Supreme Court: ‘নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়ার পরেই ভোটাধিকার’, সুপ্রিম পর্যবেক্ষণে চাপে মতুয়ারা?
Matua in Bengal: জাতীয় নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছে যাঁরা ভারতের নাগরিক এখনও নন, নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে তাঁরা কোনওভাবেই ভোটার তালিকায় থাকতে পারে না। এই প্রেক্ষাপটেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আত্মদীপ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। তাঁদের দাবি, যাঁদের আবেদন এখনও বিচারাধীন রয়েছএ তাঁদের আপতভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক।

নয়া দিল্লি: নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়ার পরই পাওয়া যাবে ভোটাধিকার। স্পষ্ট করে দিল সুপ্রিমকোর্ট। ভোট দিতে পারবেন কি CAA-তে নাগরিকত্বের আবেদনকারী মতুয়ারা? প্রশ্ন ঘুরলেও সুপ্রিম কোর্টের মঙ্গলবারের পর্যবেক্ষণের পর ফের অনিশ্চিত পশ্চিমবঙ্গের CAA তে আবেদনকারীদের ভোটাধিকারের ভবিষ্যৎ। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ২০১৯-এর নির্দেশিত সময়সীমা অনুযায়ী যারা নাগরিকত্ব লাভের যোগ্য, কিন্তু যাদের নাগরিকত্বের আবেদন এখনও বিচারাধীন, তাঁদের SIR এর পর ভোটার তালিকায় সংযুক্ত করার আবেদন জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল আত্মদীপ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। চলে শুনানি।
কী বলছে সিএএ?
নাগরিকত্ব সংশোধন আইনে স্পষ্টতই বলা আছে সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাঁরা ভারতে এসেছেন তাঁরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন সে বিষয়েও সুনির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা আছে। অর্থাৎ সেই জাতীগত শর্ত যদি মানা হয় তাহলেই তাঁরা নাগরিকত্ব পাবেন। স্বাভাবিকভাবেই সেই বিষয়গুলি যতক্ষণ না যাচাই হচ্ছে, যতদিন তাঁদের আবেদন বিচারাধীন থাকছে ততদিন তাঁরা ভারতের নাগরিক হিসাবে কখনও গণ্য হচ্ছে না।
কে করেছিল মামলা? কোথা থেকে সূত্রপাত?
অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছে যাঁরা ভারতের নাগরিক এখনও নন, নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে তাঁরা কোনওভাবেই ভোটার তালিকায় থাকতে পারে না। এই প্রেক্ষাপটেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আত্মদীপ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। তাঁদের দাবি, যাঁদের আবেদন এখনও বিচারাধীন রয়েছএ তাঁদের আপতভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক। এসআইআরের পর যে সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে সেখানে যেন তাঁদের জায়গা দেওয়া হয় সেই আবেদনও করা হয়। পাশাপাশি সিএএ-র এই প্রক্রিয়া অর্থাৎ নাগরিকত্ব যাচাইয়ের প্রক্রিয়াও আরও দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল পিটিশনের মাধ্যমে। আবেদন জানান স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে আইনজীবী করুণা নন্দী। কোর্ট যদিও এ বিষয়েও কোন নির্দেশ দিতে অস্বীকার করে। কিন্তু সামনে আসে একের পর এক তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ।
কী বলছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন?
সুপ্রিম কোর্ট এদিন প্রথমেই বলে দেয় যাঁরা আবেদন করেছেন তাঁদের আবেদন যতক্ষণ না যাচাই হচ্ছে, যতক্ষণ না তাঁরা ভারতের নাগরিক হিসাবে ঘোষিত হচ্ছে ততক্ষণ তাঁরা ভোটাধিকার পেতে পারে না। এদিন বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয় প্রথমে নাগরিকত্ব পেতে হবে তারপরে ভোটার তালিকায় নাম তোলার বিষয়ে আসবে। তবে নাগরিকত্ব নির্ধারণের ক্ষেত্রে জাতীয় নির্বাচন কমিশনেরও কোনও ভূমিকা নেই বলে কমিশনের তরফে অবস্থান জানিয়ে দেন আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী। তাঁর বক্তব্য, এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় সরকার।
আশার আলো কি রয়েছে?
তবে বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকারকে এ বিষয়ে নোটিস ইস্যু করেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রের বক্তব্য জানানোর কথা বলা হয়েছে। অ্য়াটর্নি জেনারেলের অফিসের মাধ্যমে এই নোটিস ইস্যু করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই এই বিষয়ের শুনানি হবে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় সরকার যদি এই সিএএ প্রক্রিয়াকে দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়, যদি তা ফেব্রুয়ারির মধ্যে হয় তাহলে যাঁরা আবেদন করেছেন তাঁরা ভোট দিতে পারবেন। কিন্তু তার জন্যই অবশ্যই নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
