কলকাতা: গত শনিবার, প্রচারসভা থেকে ফেরার পথে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সভায় কম লোকজন হওয়ায় গাড়ি থেকেই ‘খেলা হবে’ স্লোগান দিয়ে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ। সেই ভিডিয়ো নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন সায়নী। তারপরের দিন সায়নীর হোটেলে পৌঁছয় ত্রিপুরা পুলিশের বিরাট বাহিনী। পুলিশ সায়নীর সঙ্গে কয়েকটি বিষয়ে কথা বলতে চায়। পূর্ব আগরতলা মহিলা থানায় জিজ্ঞাসাবাদের পর সায়নীকে গাড়ি চাপা দিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরের দিনই সোমবার আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন যুব তৃণমূল নেত্রী।
সায়নীর গ্রেফতারের পর থেকেই শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক চাপান উতর। সায়নীকে মিথ্যা অভিযোগে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে এই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিল বিজেপি। বিজেপির অভিযোগ ছিল, সায়নী প্ররোচনা দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করেছেন। এমনকি সায়নীর গাড়িও অনেককে পিষে মারার চেষ্টা করেছে। জামিনে মুক্ত হয়ে কী বলছেন সায়নী? তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা যাবতীয় অভিযোগ মিথ্যা। আমি বিজেপি নই যে গাড়ি চাপা দিয়ে মারার চেষ্টা করব। আমার গাড়িকে বিজেপি কর্মীরা তাড়া করছিল। আমি তাদের দেখে খেলা হবে স্লোগান দিয়েছি, তারাও ধর্মীয় স্লোগান দিয়েছে। তাদের কাউকে কি গ্রেফতার করা হয়েছে? তবে আমাকে কেন গ্রেফতার করা হল।”
খুব তাড়াতাড়ি আবার ত্রিপুরাতে তিনি ফিরে যেতে চান বলেই জানিয়েছেন সায়নী। সম্প্রতি ত্রিপুরা প্রশাসনকে পুরভোটের বিরোধী প্রার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। দেশের সর্বোচ্চ আদালত আরও জানিয়েছিল, সব দল যেন প্রচারে সুযোগ পায় প্রশাসন যেন সেটা সুনিশ্চিত করে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা সুপ্রিম কোর্টের ওপর আস্থাশীল। কিন্তু আমার ভয় বিপ্লব দেবের লোকেরা আবার সেখানে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করবে। এমনকি সাংবাদিকদেরও রেয়াত করা হয়নি। আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বলে আমি মোটেই ভয় পাইনি। আমাদের দল মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে রাজনীতিতে করতে বিশ্বাস করে। ঘাসের মূল যত কাটা হবে, তত বেশি ঘাস উঠবে। বিজেপিকে আমরা এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না।”
আজ নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন সায়নী। সেখানে মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি দলের সর্বস্তরের নেতা কর্মীদের পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। তিনি লিখেছেন, “আমি মশাল ধরেছি শুধু।। অগণতান্ত্রিক ভাবে মা মাটি মানুষের আত্ম সম্মানে আঘাত করতে চেয়েছিল যারা, তারা আসলে বোঝে নি আমাদের লড়াই এত সহজে দমিয়ে দেওয়া যায় না, যায় নি অতীতে, যাবে না ভবিষ্যতেও……..সকলের প্রার্থনায়, ভালোবাসায় আজ আরও উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার সাহস পেলাম এটুকু বলতে পারি।। ধন্যবাদ জানাই সেই প্রত্যেক জন মানুষকে, যারা বিজেপির এই স্বৈরাচারে আহত হয়েও হার মেনে নেননি! একান্ত ধন্যবাদ জানাই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে, তাদের সহযোগিতা আমার এগিয়ে চলার সাহস।”