Duare Ration: ‘দুয়ারে রেশন’ নিয়ে বহাল আইনি জটিলতা, বেঁকে বসেছেন ডিলারদের একাংশ

এজলাসে দাঁড়িয়ে রেশন ডিলারদের আইনজীবী বলেন, রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত আইন বিরুদ্ধ। খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হলে এর দায় কে নেবে?

Duare Ration: 'দুয়ারে রেশন' নিয়ে বহাল আইনি জটিলতা, বেঁকে বসেছেন ডিলারদের একাংশ
দুয়ারে রেশনের বিরুদ্ধে আদালতে ডিলাররা। অলঙ্করণ-অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 10, 2021 | 7:17 PM

কলকাতা: প্রকল্প শুরু আগেই আদালতের দরজায় পৌঁছে গিয়েছে রাজ্যের ‘দুয়ারে রেশন’ (Duare Ration) প্রকল্প। এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে সরব হয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন রেশন ডিলারদের একাংশ। শুক্রবার তারই শুনানি ছিল। এদিন শুনানি পর্ব শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রাখা হয়।

রাজ্য সরকারের দুয়ারে রেশন প্রকল্প কেন্দ্রীয় রেশন বণ্টন আইনের পরিপন্থী বলে অভিযোগ তোলেন রেশন ডিলারদের একাংশ। এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন করতে গেলে আখেরে প্রচুর টাকা খরচ হবে বলেও অভিযোগ তোলেন তাঁরা। সেই সঙ্গে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যে পরিমাণ অর্থ, যে কর্মচারি প্রয়োজন, তাও অধিকাংশ রেশন ডিলারের কাছে নেই বলে দাবি করেন তাঁরা। একই সঙ্গে দুয়ারে রেশন প্রকল্পের কোনও বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়নি বলে দাবি করেন রেশন ডিলাররা।

মামলাকারী রেশন ডিলারদের (Ration Dealer) অভিযোগ, বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়া আইন বিরুদ্ধ। সেই পরিকাঠামো রেশন ডিলারদের নেই বলে দাবি মামলাকারীদের। ডিলারদের দাবি, আইন অনুযায়ী রেশন প্রাপক দোকানে এসে রেশন নেবেন, এটাই নিয়ম। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা।

শুক্রবার সেই মামলার (Calcutta High Court) শুনানি ছিল। আদালতে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, দুয়ারে রেশন প্রকল্প ভবিষ্যতেও চলবে। হাতে গোনা কয়েকজন রেশন ডিলার এই প্রকল্পের বিরোধিতায় আদালতে এসেছেন। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ ডিলারই এই প্রকল্পের সঙ্গে আছেন। সে কারণে তাঁরা আদালতেও আসেননি। এজি বিচারপতিকে জানান, কোন ডিলারের আইনি অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়নি। বরং রাজ্য ডিলারদের অতিরিক্ত সহায়তা করছে।

অন্যদিকে এজলাসে দাঁড়িয়ে রেশন ডিলারদের আইনজীবী বলেন, রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত আইন বিরুদ্ধ। খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হলে এর দায় কে নেবে? একই সঙ্গে ডিলারদের উদ্বেগের কথাও তুলে ধরেন তাঁদের আইনজীবী। প্রশ্ন তোলেন, কেন্দ্রের আইন না মানলে লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত হতে পারে। তার দায় কে নেবে। ডিলারদের অভিযোগ, যে ভাবে দুয়ারে রেশন প্রকল্পের কথা ভাবা হচ্ছে, তা খাদ্য সুরক্ষা আইন এবং অত্যাবশ্যক পণ্য আইনের পরিপন্থী। এই নিয়ে দু’পক্ষের মতামতের প্রবল পার্থক্য উঠে আসে শুনানি পর্বে। শুনানি শেষ হলেও বিচারপতি অমৃতা সিনহা এই মামলার রায়দান স্থগিত রাখেন।

রাজ্য সরকার দুয়ারে রেশন নিয়ে যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়ার জন্য ডিলারদেরই গাড়ির খরচ, প্রচারের খরচ এবং সংরক্ষণের খরচ বহন করতে হবে। দায়ের হওয়া মামলায় ডিলাররা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই বিপুল খরচ তাঁরা বহন করতে পারবেন না। পাশাপাশি ডিলারদের এত লোকবল নেই যে বাড়ি বাড়ি ঘুরে রেশন দেবেন, সে কথাও বলেন। এ ক্ষেত্রে নিজেদের সমর্থনে যুক্তি সাজিয়ে মামলাকারীরা দিল্লির উদাহরণ টানা হয়। যেখানে এই একই ধরনের প্রকল্প আনার চেষ্টা হয়েছিল, কেন্দ্র অনুমোদন দেয়নি। বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে রাজ্য জানায়, শুধু সেপ্টেম্বর মাসের জন্য এটা একটা পরীক্ষামূলক প্রকল্প হিসাবে চালু হচ্ছে। প্রকল্পের গ্রহণযোগ্যতা দেখে বাকি সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: শিক্ষকের বাড়ির সামনে মাঝ রাতে ২০০ পুলিশ, আদালতে রাজ্য জানাল ‘নোটিস দিতে গিয়েছিল’