
নয়া দিল্লি: পোষ্য কুকুরের অধিকার কার, তা নিয়ে আদালতে মামলা। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra) ও আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাই(Jai Anant Dehadrai)-কে ধমক দিল দিল্লি হাইকোর্ট। পোষ্য কুকুর নিয়ে মামলায় কেন তাঁরা একসঙ্গে বসে এই ঝামেলা মেটাতে পারছেন না, তা নিয়ে এ দিন প্রশ্ন তোলে হাইকোর্ট।
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাই একসময়ে সম্পর্কে ছিলেন। সেই সম্পর্ক ভাঙার পর থেকেই নানা ইস্যুতে তাদের মধ্যে সংঘাত বাঁধে। এমনকী, জয় অনন্তকে ‘জিল্টেড এক্স’ বলেও খোঁচা দিয়েছিলেন মহুয়া। এদিকে, ঘুষ নিয়ে সংসদে প্রশ্ন কাণ্ডে মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন জয় অনন্ত দেহদ্রাই।
তাদের সংঘাতের আরেকটি অংশ হল হেনরি। তাদের পোষ্য রট হুইলার, যার উপরে কার অধিকার থাকবে তা নিয়ে অশান্তি চরম। দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হেনরিকে চুরি করার অভিযোগ এনেছেন। একদিকে, মহুয়া যেমন দাবি করেছেন যে হেনরি তাঁর। অন্যদিকে, জয় অনন্ত দেহদ্রাইয়ের দাবি, ৪০ দিন বয়স থেকে হেনরি তাঁর সঙ্গে রয়েছে। তিনিই কুকুরটিকে কিনেছিলেন। ২০২৩ সালে হেনরির উপরে কার অধিকার থাকবে, তা নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে মামলাও করেন মহুয়া মৈত্র। জয় অনন্ত দেহদ্রাইয়ের কাছ থেকে কাস্টডির এগ্রিমেন্টে সই করানোর জন্য পুলিশও পাঠিয়েছিলেন।
সেই বছরই নভেম্বর মাসে জয় অনন্ত দেহদ্রাই দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন যে তৃণমূল সাংসদ কুকুরকে বাহানা হিসাবে ব্যবহার করছে তাঁর বাড়িতে আসা এবং তাঁকে ভয় দেখাতে। অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনেন মহুয়ার বিরুদ্ধে।
এ দিন দিল্লি হাইকোর্টে বিচারপতি জৈন মহুয়া মৈত্রের কুকুরের যৌথ দেখভালের আবেদনের প্রেক্ষিতে বলেন, “আপনারা কেন একসঙ্গে বসে সমাধান করে নিচ্ছেন না? কী চাইছেন তিনি মামলায়?”
মামলায় মহুয়া মৈত্র দাবি করেছিলেন যে হেনরি তাঁর। তাও যৌথ কাস্টডির দাবি জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাই ট্রায়াল কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেন। ট্রায়াল কোর্টের নির্দেশে বলা হয়েছে যে এই কাস্টডি লড়াই নিয়ে প্রকাশ্যে তারা কোনও কথা বলতে পারবেন না।
এ দিন জয় অনন্ত দেহদ্রাইয়ের আইনজীবী সঞ্জয় ঘোষ বলেন যে ট্রায়াল কোর্টের এই রায়ে তিনি (জয়) অত্যন্ত দুঃখিত। আদালতের এই নির্দেশ বাক স্বাধীনতাকে খর্ব করছে। এক্স হ্যান্ডেলে মামলার ডিটেল পোস্ট করায়, তা আদালতের নির্দেশভঙ্গ বলেই উল্লেখ করা হয়। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আইনজীবী বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ফালতু মামলা করা হয়েছে, আর আমি এই বিষয় নিয়ে কথাও বলতে পারব না। আমি লিখতে পারব না? মামলায় নিরপেক্ষতা কোথায়? ওঁ (মহুয়া মৈত্র) একজন সাংসদ। একজন সাংসদ কি সাধারণ মামলাকারীর থেকে বেশি অধিকার দাবি করতে পারেন?”
দিল্লি হাইকোর্টের তরফে এ দিন তৃণমূল সাংসদের কাছ থেকে জবাব চাওয়া হয়। আগামী ডিসেম্বর মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।