‘হারা প্রার্থীর বিরুদ্ধে হারা প্রার্থীকে দিয়েছি’, ফিরহাদের কটাক্ষে পাল্টা বাক্যবাণ দিলীপের
Bhawanipur Assembly By-election 2021: প্রার্থীর নাম ঘোষণা দিয়ে শুক্রবারই বিজেপি পুরোদমে উপনির্বাচনের লড়াইয়ে নেমে পড়েছে। এদিন বিজেপির তারকা প্রচারকদের তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে।
কলকাতা: বিজেপির প্রার্থী হিসাবে প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের নাম ঘোষণার পরই তীব্র কটাক্ষ করেন ফিরহাদ হাকিম। তাঁর বক্তব্য ছিল, যিনি কোনওদিন সক্রিয় রাজনীতিতেই ছিলেন না, তিনি আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কী লড়বেন। শুক্রবার তারই পাল্টা তোপ দাগলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। প্রিয়াঙ্কাকে পাশে বসিয়েই দিলীপের উক্তি, ‘হারা প্রার্থীর বিরুদ্ধে হেরে যাওয়া প্রার্থী দিয়েছি। এ নিয়ে আবার এত কথার কী আছে!’
শুক্রবার একদিকে যখন ভবানীপুর উপনির্বাচনের জন্য মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে এদিনই বিজেপি জানিয়ে দিল, মমতার বিরুদ্ধে তাঁদের ‘চ্যালেঞ্জ’ আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ মামলা নিয়ে গত কয়েক মাসে একাধিক বার যিনি শিরোনামে উঠে এসেছেন।
এর আগে একুশের সাধারণ নির্বাচনে এন্টালি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। যদিও বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহার কাছে হেরে যান তিনি। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সাধারণ নির্বাচনে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হেরেছেন। সে কারণেই উপনির্বাচনে অংশ নিতে হচ্ছে তাঁকে।
এদিন প্রিয়াঙ্কার ভোটে লড়াই প্রসঙ্গে তৃণমূলের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, “এটা কে? খায় না মাথায় দেয়? তাঁর সমাজে কী অবদান রয়েছে? কোনও দিন কি কাউন্সিলার নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন? কোনও দিন কি পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়িয়েছেন? মানুষের সঙ্গে কী যোগাযোগ রয়েছে? একজনকে ভোটে দাঁড় করিয়ে দিলাম, আর অল ইন্ডিয়া পার্টি হইহই করলাম তাতে যে ভোট হয় না তা তো দেখেছেন।”
এরই জবাবে দিলীপ ঘোষ বলেন, “প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল কে, কেউ জানতে চাইলে দোষের কিছু নেই। ববি হাকিম বলছিলেন, উনি কোনওদিন ভোটে লড়েছেন কি না। প্রিয়াঙ্কা তো কাউন্সিলর ভোটেও প্রার্থী হয়েছিলেন। বিধানসভাতেও লড়েছিলেন। হ্যাঁ, জেতেননি। সে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও গতবার জেতেননি। তা হারার বিরুদ্ধে হারা প্রার্থীই আমরা দিয়েছি। ১৯৮৪ সালের কথা মনে করুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বছর লড়লেন, ওনাকে কে চিনতেন। উনি তো সোমনাথবাবুকে হারিয়েছিলেন। সেখান থেকেই তো আজকের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়েছেন। প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালও আজকে দলের একজন লড়াকু নেত্রী। তাঁকে মুখ করে দল লড়ছে। লড়াই তো মাঠেই হবে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তো ভারতীয় জনতা পার্টি চার মাস আগে হারিয়েই দিয়েছে।”
প্রার্থীর নাম ঘোষণা দিয়ে শুক্রবারই বিজেপি পুরোদমে উপনির্বাচনের লড়াইয়ে নেমে পড়েছে। এদিন বিজেপির তারকা প্রচারকদের তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে দিলীপ ঘোষের পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়দের নাম রয়েছে। কুড়ি জনের এই তালিকায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় চার নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি-সহ আরও তিন দিল্লির নেতা রয়েছেন, যাঁরা ভবানীপুরে প্রচারে আসবেন। প্রিয়াঙ্কার হয়ে ভোট চাইবেন তাঁরা।
গত ভোটে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতৃত্ব এসে বাংলায় ভোট প্রচার করেছিলেন। এবার সে তালিকা একেবারেই ছোট। এ প্রসঙ্গে অবশ্য দিলীপ ঘোষ স্পষ্ট করে দিয়েছেন, “উপনির্বাচনে আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব আসেন না। দু’ একজন মন্ত্রীকে আমরা অনুরোধ করেছি। ওনারা আসবেন।” তবে দল সর্বশক্তি দিয়েই প্রার্থীকে জেতাতে মরিয়া। এদিন সে প্রসঙ্গে দলের রাজ্য সভাপতির মন্তব্য, “ভবানীপুরে যে লড়াই হবে তাতে অত্যচার আর সন্ত্রাসের মুখ একদিকে, অন্যদিকে প্রতিবাদের মুখ। আমাদের প্রার্থী সেই প্রতিবাদের মুখ। তাঁর পিছনে আমাদের পুরো পার্টি থাকবে। বিধায়ক, সাংসদ থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিংবা সমস্ত কর্মী-সমর্থক সকলে মিলে সমস্ত শক্তি দিয়ে ভবানীপুরে প্রিয়াঙ্কাকে জেতানোর চেষ্টা করব।”
আরও পড়ুন: মমতার ‘গড়ে’ বিজেপির ‘তারকা প্রচারক’ শুভেন্দু, থাকবেন স্মৃতি-রূপা-লকেটরাও