অভিষেকের সঙ্গে ‘বন্ধুত্বের’ খেসারত? তৃণমূলের ‘চাকরি’ খোয়ানোর নেপথ্য কারণ খোলসা করলেন অরূপ
TMC: এড়িয়ে যেতে চাইলেন অভিষেককে ছবি দেওয়ার প্রসঙ্গও। খানিক যুক্তি সাজিয়ে বললেন, “আমাদের দলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নেত্রী মমতাদি। আজকে মমতাদি বিজয়ার পর সমস্ত কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন। সৌজন্য বিনিময় করেন। আমি যাব না দেখা করতে? এটা তো আমার আবেগ। একইভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও আমাদের আবেগ। সেই আবেগের কারণেই তাঁর জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি।”
কলকাতা: ‘Left Job at All India Trinamool Congress’ অরূপ চক্রবর্তীর ফেসবুক প্রোফাইলে গেলেই জ্বলজ্বল করছে লাইনটা। এই অরূপ চক্রবর্তীই দীর্ঘ সময় ধরে তৃণমূলের মুখপাত্রের পদ সামলেছেন। কিন্তু, রাতারাতি তাঁকে অব্য়াহতি দিয়ে দিয়েছে দল। শুধু অরূপ চক্রবর্তী নয়, কোহিনুর, সুদীপ রাহাও বাদ পড়েছেন মুখপাত্রের তালিকা থেকে। জায়গায় এসেছেন এক ঝাঁক নতুন মুখ। এদিকে তৃণমূলের এই রদবদলের আবহে বারেবারে শোনা যাচ্ছে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্বের কথা। এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বড় অংশের মতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন অরূপ। সে কারণেই কী কোপ? প্রশ্ন ঘুরছে। তবে অভিষেকের সঙ্গে ‘বন্ধুত্বের’ কারণেই কোপ পড়েছে পদে, এমনটা মানতে নারাজ অরূপ।
এড়িয়ে যেতে চাইলেন অভিষেককে ছবি দেওয়ার প্রসঙ্গও। খানিক যুক্তি সাজিয়ে বললেন, “আমাদের দলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নেত্রী মমতাদি। আজকে মমতাদি বিজয়ার পর সমস্ত কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন। সৌজন্য বিনিময় করেন। আমি যাব না দেখা করতে? এটা তো আমার আবেগ। একইভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও আমাদের আবেগ। সেই আবেগের কারণেই তাঁর জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি।”
কিন্তু, মনের কোণে কী কোথাও একটা অভিমানের মেঘ জমতে শুরু করেছেন? প্রকাশ্যে যদিও এ নিয়ে খুল্লামখুল্লা কিছুই বলতে চাইলেন না তিনি। ক্যামারে মুখোমুখি হতে বললেন কোনও অভিমানই নেই তাঁর। নেই কোনও আক্ষেপ। একইসঙ্গে ফেসবুক পোস্ট নিয়ে দেন যুক্তি। বলেন, “আমি জানতে পারি যে মুখপাত্রদের নতুন তালিকা তৈরি হয়েছে। একটা গ্রুপও তৈরি হয়েছে। সেখানে আমি নেই। তারপর আমি প্রোফাইলে স্টেটাসটা আপডেট করে দিই। এতদিন মুখপাত্র ছিলাম, এখন প্রাক্তন মুখপাত্র। দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দল বিবেচনা করেছে।”
তবে দলের কঠিনতম সময়েও যে তাঁরা দলের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তা মনে করাতে ভোলেনি। খানিক অতীত মনে করিয়েই বললেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি দলের কঠিনতম সময়ে পারফর্ম করার।” ২০২১ সালে ২১ জুলাইয়ের পরের রাতে অর্থাৎ ২২ জুলাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে রেইড হয়। পরবর্তীকালে গ্রেফতার। মানিক ভট্টাচার্য থেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, কুন্তল ঘোষ, একের পর এক গ্রেফতারির ঘটনা ঘটেছে। যে সময় তৃণমূলের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে না পেরে এজেন্সি দিয়ে কোণঠাসা করা হয়েছে তখন আমরা একের পর এক চ্যানেলে গিয়েছি। মমতাদির নেতৃত্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে লড়াই করেছি। এমনকী আরজি কর কাণ্ডের সময়ও ভোকালি লড়াই করেছি। দল নিশ্চয় বিবেচনা করেই নিশ্চয় এখন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা দলের অনুগত সৈনিক। তাই দলের সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নেওয়াই সৈনিকের কাজ। তবে আমাদের দল একটাই। তার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সেনাপতির নাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।“
অরূপ কী নন পারফর্মার?
যোগ্যতা বিবেচনা করার ভার এখনও দলের উপরেই রাখছেন অরূপ। বলছেন, “নন পারফর্মার কিনা দল বিবেচনা করবে। কোনও আক্ষেপ বা অনুযোগ নেই। দলের সবথেকে খারাপ সময়ে আমরা কথা বলেছি, আমাকে মুখপাত্রের দায়িত্ব দিয়েছিল। সেরা জায়গা দিয়ে পারফর্ম করার চেষ্টা করেছিলাম। এখন নতুন যাঁরা এসেছেন তাঁরা নিশ্চয় আরও ভাল করে পারফর্ম করবেন। তাঁদের জন্য শুভকামনা রইল।”