Babul Supriyo on Abhishek Banerjee: ‘সিরিয়াসলি’ না নেওয়া ‘ভাইপোর’ নোটিস রাখতেন ‘ছোট্ট বাক্সে’! আজ সেই ‘বাক্সবদল’ বাবুলের!

Babul Supriyo: মাস কয়েক আগে মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে ক্ষমা চাইতে হবে না হলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের হুঁশিয়ারি দিয়ে আইনি নোটিস পাঠান তৃণমূল সাংসদ অভিষেক।

Babul Supriyo on Abhishek Banerjee: ‘সিরিয়াসলি’ না নেওয়া ‘ভাইপোর’ নোটিস রাখতেন ‘ছোট্ট বাক্সে’! আজ সেই ‘বাক্সবদল’ বাবুলের!
ঝগড়া এখন অতীত। অলংকরণ: অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 19, 2021 | 9:54 PM

কলকাতা: গত সাত বছরে তিনি ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) -র প্রবল সমালোচক। এই সেদিনকার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টেও তৃণমূলকে আক্রমণ করে লিখেছেন ‘টিএমছিঃ’। তাছাড়া উঠতে বসতে তৃণমূলের বর্তমান সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee)-র সঙ্গে আইনি ঠোকাঠুকিই লেগেই থাকত বাবুল সুপ্রিয়-র (Babul Supriyo)। আর অভিষেক সহ বিরোধী নেতাদের পাঠানো এই সব আইনি নোটিস নাকি সযত্নে একটি ছোট্ট বাক্সে রেখে দিতেন বাবুল। এখন সেই অভিষেকের হাতে হাত রেখেই শনিবারের বারবেলা তৃণমূলে (TMC) যোগ দিয়েছেন বাবুল। এবার তাঁর বর্তমান নেতার সঙ্গে বাক্স বদল করতে চাইলেন বাবুল!

রবিবাসরীয় বিকালে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক থেকে সাংবাদিকের এই প্রশ্নের জবাবে বাবুল জানিয়ে দেন এবার তাঁরা ‘বাক্সবদল’ করে নেবেন। ঠিক কী বলেছেন তিনি? তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, যে অভিষেককে আক্রমণ শানিয়েছেন, আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন এবার তার কী হবে? আসানসোলের বিজেপি সাংসদের সহাস্য জবাব, অভিষেক-ও তাঁকে আক্রমণ করেছেন! তবে এখন সে সব অতীত। একে অপরকে পাঠানো আইনি নোটিস তাঁরা অদলবদল করে নেবেন বলে জানান বাবুল। হাসতে হাসতে বলে দেন, এবার বাক্সবদল করে নিতে হবে।

উল্লেখ্য, একুশের ভোটের ময়দানে মমতার চেয়েও বেশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। আর তার প্রথমভাগে ছিলেন বাবুল সুপ্রিয় এবং শুভেন্দু অধিকারী। তাঁরা বারবার দুর্নীতি কাণ্ডে অভিষেকের নাম করে এবং না করে ‘ভাইপো’ বলে কটাক্ষ করে গিয়েছেন।

আবার কেন তিনি অভিষেককে এই ধরনের সম্বোধন করেন তাঁর উত্তরে একবার শুভেন্দু অধিকারী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বদানের ক্ষমতার মূল্যায়ন করতে শোনা গিয়েছিল তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে। তিনি জানিয়ে দেন শুভেন্দুর পরিচয় তিনি নিজেই গড়ে তুলেছেন। তাঁর বাবা শিশির অধিকারী সাংসদ হলেও, কেউ কখনও তাঁকে বাবার পরিচয়ে সম্বোধন করেননি। অপরদিকে অভিষেকের নেতৃত্বদানের ক্ষমতার উপর ব্যঙ্গ করে তিনি জানিয়েছিলেন, একজন মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো হিসাবেই তাঁর পরিচয়। আলাদা কোনও অস্তিত্ব নেই অভিষেকের। সেই অভিষেকের হাত থেকেই তৃণমূলের পতাকা নিয়েছেন মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে। তাই এখন সেসব আইনি লড়াই ‘বাক্সবাদল’ করে ফেলতে চান বাবুল।

উল্লেখ্য, বেশ কয়েকটি মামলার মধ্যে মাস কয়েক আগে মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে তথা আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে ক্ষমা চাইতে হবে, না হলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের হুঁশিয়ারি দিয়ে আইনি নোটিস পাঠান তৃণমূল সাংসদ অভিষেক। কেন এই আইনি নোটিস?

সে বছরের ৩১ ডিসেম্বর গরু ও কয়লা পাচারকাণ্ডে নাম করেই ডায়মন্ড হারবারের সাংসদকে আক্রমণ করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। বিভিন্ন প্রসঙ্গে বারবার বিজেপি নেতারা সুর চড়িয়েছেন অভিষেকের বিরুদ্ধে। কেউ কয়লা পাচারের অভিযোগ, কেউ আবার আমফানের দুর্নীতিতেও নাম না করে আক্রমণ শানিয়েছেন। তার পর ডায়মন্ড হারবারের সভা থেকে বিজেপি নেতাদের সতর্ক করার পাশপাশি অভিষেক বলেছিলেন, ক্ষমতা থাকলে ‘ভাইপো’র নাম বলতে।

সেদিনই আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। তার পরই রাখঢাক না করে সরাসরি অভিষেককে আক্রমণ করেছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। বলেছিলেন, ‘আমি নাম করেই বলছি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্নীতিগ্রস্ত। কয়লাপাচার-সহ একাধিক বেআইনি কাজে ওনার যোগ রয়েছে। উনি তোলাবাজ।’ তার প্রেক্ষিতে আইনি লড়াই শুরু হয়েছিল সদ্য রাজনৈতিক দুই সহযোদ্ধার।

এ নিয়ে একবার তো প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি সিরিয়াসলি নিই না। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বাস্তবেই যে কতটা অমানবিক কাজ করছেন, সেটা সবাই জানেন। ওঁরা বদলাবেন না, তাই জনতাই ২০২১-এ একটা বড় বদল আনবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার হতাশায় কৌতুক করার মতো একটি উক্তি নিয়ে করা ফেসবুক পোস্টের জন্য আইনি নোটিস পাঠানো হচ্ছে। তবে এ রকম নোটিস মাঝে মাঝে সবাইকেই পাঠানো হয়। আমার কাছেও আসে। আমার একটা ছোট বাক্স রয়েছে। তার মধ্যে ওই নোটিসগুলোকে রেখে দিই। আমার আইনজীবী যা করার করেন।’’ সে সব অবশ্য় এখন অতীত। এবার সেই বাক্স বদল করতে চান বাবুল।

আরও পড়ুন: Babul Supriyo: ‘তৃণমূল যেন বিড়ম্বনায় না ফেলে’, ‘বোনের’ জন্য ‘দিদির’ কাছে প্রার্থনা বাবুলের!