Behala Murder: ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেন, গেলাস ভরা মদ! বোন-বোনপোকে ‘খুনের’ পরও পার্টি মুডে ভাই
Behala Murder Case: লালবাজারের গোয়েন্দাদের প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল, এই ঘটনায় পরিচিত কেউ যুক্ত।
কলকাতা: পর্ণশ্রীতে (Behala Murder Case) জোড়া খুনের ঘটনায় রবিবারই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতরা সম্পর্কে নিহত মহিলা সুস্মিতা মণ্ডলের মাসতুতো দাদা। একজনের নাম সঞ্জয় দাস, অপরজন সন্দীপ দাস। রবিবার সকালেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। সোমবার দু’জনকেই আলিপুর আদালতে তোলা হয়। ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দু’জনকেই পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গত ৬ সেপ্টেম্বর বেহালা পর্ণশ্রীর (Parnashree Murder) সেন পল্লির এক আবাসন থেকে মা ও ছেলের গলা কাটা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, ঘটনার দিন দুপুরে সুস্মিতাদের বাড়িতে গিয়েছিলেন সঞ্জয় ও সন্দীপ। বেলা ১২টা নাগাদ পর্ণশ্রীর ওই বাড়িতে ঢোকেন তাঁরা। বোনের সঙ্গে নানা গল্পও করেন। সেই সময় সুস্মিতার ছেলে তমোজিৎ অনলাইনে ক্লাস করছিল। ছেলের ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন সুস্মিতা। এদিকে দাদাদের চা এবং কেক খেতে দেন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, এই খাবার খাওয়ার সময়ই কথায় কথায় বোনকে অন্য মনস্ক করে তোলেন দুই ভাই। অভিযোগ, এর পরই সুস্মিতার গলায় ছুরির কোপ বসান একজন। সেই সময় তমোজিৎও ঘরে ঢুকে পড়েন। মায়ের ভয়ঙ্কর পরিণতি দেখে শিউরে ওঠে বছর তেরোর ওই নাবলক। অভিযোগ, এরপর তাঁকেও ওই একই ছুরি দিয়ে কোপানো হয়।
লালবাজারের গোয়েন্দাদের প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল, এই ঘটনায় পরিচিত কেউ যুক্ত। যাঁরা অবাধে মণ্ডল বাড়িতে ঢুকতে পারতেন। কারণ, পুলিশ সুস্মিতার স্বামী তপন মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, কেউ বাড়িতে এলে সুস্মিতা কি হোল দিয়ে দেখে তারপর দরজা খুলতেন। অর্থাৎ অপরিচিত কেউ হলে দরজা খোলার প্রশ্নই নেই। এরপরই পুলিশ পরিচিতদের একটি তালিকা তৈরি করে তদন্ত শুরু করে। একই সঙ্গে ‘টাওয়ার ডাম্পিং’ও করে পুলিশ। অর্থাৎ তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার সময় ও তার আগে এলাকায় কোন কোন নেটওয়ার্ক থেকে কত ফোন এসেছিল বা গিয়েছিল। এই সমস্ত থেকেই পুলিশের নজরে পড়ে সুস্মিতার দুই মাসতুতো ভাই সঞ্জয় ও সন্দীপের নাম।
বজবজ পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কয়ালপাড়াতে ভাড়া থাকেন সঞ্জয় দাস। পরিবারে স্ত্রী, সন্তানও রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম থেকেই তদন্তকারীদের সন্দেহের নজর ছিল এই দু’জনের উপর। যেদিন প্রথম পুলিশ তাঁদের বাড়িতে গিয়েছিল, সেদিন সেখানে পার্টি চলছিল বলে জানা যায়। ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেন তো ছিলই। ছিল মদের ব্যবস্থাও। সেখান থেকেই পুলিশের প্রথম খটকা লাগে। এতটা ভাবলেশহীন কেউ কী করে হতে পারে!
পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, ঘটনার দিন বোনের বাড়িতে চা ও কেক খাওয়ার পর চায়ের কাপ ধুয়ে রেখেছিলেন দুই ভাই। কোনও ভাবেই যাতে কারও কোনও রকম সন্দেহ না হয়, কোনও প্রমাণ না উঠে আসে, সে কারণেই সেগুলি ধুয়ে রেখেছিলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: রোমা ঝাওয়ার অপহরণকাণ্ড: ১৬ বছর পর সাজা ঘোষণা! গুঞ্জন ঘোষের যাবজ্জীবন, তিন সঙ্গীরও