কেন কংগ্রেস ত্যাগ জীতিনের? কোন অঙ্কে বিজেপির ‘লাভ’?

উত্তরপ্রদেশের জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ ব্রাহ্মণ ভোটার বিজেপির উপর নাকি ক্ষুব্ধ। যোগী আদিত্যনাথ সরকারের অনেক সিদ্ধান্তই উত্তরপ্রদেশের ব্রাহ্মণদের বিজেপির বিরোধী করে তুলেছে। সামনে বিধানসভা ভোট।

কেন কংগ্রেস ত্যাগ জীতিনের? কোন অঙ্কে বিজেপির 'লাভ'?
জেপি নাড্ডার হাত ধরে বিজেপিতে জীতিন প্রসাদ
Follow Us:
| Updated on: Jun 10, 2021 | 12:20 AM

জ্যোতির্ময় রায়: আবার চমক। কংগ্রেসকে কার্যত অবাক করেই রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর অতি ঘনিষ্ঠ সহযোগী জীতিন প্রসাদ বুধবার বিজেপিতে যোগ দিলেন। এহেন নেতাকে ভাঙিয়ে বিজেপি উত্তর প্রদেশের আগামী নির্বাচনের জন্য ঘুঁটি সাজানো শুরু করল বিজেপি।

জীতিন প্রসাদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর অতি ঘনিষ্ঠ নেতা হিসাবে পরিচিত। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের পরবর্তী প্রচারে দল তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিতে চলেছিল। জীতিন প্রসাদ কংগ্রেসে জাতীয় সম্পাদকের হিসেবে কাজ করেছেন এবং ইউপিএ সরকারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। সেই জীতিন এবার বিজেপিতে।

জীতিন প্রসাদের বাবা অধুনা প্রয়াত জিতেন্দ্র প্রসাদ কংগ্রেসের বিশিষ্ট নেতা ছিলেন। ইন্দিরা গান্ধীর সময় থেকে দলে কাজ করেছেন। কংগ্রেস এবং গান্ধীদের অনুগত নেতা হিসাবে পরিচিত ছিলেন তিনি। কংগ্রেসও তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছিল। কিন্তু ২০০০ সাল। কংগ্রস সভাপতি নির্বাচনে কার্যত সনিয়া গান্ধীকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বসেছিলেন জিতেন্দ্র প্রসাদ। আর জিতেন্দ্রের পুত্র জীতিন প্রসাদ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য বুধবারই কংগ্রেস ছেড়েছেন। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের আর বছর খানেক বাকি। তার আগেই কংগ্রেস ছেড়ে দিলেন হেভিওয়েট বড় ঝটকা দিলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জিতিন প্রসাদকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে থাকা জীতিন প্রসাদ কোনও প্রভাব দেখাতে পারেননি। একুশের ভোটে বাংলায় কংগ্রেসের আসন পৌঁছেছে শূন্যে। কংগ্রেসের ভোট শতাংশের রেকর্ডও ১০ শতাংশ কমেছে। এখন প্রশ্ন কেন কংগ্রেস ছাড়লেন জীতিন?

বলা হয়ে থাকে, উত্তরপ্রদেশের জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ ব্রাহ্মণ ভোটার বিজেপির উপর নাকি ক্ষুব্ধ। যোগী আদিত্যনাথ সরকারের অনেক সিদ্ধান্তই উত্তরপ্রদেশের ব্রাহ্মণদের বিজেপির বিরোধী করে তুলেছে। সামনে বিধানসভা ভোট। তাই উত্তরপ্রদেশের ব্রাহ্মণ মুখ হিসাবে পরিচিত জীতিনকে কাজে লাগানো যাবে বলে মনে করছে বিজেপি। অন্যদিকে সাহারানপুরে দলের কাজে জীতিন নাকি একেবারেই সন্তুষ্ট ছিলেন না। বছরের পর বছর ধরে যাঁরা প্রতিকূলতার মধ্যে কংগ্রেস দল করছেন তাঁদের কোনও গুরুত্ব নেই বলে মনে করেন জীতিন। এতেই বিরক্ত হয়ে নাকি তাঁর দলত্যাগ।

আরও পড়ুন: অপারেশন জ্যাক: ভরত কুমারই বলে দিয়েছিল কোথায় আছে জয়পাল সিং ভুল্লার 

কংগ্রেসে থাকাকালীন জীতিন প্রসাদ ব্রাহ্মণ চেতনা মঞ্চ নামে একটি সংস্থা গঠন করেন। উত্তর প্রদেশের বড় ব্রাহ্মণ মুখ না হলেও, শাহজাহানপুর, ললিতপুর এবং আশেপাশের অঞ্চলগুলিতে তাঁর আংশিক প্রভাব রয়েছে। তাহলে ব্রাহ্মণদের সন্তুষ্ট করতেই কি জীতিনকে নেওয়া হল? প্রশ্ন উঠছেই। এখন দেখার উত্তরপ্রদেশের আসন্ন বিধানসভা ভোটে বিজেপির পক্ষে জীতিন ফ্যাক্টর কতটা কার্যকরী হয়।