কলকাতা: দীর্ঘ দিন ধরে তিনি বিজেপি (BJP) করেছেন এমনটা নয়। গত কয়েক বছরে সাংগঠনিক কাজেও তেমভাবে তাঁকে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। তবে বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo) বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর লাইমলাইট কেড়েছিলেন অনায়াসে। বিশেষত আসানসোল (Asansol) কেন্দ্র থেকে তাঁর জয় আনকোরা রাজনীতিক হিসেবে বড় সাফল্য বলে মনে করেছিলেন অনেকেই। তবে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) সঙ্গে যে তাঁর সম্পর্ক খুব একটা মধুর নয়, এ কথা বারবার প্রকট হয়েছে। একসময় সংবাদমাধ্যমের সামনেই জড়িয়ে পড়েছিলেন বচসায়। মেদিনীপুর কলেজ মাঠে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) সভার ঠিক আগে সেই ছবি ধরা পড়ে। কেন সে দিন কথা কাটাকাটিতেই জড়িয়েছিলেন তাঁরা? তৃণমূলে (TMC) যোগ দেওয়ার পর TV9 বাংলাকে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন বাবুল সুপ্রিয়।
রাজ্যে এসে সভা করার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। সভার শুরুর আগে মেদিনীপুর কলেজ মাঠের সেই মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ, বাবুল সুপ্রিয়রা। কিন্তু মোদী আসার আগেই এই দুই নেতার কথা কাটাকাটি শুরু হয়। সভাস্থলে তখন হাজির সংবাদমাধ্যম। ধরা পড়ে যায় সেই ছবি। এ বার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর বাবুল সুপ্রিয় জানালেন ঠিক কী কারণে বচসা হয়েছিল সে দিন। সাক্ষাৎকারে বাবুল জানান, সে দিন দিলীপ ঘোষকে গিয়ে কানে কানে তিনি বলেছিলেন যাতে এমন কর্মকাণ্ডের আগে তাঁকেও কিছু জানানো হয়। বাবুল বলেন, ‘সে দিন দিলীপ দাকে বলেছিলাম, এত বড় কর্মকাণ্ডের আগে আমাকেও তো একটু বলতে পার। আমিও তাহলে এসে কিছু কাজ করতে পারি।’ বাবুলের দাবি, এ কথা শোনার পর দিলীপ ঘোষের মনে হয়েছিল, তাঁর নামে বাবুল বা অন্যান্য কয়েকজন নেতা দিল্লিতে নালিশ করছেন। আর তাতেই চটে যান দিলীপ।
বাবুল রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে আনার পর দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়ে নিয়ে কটাক্ষ করতেও দেখা গিয়েছিল বাবুলকে। সম্পর্ক যে কোনোদিনই ভালো ছিল না, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে আগেই।
বাবুল রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা করার পর দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, ‘বাবুল সক্রিয় মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু মন্ত্রী থাকাকালীন তো মুখ্যমন্ত্রী কম গালমন্দ করেননি। এখন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন বাবুল।’ আর দিলীপের এই মন্তব্যের পরই ফেসবুক পোস্ট করেন বাবুল। সেখানে কটাক্ষ করে বাবুল লেখেন, ‘আমার হাঁফ ছেড়ে বাঁচাতে দিলীপদা আনন্দ পেয়েছেন এতেই আমি আনন্দিত। বাবুল লিখেছিলেন, ‘রাজ্য সভাপতি হিসেবে মনের আনন্দে দিলীপদা অনেক কিছুই বলেন। আবারও বললেন, আমি শুনলাম। কিন্তু এই উক্তিটি কেন করলেন সেটা যদি এবারকার জন্য আমি ‘স্বজ্ঞানে’ বুঝেও না বুঝি তো ক্ষতি কি? এটাই আমার প্রতিক্রিয়া। আমার “হাঁফ ছেড়ে বাঁচাতে” দিলীপদা আনন্দ পেয়েছেন এতেই আমি আনন্দিত। উনি রাজ্য সভাপতি, সবার শ্রদ্ধার পাত্র। আমিও আন্তরিক শ্রদ্ধা জানালাম প্রিয় দিলীপদাকে।’ দিলীপের বক্তব্য যে বুঝেও তিনি না বুঝতে চাইছেন, সে কথাও উল্লেখ করেন বাবুল।
আরও পড়ুন: BJP On Babul Supriyo: ‘সংসার যখন ভেঙেই গিয়েছে…’, বাবুল-বিচ্ছেদকে ‘মিউচুয়াল ডিভোর্স’ বলল বিজেপি