দিল্লি: একুশের ভোটে তৃণমূলের দলীয় ইশতাহারে উল্লেখ ছিল ‘দুয়ারে রেশন’ (Duare Ration) প্রকল্প। তৃতীয় বার ক্ষমতায় এসে পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে সেই দুয়ারে রেশন প্রকল্প চালুর উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু বেঁকে বসল সংগঠন। রেশন ডিলারদের পক্ষে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে সাংবাদিক বৈঠকে সটান জানিয়ে দিলেন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস ডিলার ফেডারেশনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু।
এদিন সাংবাদিক বৈঠক তিনি সরাসরি জানিয়ে দেন, দুয়ারে দুয়ারে রেশন পৌঁছে দিতে যা টাকা লাগবে তা রাজ্য দিতে পারছে না। আর পুজোর মরসুমে কাঁধে করে বয়ে মাল সরবরাহ-ও সম্ভব নয় বলে জানালেন বিশ্বম্ভর বসু। তাঁর মন্তব্য, “দুয়ারে রেশন’ সম্ভব নয়। কোনওভাবেই সম্ভব নয়।”
উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষামূলক প্রকল্প হিসেবে রাজ্য জুড়ে দুয়ারে রেশন প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে খাদ্য দফতর। যদিও এর আগেও রাজ্যের খাদ্য মন্ত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং পাইলট প্রোজেক্ট হিসাবে দুয়ারে সরকার চালু করার ব্যাপারে বিশ্বম্ভরবাবুদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তারা অসুবিধার কথা জানিয়েছে। অন্যদিকে রেশন ডিলারদের সংগঠনের পাঠানো চিঠির প্রেক্ষিতে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ-ও জানিয়েছিলেন, এভাবে মাঝপথে তাঁরা প্রকল্প বন্ধ করে পিছু হঠতে পারবেন না। চিঠিতে রাজ্যকে অক্টোবর মাসের বদলে নভেম্বরে শুরু করতে আবেদন করেছিল রেশন ডিলার সংগঠন। কিন্তু পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু করতে চাওয়া এই প্রোজেক্ট আর পিছোতে রাজি হয়নি সরকার।
এদিকে শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস ডিলার ফেডারেশনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের জন্য গাড়ি কিনতে হবে পৌঁছনোর জন্য। রাজ্য সরকার শুধু এক লাখ টাকা দেবে। বাকি টাকা কে দেবে? প্রশ্ন তাঁর। এখানেই শেষ নয়। তাঁর আরও রাজ্য সরকারের প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে গেলে রেশন ব্যবসায়ীরা শেষ হয়ে যাবেন।
বিশ্বম্ভরবাবুর কথায়, “দুয়ারে রেশন প্রকল্পের জন্য কুলি লাগবে, ড্রাইভার লাগবে। কে দেবে? রাজ্য সরকার দেবে?” এদিকে কৃষি মন্ত্রক ডাল, সয়াবিন, তেল রেশনে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেছে। আগে শুধুমাত্র রেশনে বাংলার মানুষ চাল ও চিনি দেওয়া হত। তাই সরকার ঘোষণা করলেও তাঁদের পক্ষে উৎসবের মরসুমে দুয়ারে রেশন পরিষেবা দেওয়া কোনওভাবেই সম্ভব নয় বলে দাবি করে রেশন ডিলারদের সংগঠন। তারা জানিয়েছে কর্মচারীরা দোকানে এসে কাজ করতে চান না পুজোর মরসুমে। সবাই ছুটির মেজাজে থাকেন। তাঁরা কী ভাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন দিয়ে আসবেন? এখন এ নিয়ে রাজ্য সরকার কী প্রতিক্রিয়া বা সিদ্ধান্ত নেয় সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: Duare Ration: ‘দুয়ারে রেশন’ নিয়ে বহাল আইনি জটিলতা, বেঁকে বসেছেন ডিলারদের একাংশ