কলকাতা: না, এটা কোনও ক্লাব ঘর নয়। ক্যান্টিনও নয়। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুম। আর সেই রুমে উপাচার্য মহম্মদ আলিকে যিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন তিনি হলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন ইউনিট প্রেসিডেন্ট। নাম গিয়াসউদ্দিন। উপাচার্যকে তুই তোকারি থেকে অকথ্য গালিগালাজ, এমনকী কান ধরে ওঠবস করার হুমকিও দেন গিয়াসউদ্দিন ও তাঁর দলবল। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তৃণমূল। গিয়াসউদ্দিন দলের কোনও অংশ নয় বলেও দাবি করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে। গিয়াসউদ্দিনকে ঘাড় থেকে তৃণমূল ঝেড়ে ফেললেও বিতর্কের রেশ কিন্তু কাটছে না।
বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু বেশ কিছু ছবি এবং অডিয়ো ক্লিপ! গিয়াসউদ্দিনের সঙ্গে তাবড় তাবড় তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীর ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কে নেই সেই তালিকায়! তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, তৎকালীন তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী। গিয়াসউদ্দিন দাবি করেছেন, এখনও তিনি বহাল তবিয়তে তৃণমূলে রয়েছেন এবং দলের কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও সক্রিয়ভাবে জড়িত। এই সব ছবি তারই প্রমাণ বলে দাবি করেন গিয়াসউদ্দিন। অন্যদিকে, গিয়াসউদ্দিনের দাবিকে সাফ উড়িয়ে দিয়ে তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য জানান, ২০১৮ সালে অনৈতিক কাজকর্মের জন্য আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে। তারপরই ছাত্র পরিষদ থেকেও বহিষ্কার করা হয়। এ সব ছবি তার আগের বলে তৃণাঙ্কুরের দাবি।
এই ঘটনায় আরও একটি অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়। যেখানে জ়িম নওয়াজ় নামে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ নেতাকে বলতে শোনা যায়, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই ঘটে যাক না কেন পুলিশ সেখানে যাবে না। নির্দেশ দেওয়া আছে টেকনো সিটি থানার আইসি-কে। এমনকী মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও গোলাম রব্বানিও এই বিষয়ে অবগত বলে দাবি করা হয়। এই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি TV9 বাংলা। তবে, ওই অডিয়ো ক্লিপের কণ্ঠস্বর তাঁর নিজের বলে স্বীকার করে নিয়েছেন জ়িম নওয়াজ়। কিন্তু এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নয়। ২০২১ সালে সম্পূর্ণ একটা আলাদা ঘটনার অডিয়ো।
যদিও প্রশ্ন উঠছে, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের ঘরে কীভাবে ঢুকে অকথ্য গালিগালাজ করার সাহস পেলেন বহিষ্কৃত ছাত্র গিয়াসউদ্দিন? নিরাপত্তা রক্ষীরাই বা কী করছিলেন? তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কেউ না হলে এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ তৎক্ষণাৎ কেন করা হয়নি টিএমসিপি-র তরফে? পুলিশের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। উল্লেখ্য, ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার পর গিয়াসউদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, গিয়াসউদ্দিনের সঙ্গে আরও অনেকে ছিল। তাদের কেন গ্রেফতার করা হল না। এ ঘটনায় রাঘব-বোয়ালরা জড়িত বলে দাবি পড়ুয়াদের একাংশের।
আরও পড়ুন- উপাচার্যের ঘরে ঢুকে ‘চড় মারব’ বলে হুমকি টিএমসিপি নেতার, ডেকেও পাওয়া গেল না পুলিশকে