Baranagar News: বাড়ি না ভাগাড়, বোঝা দায়! রাস্তার সব নোংরা বাড়িতেই এনে রাখেন এলআইসি কর্মী… তারপর যা হল আজ
Baranagar News: এদিকে, সেই ময়লার গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসীরা। তাঁর বাড়ির ধারেকাছ দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা।
কলকাতা: জং পড়া লোহার গ্রিল। বারান্দার গ্রিলের ফাঁক দিয়ে গুঁজে দেওয়া নোংরা পলিথিন-প্লাস্টিক। ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে আনা নোংরা কাপড়-আবর্জনা! এতটাই ঘিঞ্জি করে নোংরা ঠাঁসা, যে এক ফোঁটা জায়গাও নেই বাড়িতে। একতলা পাকা বাড়ি আসলে আস্ত একটা ভাগাড়। বাড়ির কর্ত্রীর এই নাকি নেশা! আজব নেশা তাঁর। রাস্তা, ভাগাড়, আবর্জনার স্তূপ থেকে নোংরা কুড়িয়ে এনে নিজের বাড়িতে জমা করেন তিনি। পচা দুর্গন্ধ বেরোয়, আর তাতেই নাকি অদ্ভূত শান্তি খুঁজে পান তিনি। অদ্ভূত কাণ্ড বরানগরের বিদ্যায়তন সরণিতে। নাহ! এটা ভাববেন না যে তিনি মানসিক বিকারগ্রস্ত। তিনি কিন্তু পেশায় একজন এলআইসি কর্মীও।
কথা হচ্ছে বছর পঞ্চান্নর নূপুর হাজরার। তিনি বরানগর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যায়তন সরণির বাসিন্দা। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, নূপুরের প্রতিদিনের অভ্যাস বাইরে থেকে ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করে তাঁর বাড়ির মধ্যে জমা করা। এই নিয়ে একাধিকবার প্রতিবেশীরা বারণ করেছেন, শোনেননি। ঝামেলা করেছেন, পাত্তা দেননি। নিজের খেয়ালেই চলেন তিনি। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, যেখানে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখেন, নোংরা প্লাস্টিক দেখেন সেটা সংগ্রহ করে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। এটাই তাঁর অদ্ভূত নেশা।
এদিকে, সেই ময়লার গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসীরা। তাঁর বাড়ির ধারেকাছ দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা। তবে এই ওমিক্রনের বাড়বাড়ন্ত, যেখানে সবসময় পরিচ্ছন্নভাবে থাকবে বলা হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে দাঁড়িয়ে কীভাবে এই সব মেনে নেওয়া সম্ভব প্রতিবেশীদের।
ফলে নূপুরের প্রতিবেশীরা খবর দেন পৌরসভাতে। শুক্রবার সকালে পৌরসভার কর্মীরা হাজিন হন নূপুরের বাড়িতে। এলাকার মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে বরানগর পৌরসভার কো-ডিনেটর রামকৃষ্ণ পাল, বরনগর থানার পুলিশ ও পৌরসভার কর্মীদের যান। গিয়ে দেখেন নূপুর আগেভাগেই বাড়ি ছেড়েছেন। বাড়ির তালা ভেঙে ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করার উদ্যোগ নেন তাঁরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বরানগর পৌরসভার ৯ ওয়ার্ড বিদ্যায়তন সরণি এলাকায় যথেষ্ট উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ঘটনাস্থলে বরানগর থানার পুলিশ। ঘটনার পর থেকে বাড়ির মালিক নুপুর হাজরা পলাতক।
বরানগর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কো অর্ডিনেটর রামকৃষ্ণ পাল বলেন, “কয়েক বছর ধরেই এই পরিস্থিতি। এলাকার মানুষ আমাকে আগে থেকেই জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, দাদা আপনি যদি কিছু না করেন করোনার মধ্যে এমনিই বাঁচব না। কয়েকদিন ধরে হেলথ অফিসার, পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করি। এই ভদ্রমহিলা সব ময়লা এনে এখানে জড়ো করেছেন। এগুলিকে বার করা হল।”
স্থানীয় বাসিন্দা গৌরী মণ্ডল বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই ওঁ মানসিকভাবে অসুস্থ। দিনের শুরুতেই ব্যাগ নিয়ে বের হন। এলাকার সমস্ত ময়লা কুড়িয়ে এনে তিনি নিজের বাড়িতে জড়ো করেন। করোনার মধ্যে ভীষণ অসুবিধা। দুর্গন্ধ বের হন।”
আরও পড়ুন: Child Murder Allegation: ছাগলে খেয়েছে ধান, নিজের ৬ মাসের ছেলেকে বলি দিতে হল দম্পতিকে! ঘটনাটা ঠিক কী?