কলকাতা: কসবা-কাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জন দেবের পর আরও এক জালিয়াতের কীর্তি-কলাপ ঘুম উড়িয়েছে পুলিশের। সোমবার রাতেই সনাতন রায়চৌধুরী নামক ওই ব্যক্তিকে গড়িয়াহাট থেকে গ্রেফতার করা হয়। আর গ্রেফতারির পর জেরা করে উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, খোদ রাজভবনের ঠিকানা ব্যবহার করে সম্পত্তি জালিয়াতির জাল পেতেছিল সনাতন। এমনভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, যাতে পুরো বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় ও কাকপক্ষীতে টের না পায়।
গ্রেফতারির পর জানা গিয়েছে, নিজেকে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য বলে পরিচয় দিত সনাতন। তদন্তে উঠে আসে, হাইকোর্টের বিচারপতির সই এবং সিল জাল করে ভুয়ো কোর্ট অর্ডার বের করে নিয়েছিল সনাতন। সেই জাল নথি দিয়ে সম্পত্তি হাতানোরও চেষ্টা হয়েছিল।
৮ ম্যান্ডেভিলা গার্ডেনের মালিক পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছেন, গত ২৭ জুন তিনি একদিনের জন্য বাইরে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন, পরিবার সূত্রে পাওয়া ওই সম্পত্তির অন্দরে থাকা অফিসে জাঁকিয়ে বসে রয়েছেন ধৃত সনাতন রায়চৌধুরী। তিনি নিজেকে ‘ডক্টর’ বলেও পরিচয় দেন। সম্পত্তির মালিককে সনাতন জানান, হাইকোর্টের অর্ডার পেয়ে এই সম্পত্তি তিনি দখল করেছেন।
এখানেই শেষ নয়, ধৃত সনাতন আরও দাবি করেন যে, সম্পত্তির সংস্কারের কাজ জন্য অমরনাথ মেহতা নামের এক ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়েছে। অমরনাথ মেহতা নামক যে ব্যক্তিকে ডেভলপার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল, তাঁর দফতর নাকি রাজভবনে রয়েছে বলে দেখান সনাতন। এমনটাও অভিযোগ তোলা হয়েছে ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে। কী ভাবে রাজভবনের ঠিকানা দিয়ে এমন জালিয়াতি করা সম্ভব? এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে খোদ প্রশাসনের একাংশ।
আরও পড়ুন: রুদ্রর সঙ্গে ছবি, বাড়িতে বিজেপির ‘সদস্যতা’ রসিদও! ধৃত সনাতন যেন দ্বিতীয় দেবাঞ্জন
উল্লেখ্য, এর আগে দেবাঞ্জন মামলাতেও রাজভবনের নাম জড়িয়েছিল। ভুয়ো আইএএস আধিকারিকের দেহরক্ষীর সঙ্গে একই ছবিতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে সেই ছবি দেখিয়ে দাবি করা হয়, রাজভবনে নিয়মিত যাতায়াত ছিল দেবাঞ্জনের দেহরক্ষীর। এ বার রাজভবনের ঠিকানা ব্যবহার করে জালিয়াতি করার অভিযোগ উঠল শহরের আরেক প্রতারকের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী উপদেষ্টা দফতরের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে তালতলার ওসিকে ফোন সনাতনের