World Heritage Shantiniketan: রবীন্দ্রনাথের দর্শন কীভাবে পথ দেখাবে বিশ্বকে, UNESCO-কে তথ্য পাঠিয়েছিলেন মণীশ চক্রবর্তী
World Heritage Shantiniketan: আর্কিটেকচারের অধ্যাপক মণীশ চক্রবর্তী ও আর্কিটেক্ট আভা নারায়ণ লাম্বা। ২০১০ সাল থেকে সেই কাজ শুরু করেছিলেন তাঁরা। প্রায় ১৩ বছর পর সেই চেষ্টায় সাফল্য পেয়েছেন তাঁরা।
কলকাতা: কলা ভবন কিংবা ছাতিমতলা নিছকই শান্তিনিকেতনের অঙ্গ নয়, বাঙালির আবেগও বটে। সেই শান্তিনিকেতনের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পাওয়ার পিছনে রয়েছে এক বিরাট কর্মকাণ্ড। শান্তিনিকেতনকে কেন হেরিটেজ তকমা দেওয়া যায়, শান্তিনিকেতনের ইট-কাঠ-পাথরে অথবা গাছের প্রতিটি পাতায় কীভাবে জড়িয়ে আছে কবিগুরুর দর্শণ, সেই ইউনেসকো-কে তথ্য নথির আকারে পাঠিয়েছিলেন আর্কিটেকচারের অধ্যাপক মণীশ চক্রবর্তী ও আর্কিটেক্ট আভা নারায়ণ লাম্বা। ২০১০ সাল থেকে সেই কাজ শুরু করেছিলেন তাঁরা। প্রায় ১৩ বছর পর সেই চেষ্টায় সাফল্য পেয়েছেন তাঁরা।
তিনি জানিয়েছেন, টাকার অভাবে সেই সময় পুরো ক্যাম্পাসের জায়গা একসঙ্গে কিনতে পারেননি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, টুকরো টুকরো করে কেনা। একটা বড় ক্যাম্পাস নেই। তাই ইউনেসকো-র তরফ থেকে প্রথমটায় আপত্তি এসেছিল। পরে সেই নথি আবার নতুন করে তৈরি করা হয়। ২০২১ সালে নথিতে বেশ কিছু বদল করা হয়। এরপর ইউনেসকো-র প্রতিনিধিরা আসেন শান্তিনিকেতন পরিদর্শনে। পুরো প্রক্রিয়া শেষে শান্তিনিকেতনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
মণীশ চক্রবর্তী আরও উল্লেখ করেছেন, এই শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিল্প আর শিক্ষাকে একই পংক্তিতে রেখেছিলেন। আশ্রম, কলা ভবন, সঙ্গীত ভবন, উত্তরায়ণ তৈরি করার সময় তিনি একা সিদ্ধান্ত নেননি, অন্যান্য শিল্পীদের সঙ্গে কথাও বলতেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শণ ও চিন্তাধারার সেই প্রতিফলন আজও দেখা যায় সেই শান্তিনিকেতনে। তাঁর মতে, শুধু শিক্ষার কথা চিন্তা করে এগুলো তৈরি করা হয়নি। প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে থাকাটাও শেখানো হয় পড়ুয়াদের। অধ্যাপকের কথায়, ব্রিটিশ শাসনকালে যখন ক্লাসরুমের কথা বলা হচ্ছে, তখন রবীন্দ্রনাথ প্রকৃতির মধ্যে থেকে পড়াশোনা করার কথা বলেছেন। এমনকী বিল্ডিং বা স্থাপত্যগুলোর মধ্যেও যে একটা প্ল্যানিং আছে, সেটা অনুধাবন করেছেন তাঁরা। সেগুলো যাতে আরও বেশি সুরক্ষিত থাকে, সেই চেষ্টাই করা হয়েছে এ ক্ষেত্রে।
মণীশ চক্রবর্তী বলেন, “১৯০১ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেটা করেছিলেন, সেটা আজও প্রাসঙ্গিক। শুধু ভারতের জন্য নয় গোটা বিশ্বের জন্য। শুধু তাই নয়, আগামিদিনে বিশ্বের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলিকেও সেই দর্শণ ও পরিকল্পনা পথ দেখাতে পারে তাই এই তকমা দিয়েছে ইউনেসকো।”
ইউনেসকো-র তরফ থেকে রবিবারই শান্তিনিকেতনকে হেরিটেজ তকমা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।