কলকাতা : তৃণমূল প্রাথমিকভাবে দাবি করেছিল রামপুরহাটে যা ঘটে গিয়েছে, তার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। পরে সেই তৃণমূলই দাবি করেছে এটা আসলে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। মঙ্গলবার দিনভর বগটুইয়ের হত্যাকান্ড নিয়ে রাজনৈতিক তরজা দেখেছে রাজ্য। কিন্তু যে রাজ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে বারবার বুদ্ধিজীবীদের পথে নামতে দেখা যায়, সেখানে বিশিষ্টজনদের মুখ থেকে তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এই বিষয়ে শিল্পী শুভাপ্রসন্ন-র কাছে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে প্রথমটায় তিনি দাবি করেছিলেন, এই বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি। তাই মুখ খুলতেও চাননি। পরে বুধবার আবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, রামপুরহাটের হত্যাকান্ডকে দুর্ঘটনা বলে উল্লেখ করলেন শুভাপ্রসন্ন। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে রাজ্যের পরিস্থিতি কতটা ভাল, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন শিল্পী।
রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের যে তত্ত্ব সামনে আনছে তৃণমূল, সেই একই তত্ত্বের কথা শোনা গেল শিল্পী শুভাপ্রসন্ন-র গলাতেও। TV9 বাংলাকে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কতটা সৌভাগ্য যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে অনেক কিছু ভাল হচ্ছে। কিন্তু, নানারকমভাবে বিরোধীরা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে।’ বিরোধীরা সুযোগ যাতে না নিতে পারে, সেই আর্জিই জানিয়েছেন শুভাপ্রসন্ন।
রামপুরহাটে আগুনে দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১০ জনের। উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, পুলিশের সামনেই সেই ঘটনা ঘটেছিল। রাজ্যের সরকার ও প্রশাসনের দিকে যখন আঙুল উঠছে, তখন শুভাপ্রসন্ন বললেন, ‘এটা একটা ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। মানুষের মৃত্যু কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।’ তবে কেন ঘটল, তা তদন্তসাপেক্ষ বলেই উল্লেখ করেছেন তিনি।
তবে প্রতিশোধ যে এই ঘটনার অন্যতম কারণ, তা মেনে নিচ্ছেন শিল্পী। শুভাপ্রসন্ন বলেন, ‘এই ঘটনায় হয়ত কোনও প্রতিশোধ ক্রিয়া কাজ করছে। কিন্তু প্রতিশোধ ক্রিয়ার জন্য এ ভাবে মানুষকে পুড়িয়ে খুন করার এমন উদাহরণ খুব বেশি নেই।’ তাঁর আর্জি, শান্তি যেন বজায় থাকে রাজ্যে, প্রাণ নিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার খেলা যেন পশ্চিমবঙ্গের বুক থেকে মুছে যায়। তিনি বলেন, ‘বাঙালি হিসেবে যদি আমরা মাথা উঁচু করতে চাই, তাহলে নিশ্চিত করতে হবে, এই ধরনের প্রতিশোধমূলক বিষয়গুলো যাতে শেষ হয়ে যায়।’