গের মৎস্য আমদানিকারক সমিতির সেক্রেটারি, এসএ মাকসুদ বলেছেন, “বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ মেট্রিক টন ইলিশ পশ্চিমবঙ্গে এসে পৌঁছেছে। সপ্তাহান্তে আরও ৩০-৪০ মেট্রিক টন ইলিশ আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
শুক্রবারের মধ্যে, বাংলাদেশ থেকে আসা ইলিশগুলি, হাওড়া, শিয়ালদহ, পাতিপুকুর এবং শিলিগুড়ির পাইকারি বাজারে পৌঁছে গিয়েছে। শনিবার থেকে পাওয়া যাচ্ছে স্থানীয় খুচরা বাজারগুলিতে। আমদানিকারকরা জানিয়েছেন এই মাছগুলির গড় আকার ৭০০ গ্রাম থেকে ১ কিলোর মধ্যে। এর আগের বছরগুলিতে পাঠানো ইলিশের গড় আকার ছিল ১ কিলো – ১.৫ কিলো। এই বছর পাইকারি বাজারেই এই ছোট আকারের বাংলাদেশি ইলিশগুলির দাম পড়বে ১০০০ থেকে ১,৫০০ কেজি।
বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর, প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ জানিয়েছিল, এই বছর পুজোয় ভারতে ইলিশ পাঠানো হবে না। রফতানির আগে তারা দেশের মানুষের চাহিদা মেটানোর উপর জোর দেবেন বলে জানিয়েছিল। এরপর, এই বঙ্গের মাছ আমদানিকারক সমিতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিল। এরপর, গত ২১ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানায়, পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে, প্রায় ৪৯টি সংস্থাকে প্রায় ২,৪২০ মেট্রিক টন মাছ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তারই প্রথম চালান এসেছে গত বৃহস্পতিবার। বাকি চালানগুলি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এসে পৌঁছবে বলে জানা গিয়েছে।
২০১২ সালেই ইলিশ রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল শেখ হাসিনা-সরকার। তবে, ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর কয়েক হাজার মেট্রিক টন করে ইলিশ মাছ ভারতে রফতানির অনুমতি দিয়েছিল তারা। একে দুর্গাপূজার উপহার হিসাবে বিবচনা করা হত। জানা গিয়েছে, ২০২১, ২০২২ এবং ২০২৩-এ বাংলাদেশ থেকে যথাক্রমে ৪,৬০০ মেট্রিক টন, ২৯০০ মেট্রিক টন এবং ৩,৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি করা হয়েছিল।