কলকাতা: আমর্হাস্ট স্ট্রিট খুনের রহস্য কিনারা করল পুলিশ। প্রোমোটিং সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই খুন হতে হয়েছে যুবককে। ঘটনায় অভিযুক্ত ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম রাকেশ দাস ও মণীশ দাস। বিহারের জামুই থেকে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেছে।
কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের কর্তারা রাকেশ ও মণীশকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ঠিক কী কারণে তাঁদের মধ্যে বচসা হয়েছিল, বন্দুক রাকেশ কোথা থেকে পেয়েছিলেন, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত কোনও ঝামেলা হয়েছিল কিনা, এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কিনা, রাকেশকে আদৌ দীপককে খুন করার জন্য সুপারি দেওয়া হয়েছিল, নাকি সরাসরি রাকেশের সঙ্গেই দীপকের ঝামেলা- এই প্রশ্নগুলির উত্তর পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। বিহার থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে তাঁদের কলকাতায় নিয়ে আসা হবে। তদন্তকারীরা তাঁদের নিজেদের হেফাজতে পেতে চাইছেন।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার আমহার্স্ট স্ট্রিট লাগোয়া কেশব চন্দ্র সেন স্ট্রিটে নিজের দোকানেই খুন হন দীপক দাস নামে এক ব্যক্তি। প্রোমোটিং সংক্রান্ত ব্যবসা ছিল তাঁর। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার দিন বেলা ১২টা নাগাদ রাকেশ দাস নামে এক ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন আরও এক ব্যক্তি। পরে জানা যায়, এই ব্যক্তিই হলেন মণীশ।
কিছু একটা বিষয় নিয়ে দীপকের সঙ্গে বচসা হয় রাকেশের। কথা কাটাকাটি হতে থাকে দুপক্ষের। সেসময়ই রাকেশ পকেট থেকে বন্দুক বার করে দীপককে লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে গুলি করেন। গলা ফুঁড়ে বেরিয়ে যায় গুলি। ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন রাকেশ ও মণীশ।
এনআরএস মে়ডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় দীপকের। প্রথম থেকেই তদন্তকারীরা মনে করছিলেন, মূলত প্রোমোটিং সংক্রান্ত বচসা ও তার থেকে শত্রুতাই এই খুনের নেপথ্যে কাজ করেছে। দীপকের পরিবারের সদস্যদের থেকে সেই তথ্যই হাতে পান তদন্তকারীরা। পরে রাকেশকে গ্রেফতার করা হলে জেরায় তেমনই উঠে আসে।
প্রসঙ্গত, ঠিক গত মাসেই প্রমোটিং সংক্রান্ত শত্রুতার জেরেই গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন দুই যুবক। সেবার গুলি চলেছিল রিজেন্ট পার্ক এলাকায়। পেশায় ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ী পঙ্কজ সাহা ও তাঁর বন্ধ অভিজিৎ মল্লিক গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। ঘটনার দিন ভোর পৌনে পাঁচটা নাগাদ তাঁরা গাড়ি থেকে ইমারতি দ্রব্য নামাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেসময়ই ভাস্কর ভট্টাচার্য নামে এলাকারই এই যুবক তাঁর দলবল নিয়ে হামলা চালায়। এই ভাবে শহরের বুকে বারবার গুলি চালনার ঘটনায় শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
কীভাবে এত বন্দুক অতি সহজেই হাতে পেয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা, কীভাবে এত সহজেই প্রকাশ্যে গুলি চালনার মতো ঘটনা ঘটছে , তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।