স্বাস্থ্যসাথী বিতর্ক: দু’ঘণ্টা পরও ইমার্জেন্সিতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে কিশোর
মরণাপন্ন কিশোরকে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে আসার পরও চিকিৎসা শুরু হয়নি। বেড নেই, এই দাবিতে তাঁকে ফেলে রাখা হয়েছে ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে। বর্তমানে অক্সিজেন চলছে কেবল।
কলকাতা: স্বাস্থ্যসাথী (Swasthya Sathi) কার্ড থাকা সত্ত্বেও আবারও রোগী প্রত্যাখানের ঘটনা ঘটল খোদ কলকাতার বুকে। সকাল থেকে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত কিশোরকে নিয়ে একের পর হাসপাতাল ঘুরে গেলেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু, সকলেই রেফার করে গেল তাঁদের। এক নার্সিংহোমে ভর্তি করা গেলেও অপারেশনের টাকা না থাকায় হাত তুলে দেয় কর্তৃপক্ষ। শেষ পাওয়া খবরে, দুর্ঘটনার পর প্রায় ১২ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও এখনও সেই মরণাপন্ন কিশোরকে কোনও হাসপাতালে ভর্তি করা যায়নি। এসএসকেএম-র ইমার্জেন্সি বিভাগে রাখা হয়েছে তাঁকে।
সরকারি পরিষেবা: এসএসকেএমেও মিলল না বেড, ঠায় পড়ে রইল জরুরি বিভাগে
মরণাপন্ন কিশোরকে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে আসার পরও চিকিৎসা শুরু হয়নি। বেড নেই, এই দাবিতে তাঁকে ফেলে রাখা হয়েছে ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে। বর্তমানে অক্সিজেন চলছে কেবল। হাসপাতাল বলছে, কিশোরকে অন্যত্র নিয়ে যেতে। কিন্তু সারাদিন ঘোরার পরও চিকিৎসা না মেলায় রীতিমতো ভেঙে পড়েছেন কিশোরের পরিজনেরা। দু’ঘণ্টা কেটে গেলেও চিকিৎসা শুরু হয়নি। এখন কোথায় গেলে মিলবে চিকিৎসা, কীভাবে বাঁচবে অতনুর প্রাণ, বুঝে পাচ্ছেন না কেউই।
স্বাস্থ্যসাথীতে ‘না’: টাকা না দিলে হবে না অস্ত্রোপচার, প্রশ্নের মুখে নার্সিংহোম
বিতর্ক তীব্র আকার নেয় একবালপুরের নেতাজি সুভাষ নার্সিংহোমে পৌঁছনোর পর। চিকিৎসকেরা জানান, অবিলম্বে রোগীর অপারেশন করতে হবে। নইলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে যে টাকা দাবি করা হয় তা দেওয়ার সার্মথ্য ছিল না কারোর কাছেই। যদিও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড সঙ্গে নিয়েই এসেছিলেন কিশোরের পাড়া-পড়শিরা। তবে সেই কার্ড গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দেয় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। টাকা ছাড়া কোনও ধরনের পরিষেবাই পাওয়া যাবে না। সংবাদ মাধ্যমকে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানায়, তাঁদের হাসপাতাল এখন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের তালিকায় নথিভুক্ত হয়নি। তাই কোনও পরিষেবা দেওয়া যাবে না। এমন অবস্থায় আহত কিশোরকে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সিবিআই নাকি আজ রেড করত ভাইপোর বাড়িতে: বিস্ফোরক সায়ন্তন
পরিকাঠামোর অভাব: রেফার করল একের পর এক হাসপাতাল
নামখানায় টোটোর সঙ্গে দুর্ঘটনার জেরে আঘাত পায় ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া অতনু সিট। কাকদ্বীপ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রোগীকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা জানান, আঘাত গুরুতর। রোগীর কিডনিতে আঘাত লেগে রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছে। চিকিৎসার পরিকাঠামো না থাকায় সেখান থেকে রেফার করা হয় ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে। সেখানেও মেলেনি চিকিৎকসা। কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে পাঠানো হয় রোগীকে। কিন্তু সেখানেও ভর্তি নেওয়া হয়নি। TV9 বাংলার পক্ষ থেকে এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মেসেজও করা হয়েছে। তবে এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত কোনও জবাব আসেনি। উত্তর এলে আপডেট করে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ‘খারাপ বলতে রুচিতে বাধে’, আমন্ত্রণ না পেয়ে ‘অভিমানী’ তৃণমূল সাংসদ