Blood Selling Racket: ২৫০০-৩০০০ টাকায় বিকোচ্ছে প্রতি ইউনিট রক্ত! প্রশ্ন করায় সাফাই ‘নাস্তাপানির খরচ’
Purulia Viral Audio: ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপে, সবরকমভাবে অপরজনকে বোঝানোর চেষ্টা চলল, যে রোগীর পরিবারের আর্থিক অবস্থার কথা। কিন্তু উল্টো দিক থেকে সাফ কথা, টাকা লাগবেই।
কলকাতা: মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে টাকার বিনিময়ে বিকোচ্ছে রক্ত! অভিনব কায়দায় রক্ত বিক্রির চক্র ফাঁস পুরুলিয়ায়। রোগীর পরিজনের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে ২৫০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকায় বিকোচ্ছে প্রতি ইউনিট রক্ত। শুক্রবার এই সংক্রান্ত একটি অডিয়ো ক্লিপ ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। কী বলা হচ্ছে সেই ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপে? এক মিনিট ৪৭ সেকেন্ডের এই অডিয়ো ক্লিপে প্রথম কণ্ঠস্বর পুরুলিয়ার বড়বাজারের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য চঞ্চল মহাপাত্রের।
বছর সত্তরের বৃদ্ধা জ্যোৎস্না গোস্বামীর জন্য বি পজিটিভ গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন ছিল। জ্যোৎস্না দেবী পুরুলিয়ার মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। তাঁর দেহে রক্তের পরিমাণ কমে গিয়েছে। ছেলে বাড়ি বাড়ি পৌরহিত্য করে সংসার চালান। এ ধরনের পরিবারের জন্য রক্তের খোঁজ করতে গিয়ে অজয় মহালি নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন চঞ্চল। অজয়ের স্পষ্ট বক্তব্য, রক্ত নিতে হলে লাগবে টাকা।
ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপে, চঞ্চলবাবু সবরকমভাবে অপরজনকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন জ্যোৎস্না গোস্বামীর পরিবারের আর্থিক অবস্থার কথা। কিন্তু উল্টো দিক থেকে সাফ কথা, টাকা লাগবেই। বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘টাকা লাগবে। ২৫০০-৩০০০ টাকা লাগবে। কারণ, রক্ত নেওয়ার পর সবাই ভুলে যায়।’ চঞ্চল মহাপাত্র নামে ওই সমাজকর্মী সবরকমভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তারপরও অজয় মহালির বক্তব্য, ‘সবই বুঝতে পারছি। কিন্তু ওটা লাগবে। ছেলেদের তো কিছু দিতে হবে।’
সমাজকর্মী চঞ্চলের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে অভিযুক্তের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল টিভি নাইন বাংলা। টিভি নাইনের প্রতিনিধির কাছেও রক্তের বিনিময়ে টাকা চাওয়ার জন্য বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত নন অজয়। উল্টে তাঁর বক্তব্য, এলাকার বেকার ছেলেরা নাস্তাপানির জন্য এই টাকা নিয়ে থাকে। কিন্তু তা বলে এ কী কাণ্ড! নাস্তাপানির খরচ ২৭০০-৩০০০ টাকা! অজয়ের অকপট জবাব, দরদাম করলে সামান্য টাকা কমতে পারে। তবে এটাকে ব্যবসা বলা যাবে না!
আর এই ঘটনা নিয়ে কী ভাবছেন শহরের সমাজসেবার সঙ্গে যুক্ত ক্লাবের সদস্যরা? বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল উদয়ের পথের সদস্য আশিস চট্টোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে। তাঁর বক্তব্য, ‘এই খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এই ধরনের অভিযোগ বিভিন্ন জেলা থেকে রক্তদানের জন্য আসা মানুষজনের কাছে শুনি। এটা বন্ধ করতে মানুষকে রক্তদানে আরও বেশি উৎসাহিত করা দরকার। পর্যাপ্ত রক্ত যদি ব্লাড ব্য়াঙ্কগুলিতে থাকে, তাহলে মানুষ এই ধরনের রাস্তায় আর যাবে না। এই ধরনের কাজ ভীষণ অন্যায় ও দণ্ডনীয়।’