Year Ender 2025: মহাকুম্ভ থেকে অপারেশন সিঁদুর, ২০২৫ সালকে স্মরণীয় করে রাখবে যে যে ঘটনা…

নয়া দিল্লি: দেখতে দেখতেই আরও একটা বছর শেষ। নতুন বছর দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে। ২০২৫ বছরটা বর্ণময় ছিল। দেশে একাধিক এমন ঘটনা ঘটেছে, যা সকলের মনে আলোড়ন তৈরি করেছে। কোনও ঘটনা যেমন সাধুবাদ কুড়িয়েছে, কোনও ঘটনা আবার চোখের কোণ ভিজিয়েছে। ২০২৬ সাল শুরু করার আগে একবার ফিরে দেখা যাক যে চলতি বছরে সবথেকে বড় কী কী ঘটল, যা গোটা দেশ তথা বিশ্বের নজর কাড়ল-

মহাকুম্ভ-

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রয়াগরাজে হল মহাকুম্ভ। ১৩ জানুয়ারি, পৌষ পূর্ণিমা থেকে শুরু করে ২৬ ফেব্রুয়ারি মহাশিবরাত্রি পর্যন্ত চলে এই মহাকুম্ভ মেলা। ১৪৪ বছর বাদে এই মহা পূণ্যযোগ এসেছিল, যে কারণে এটিকে বিরল যোগ বলা হচ্ছিল। প্রয়াগরাজে গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর মিলনস্থল, ত্রিবেণীতে পুণ্যস্নানের আয়োজন করা হয়েছিল। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে প্রায় ৬৬ কোটি মানুষ এসেছিলেন কুম্ভস্নান করতে। এই মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনাও ঘটে, মৃত্যু হয় কমপক্ষে ৩০-৩৫ জনের।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়-

এই বছরই ৯ মার্চ ভারতীয় ক্রিকেট টিম নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতে দুবাইতে।

পহেলগাঁও হামলা-

এই বছরের সবথেকে ভয়ঙ্কর ও নিন্দনীয় জঙ্গি হামলা ছিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলা। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরণ ভ্যালিতে পর্যটকদের উপরে হামলা করে পাকিস্তান থেকে আসা জঙ্গিরা। ধর্ম পরিচয় জেনে জেনে পর্যটকদের হত্যা করা হয়।

অপারেশন সিঁদুর-

পহেলগাঁও হামলার জবাবেই ভারত পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে আসে। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটি। ৬-৭ মে-র রাতে ভারতীয় বায়ুসেনার এই অভিযানের নাম দেওয়া হয় অপারেশন সিঁদুর। পাকিস্তানকে বুঝিয়ে দেওয়া হয় যে ভারত আর সন্ত্রাসবাদকে বরদাস্ত করবে না।

এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনা-

এই বছরের সবথেকে অভিশপ্ত দুর্ঘটনা বলা চলে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনাকে। ১২ জুন আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেয় এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমান। ওড়ার কয়েক সেকেন্ড পরই তা মেঘানিনগরে মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের উপরে ভেঙে পড়ে। বিমানে থাকা ২৪২ জন যাত্রীর মৃত্যুর হয়। ভাগ্যক্রমে বিশ্বাস কুমার রমেশ নামক একজন যাত্রীই বেঁচে যান। হস্টেলের ১৯ জন পড়ুয়ারও মৃত্যু হয়। পরে তদন্তে জানা যায়, বিমান ওড়ার পরই ইঞ্জিন ফুয়েল সুইচ কাট অফ হয়ে গিয়েছিল, যার জেরে ভেঙে পড়ে বিমান।

ভারত-আমেরিকা টানাপোড়েন-

এ বছরে ভারত-আমেরিকার কূটনৈতিক সম্পর্কও অদ্ভুত টানাপোড়েনের মুখে পড়ে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে ভারতের থেকে আমদানি করা পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপান। এরপরে রাশিয়ার থেকে ভারত ক্রুড তেল কেনায়, দেশের উপরে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপান ট্রাম্প।

বৈষ্ণোদেবীতে ধস-

অগস্ট মাসে লাগাতার বৃষ্টিতে ভূমিধস নামে বৈষ্ণোদেবীতে। কমপক্ষে ৩৪ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়, আহত হন আরও অনেকে।  সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেওয়া হয় বৈষ্ণোদেবী যাত্রা।

পঞ্জাব-হিমাচল প্রদেশ-উত্তরাখণ্ডে ধস-বন্যা-

এই বছরে দেশের একাধিক রাজ্য়ে ভয়ঙ্কর ধস ও বন্যা নামে। একদিকে পঞ্জাবের ২৩টি জেলায় বন্যা হয়, ডুবে যায় ১৯০০ গ্রাম, প্রাণ যায় ৫০ জনের। হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডেও ভয়াবহ হড়পা বানে বন্যা হয়। মুছে যায় গ্রাম, জনপথ।

লালকেল্লা বিস্ফোরণ-

গত ১০ নভেম্বর দিল্লির লালকেল্লার সামনে শক্তিশালী বিস্ফোরণ হয়। মৃত্যু হয় ১১ জনের, আহত হন আরও অনেকে। তদন্তে নেমে সামনে আসে এক বিরাট সন্ত্রাসবাদী হামলার ছক। উদ্ধার হয় ২৯০০ কেজি বিস্ফোরক।

ইন্ডিগোর বিমান অব্যবস্থা-

বছরের শেষ মাসের শুরুতেই থমকে যায় ইন্ডিগোর বিমান পরিষেবা। ৮ দিন ধরে চরম বিমান সঙ্কট দেখা যায়, প্রতিদিন শয়ে শয়ে বিমান বাতিল হয়। সব মিলিয়ে মোট ৫ হাজারেরও বেশি বিমান বাতিল হয়।