কলকাতা: বহু উত্থান পতনের সঙ্গে ছিলেন। একজন যোগ্য নেতা, যোগ্য প্রশাসক। বাংলার রাজনীতিতে এক বর্ণময় চরিত্র। মন্ত্রী হিসাবে মেয়র সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে (Subrata Mukherjee) সব সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। মন্তব্য অশোক ভট্টাচার্যের (Ashok Bhattacharya)।
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে বাম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বললেন, “আমাদের দলটাকে মাকু পার্টি বলেছেন সুব্রত। সত্তরের দশকে সিদ্ধার্থ জমানায় বামপন্থীদের বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট কায়দায় অত্যাচার হয়। আমাদের খতম করার চেষ্টার অন্যতম অভিযুক্ত তিনিও। কিন্তু তিনি যখন মেয়র হন, তার ব্যবহারে আমরা সেসব ভুলে গিয়েছিলাম।”
সুব্রত স্মৃতিচারণায় নস্ট্যালজিক হয়ে পড়েন অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “বাংলার রাজনীতিতে তিনি এক বর্ণময় চরিত্র। তিনি যখন মেয়র হন আমি তখন মন্ত্রী। উন্নয়নের প্রশ্নে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তবে পারস্পরিক ক্ষেত্রে মন্ত্রী বা মেয়রের সম্পর্ক নয়, বরং পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। গল্প, আড্ডা, চর্চা চলত।”
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ে যখন বিরোধী দলের বিধায়ক সেই সময় তাঁর সঙ্গে পরিচয় সিপিএম নেতা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে। অশোকবাবু রাজ্যের নগর উন্নয়ন দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রী থাকার সময় সুব্রতবাবু কলকাতার মেয়র। উন্নয়নের প্রশ্নে রাজনীতি ঢোকেনি, দাবি করেন বর্যীয়ান নেতা অশোক ভট্টাচার্য।
রবীন্দ্র সদনে প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “সুব্রত মুখোপাধ্যায় ছিলেন রাজনীতির বর্ণময় চরিত্র। রসবোধ সম্পন্ন নেতা ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়।”
কালীপুজোর রাতে গোটা রাজ্যে নেমে আসে অন্ধকার। প্রয়াত হন রাজ্যের বর্ষীয়ান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ৭৫ বছরে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের জীবনাবসান। সকাল ১০টা থেকে মরদেহ থাকবে রবীন্দ্রসদনে। রবীন্দ্রসদন থেকে মরদেহ আসবে বালিগঞ্জের বাড়িতে।
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোকবিহ্বল মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবারই তিনি বলেছেন, “সুব্রতদার দেহ আমার পক্ষে দেখা সম্ভব নয়।” বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। রাত ৯ টা ২২ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সুব্রত। ২৫ অক্টোবর থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। রাতে পিস ওয়ার্ল্ডেই রাখা ছিল মন্ত্রীর দেহ। পিস ওয়ার্ল্ড থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে রবীন্দ্র সদনে।
সকাল ১০টা-দুপুর ২টো পর্যন্ত রবীন্দ্রসদনে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে। তারপর বিধানসভা হয়ে দুপুর ২টোর পর বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে দেহ। একডালিয়া ক্লাব হয়ে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে প্রয়াত রাজনীতিকের শেষ কৃত্য। আজ, শুক্রবার সরকারি দফতরে অর্ধনমিত থাকবে জাতীয় পতাকা। প্রয়াত মন্ত্রীর শ্রদ্ধায় রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হৃদরোগের সমস্যার পাশাপাশি সিওপিডি বা শ্বাসকষ্টের সমস্যাও ছিল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। এর পাশাপাশি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যাও ছিল। একাধিক রোগের কারণেই বেড়ে গিয়েছিল জটিলতা।
আরও পড়ুন: Subrata Mukherjee: সুব্রত-প্রয়াণে শোকবিহ্বল গোটা রাজ্য, সরকারি দফতরে আজ অর্ধনমিত পতাকা