বিধানসভায় কাণ্ড বটে! সব্বাইকে চমকে দিয়ে লক্ষ্মীবারের বাজেট আলোচনায় ‘হাজির’ সুকুমার রায়
Assembly: বৃহস্পতিবার বাজেট অধিবেশন নিয়ে আলোচনা ছিল বিধানসভায়। সকাল ১১টা থেকে সেই আলোচনা শুরু হয়।
সৌরভ গুহ: লক্ষ্মীবারে বিধানসভার অধিবেশনে বাজেট নিয়ে চলছিল আলোচনাপর্ব। একদিকে রাজ্য সরকার যখন বোঝাতে মরিয়া, সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই এই বাজেটের লক্ষ্য। অন্যদিকে বিরোধী শিবির প্রমাণ করেই ছাড়বে, এই বাজেটে মানুষের কোনও উপকারই হবে না। সবটাই গোল গোল কথা। যদিও এ ধরনের ছবি নতুন নয়। বছর বছর এমনটাই হয়ে আসছে বিধানসভার বাজেট-আলোচনা পর্বে। কিন্তু এবার বাজেট অধিবেশনকে আলাদা মাত্রা দিলেন সুকুমার রায়। নাহ! এ নামে পশ্চিমবাংলায় কোনও বিধায়ক নেই। ইনি কথাশিল্পী সুকুমার রায়ই। তাঁর অমোঘ লেখনিকে ধার করেই এদিন বিধানসভায় চলল কথার গুঁতো।
বৃহস্পতিবার বাজেট অধিবেশন নিয়ে আলোচনা ছিল বিধানসভায়। সকাল ১১টা থেকে সেই আলোচনা শুরু হয়। বলতে ওঠেন বিজেপির বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। শুরুটাই ছিল সুকুমার রায়কে স্মরণ করে। রাজ্যের এবারের বাজেট যে কতটা হাস্যকর হয়েছে, মূলত তা বোঝাতেই অগ্নিমিত্রা শোনালেন, ‘হাসছি মোরা, হাসছি দেখো, হাসছি মোরা আহ্লাদি। তিনজনেতে জটলা করে ফোকলা হাসির পাল্লা দিই।’ অগ্নিমিত্রার কথায়, এবারের বাজেট দিশাহীন। আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক বলেন, সুকুমার রায় তো ভবিষ্যৎদ্রষ্টা ছিলেন, তাই আগেই এই কবিতাটি লিখে রেখেছিলেন। দিশাহীন বাজেট দেখে সুকুমার রায়ের এই কবিতাটিই মনে পড়ছে। আর হাসি পাচ্ছে। এত ধরনের সমস্যা তা নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য নেই। বহু কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নেওয়া হয়েছে, পরে সেগুলি রাজ্যের প্রকল্প বলে চালানো হচ্ছে। এটা একটা হাস্যকর বাজেট।
আরও পড়ুন: Fake Vaccine: দেবাঞ্জনের ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে বড় মোড়, তদন্তে এ বার কেন্দ্রীয় সংস্থা
এরপর গোটা অধিবেশন চলে, বিরতি হয়। আবারও অধিবেশন বসে। একদম শেষ পর্বে বলতে ওঠেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একেবারে শেষ বক্তা তিনি। বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেন পার্থবাবু। একই সঙ্গে তুলে ধরেন, এবারের বাজেট কতটা জনকল্যাণকর। তবে সরকারের ভাল দেখলেও বিজেপি উল্টো সুর ধরে, সে কথা বোঝাতে গিয়ে পার্থবাবুও শরণ নেন সুকুমার রায়েরই। বহুল পরিচিত ছড়া আওড়ে বলেন, ‘রামগড়ুরের ছানা, হাসতে তাদের মানা। হাসির কথা শুনলে বলে হাসব না না না না।’ পার্থবাবুর বক্তব্য, বিজেপি সেই রামগড়ুরের ছানা, যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এত ভাল বাজেট দেখেও গোমরা মুখে তার কাটাছেঁড়া করে চলেছে।
সামগ্রিক ভাবে বাজেট অধিবেশনে নানা প্রসঙ্গই উঠে আসে। তবে এ ভাবে রাজনীতির তরজায় বাঙালির চির প্রিয় সুকুমার রায়ও যে ঢুকে পড়বেন তা একেবারেই ঠাহর করা যায়নি। যা এদিনের অধিবেশনকে একটা আলাদা মাত্রা দেয়।