কলকাতা: স্বল্প পরিচিত অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটই ছিল চমকে দেওয়ার মতো। আর সেই ফ্ল্যাটের অন্দরমহলে টাকার পাহাড় চমকে দিয়েছিল গোয়েন্দাদেরও। থরে থরে সাজানো নোট দেখে যখন বিস্ময় প্রকাশ করছে, তারই মধ্যে সামনে আসে আরও চমক! ‘অপা’র কাহিনি হার মানিয়ে দেয় টলিপাড়ার স্ক্রিপটকেও। তবে ক্লাইম্যাক্সটাও কি হবে একই রকম!
রাতের রাস্তায় লং ড্রাইভ, রেস্তোরাঁয় সময় কাটানো, দামী উপহারের গল্প শুধু নয়, ‘অপা’ নামে একটি আস্ত বাড়ির সন্ধানও মেলে শান্তিনিকেতনে। সেই গল্পের পর প্রায় ৩০ মাস কেটেছে। শীর্ষ আদালতের শুনানিতেও উঠল পার্থ-অর্পিতা। আজ, বুধবার সুপ্রিম কোর্টেও উঠল সে ‘অর্পিতা’ প্রসঙ্গ। কিন্তু ‘কেমিস্ট্রি’ কি সেই আগের মতোই আছে? একজনের জামিন পেতে আর একজনের ঘাড়ে চাপছে দোষ?
প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে, আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে দীর্ঘ আড়াই বছর কাটিয়ে সদ্য জামিনে মুক্ত হয়েছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। এর মাঝে একটি ভার্চুয়াল শুনানিতে পার্থ ও অর্পিতা একে অপরকে দেখে যেভাবে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন, তাতে মনে করা হয়েছিল, ‘অপা’র সম্পর্ক এখনও অটুট।
কাট টু সুপ্রিম কোর্ট। জামিন চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ। বাদী-বিবাদী দুই পক্ষের মুখেই শোনা গেল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নাম। যে অর্পিতার সঙ্গে পার্থর ঘনিষ্ঠতার কথাই শোনা গিয়েছে বারবার, তিনি নাকি ভয় পাচ্ছেন পার্থকে?
অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু ইডি-র পক্ষে কথা বলতে গিয়ে দাবি করেন, পার্থ জামিন পেলে তথ্য প্রমাণ লোপাট করতে পারেন, তদন্ত ব্যহত হতে পারে। এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, “অর্পিতা মুখোপাধ্যায় বলেছেন যে তিনি পার্থকে নিয়ে ভয় পাচ্ছেন।”
এদিকে, পার্থর পক্ষে লড়ছেন বর্ষীয়ান আইনজীবী মুকুল রোহতগী। তাঁর মুখেও অর্পিতার নাম। এসভি রাজুকে তাঁর জবাব, “আমরা ওকে নিয়ে চিন্তিত নই।” শুধু তাই নয়, রোহতগীর যুক্তি, ‘অর্পিতার বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হল। তিনি জামিন পেয়ে গেলেন, তাহলে পার্থ কেন নয়? পার্থর বাড়ি থেকে তো কোনও টাকা উদ্ধার হয়নি।’ এসভি রাজু জানালেন, অর্পিতা তাঁর বয়ানে স্পষ্ট বলেছেন, উদ্ধার হওয়া ওই টাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। প্রশ্ন হল, জামিন পাওয়ার জন্য কি দূরে চলে যাচ্ছে ‘অ’-‘পা’? পার্থ ভয় দেখাতে পারেন অর্পিতাকেও? পুরনো কেমিস্ট্রি তাহলে ভয় আর দোষারোপে পর্যবসিত হচ্ছে? সেই উত্তর সময়ই দেবে।