
কলকাতা: একটি নয়, চার-চারটি জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। যৌন হেনস্থার মতো অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। তারপরও থানায় সশরীরে হাজিরা দিলেন না বীরভূমের প্রাক্তন জেলা সভাপতি। সকাল ১১টার কিছু আগে পাঠিয়ে দিলেন আইনজীবীকে। আবারও তাঁকে সময় দিল পুলিশ। প্রশ্ন উঠছে, কেন সময় দেওয়া হল অভিযুক্ত অনুব্রতকে? পুলিশ চাইলে কি তাঁকে গ্রেফতার করতে পারত না? পুলিশকেই যেখানে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেখানে পুলিশের কি আরও কড়া পদক্ষেপ করা প্রয়োজন ছিল না?
আইন বলছে, আপাতত ঠিক পথেই আছেন অনুব্রত। আইসি-কে হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগে এফআইআর দায়ের হয়েছে অনুব্রতর বিরুদ্ধে। শনিবার সকাল ১১টার মধ্যে বীরভূমের এসডিপিও-র অফিসে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল তাঁকে। শুক্রবারই পুলিশের তরফে দেওয়া হয় নোটিস।
শনিবার অনুব্রতর আইনজীবী গিয়ে পুলিশকে জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনুব্রত যেতে পারেননি। চিঠি দিয়ে চলে যান আইনজীবী। এরপর পুলিশ অনুব্রতকে দ্বিতীয়বার নোটিস দিয়েছে। উল্লেখ্য, মোট চারটি ধারায় মামলা হয়েছে অনুব্রতর বিরুদ্ধে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৭৫ নম্বর ধারা অর্থাৎ যৌন হেনস্থার মামলা, ১৩২ নম্বর ধারা অর্থাৎ সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ, ২২৪ নম্বর ধারা অর্থাৎ সরকারি কর্মীকে হুমকি, ৩৫১ ধারা অর্থাৎ হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
আইনজীবী শীর্ষেন্দু সিনহা রায় জানিয়েছেন, এভাবে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে একবার বা দু’বার হাজিরা এড়ানো যেতে পারে। বৈধ প্রেসক্রিপশন থাকলে, তা জমা দিয়ে অসুস্থতার কারণ দেখানো যায়। তবে ১ দিন বা ২ দিনের বেশি তা হবে না। অর্থাৎ সেই দিক থেকে দেখলে অনুব্রত এখনও পর্যন্ত ঠিক পথেই এগোচ্ছেন। তবে দ্বিতীয়বার হাজিরা এড়ালে ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে বলেই মনে জানাচ্ছেন আইনজীবী। গ্রেফতারির সম্ভাবনা কি থাকছে? আইনজীবী শীর্ষেন্দু সিনহা রায় বলেন, “অবশ্যই গ্রেফতারির সম্ভাবনা আছে।” তবে কি জল মাপছেন অনুব্রত? তবে সেটাও বা আর কতদিন?
ইতিমধ্যেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে, অনুব্রত-কাণ্ডে পুলিশের উচিৎ বিদ্রোহ করা। বিজেপি নেতা তাপস রায় বলেন, “পুলিশ বাড়ি ফিরে তাদের মা-স্ত্রীদের সামনে দাঁড়াচ্ছেন কীভাবে? কোন মুখে দাঁড়াচ্ছেন?” তিনি আরও প্রশ্ন তুলেছেন,
“অনুব্রত যায়নি থানায়। আর পুলিশ বসে আছে কেন? পুলিশ ওকে গ্রেফতার করল না কেন?”