বোনের গয়নার শখ, জানতেন ভাই! পর্ণশ্রীকাণ্ডে খুনের পিছনেও সম্পত্তির লোভ!
Behala Murder Case: গত ৬ সেপ্টেম্বর বেহালা পর্ণশ্রীর সেন পল্লির এক আবাসন থেকে মা ও ছেলের গলা কাটা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
কলকাতা: পর্ণশ্রীতে জোড়া (Behala Murder) খুনের ঘটনার ছ’দিনের মধ্যে দুই অভিযুক্ত গ্রেফতার। ঘটনাক্রমে দু’জনই নিহত মহিলার মাসতুতো ভাই। তেরো বছরের নিহত ছেলের মামা। এই ঘটনার তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে লালবাজারের গোয়েন্দাদের হাতে। সেই সূত্র ধরেই সঞ্জয় দাস ও সন্দীপ দাস নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপরই উঠে আসে শিউরে ওঠার মতো তথ্য। রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে তা জানান স্বয়ং কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট সিপি (ক্রাইম) মুরলীধর শর্মা।
জোড়া খুনে কী বলছে লালবাজার
পুলিশ কর্তা মুরলীধর শর্মার কথায়, “রবিবার আমরা দু’জনকে এই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করেছি। তাঁদের নাম সঞ্জয় দাস ও সন্দীপ দাস। দু’জনই নিহত মহিলা সুস্মিতা মণ্ডলের মাসতুতো ভাই। এই মহিলার গয়নার শখ ছিল। দুই ভাই ভেবেছিলেন, ওনার কাছে প্রচুর গয়না পাওয়া যাবে। তাই তাঁরা পরিকল্পনা করে এবং ওই বাড়িতে যান। ওনারা জানতেন বোন ওই সময়ে বাড়িতে একাই থাকেন। স্বামী থাকেন না। ঘটনার সময় বাচ্চাটি অনলাইন ক্লাস করছিল। যাতে কোনও বাইরের কথা কানে না যায় তাই দরজা ভেজিয়ে দেন। তার পরই এই ঘটনা। এদিকে ওই বাচ্চাটা বোধহয় দেখে ফেলেছিল, তাই ওরা বাচ্চাটাকেও মেরে দেয়।”
স্বামীকে ফাঁসানোর অভিযোগ ধৃতের স্ত্রীর
যদিও এই ঘটনার পরই বিস্ফোরক সঞ্জয় দাসের স্ত্রী পারমিতা দাস। তাঁর দাবি, সঞ্জয় দাসকে ফাঁসানো হচ্ছে। পারমিতার কথায়, “লকডাউনে কার বলুন তো টুকটাক দেনা হয়নি? তবে আমার স্বামীর কত দেনা ছিল আমার জানা নেই। ঘটনার দিনও প্রত্যেক দিনের মতোই সাড়ে ৮টা-৯টা নাগাদ বাড়ি ফিরেছিলেন। আমাদের ১৮ বছর হয়ে গেল বিয়ের। যদি মনে হতো স্বামী এমন কাজ করতে পারেন, তা হলে আমার কি প্রাণের ভয় থাকত না? একটা এরকম মানুষের সঙ্গে আমি থাকতে পারতাম?”
পারমিতার দাবি, “আজ সকালেও পুলিশকে বলেছিলাম, আপনারা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এসব করছেন। পুলিশের কথায় মধ্যেই তো মিল পাচ্ছি না। প্রথমে বলল তান্ত্রিক। এখন বলছে এসব কোনও ব্যাপারই না। আপনারা যদি পুলিশের বয়ান চেক করেন দেখবেন ১০০টা অসঙ্গতি। পুলিশই প্রথমে বলেছিল, তপন মণ্ডলের আংটিতে রক্তের ছোপ পাওয়া গিয়েছে। দু’ঘণ্টা ফোন বন্ধ করে রেখেছিল। এখন হঠাৎ এসে বলছে আমার স্বামী স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।আমার স্বামীকে ফাঁসানো হচ্ছে।”
বিস্ফোরক বাড়ির মালিক
যদিও বজবজ পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কয়ালপাড়ার যে বাড়িতে গত সাত-আট বছর ধরে সঞ্জয় দাস ভাড়া থাকেন সেই কুণাল বারিক অত্যন্ত ক্ষুব্ধ সঞ্জয় দাসের উপর। এদিনের ঘটনার পর কুণালের সে ক্ষোভ দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। কুণাল বারিকের কথায়, “সাত আট বছর ধরে ভাড়া রয়েছে। এরা ভিতরে ভিতরে এরকম করবে কী করে জানব? প্রথম প্রথম তো ভালই ছিলেন। তার পর একটা ব্যবসার জন্য ওর সঙ্গে যুক্ত হই। আমি ব্যাঙ্ক থেকে লোন করিয়ে ওই টাকা ব্যবসায় খাটিয়েছি। আমি বললাম, তুমি যখন অর্ডার তুলবে লভ্যাংশ অর্ধেক অর্ধেক হবে। আমি তিন লক্ষ টাকা লোন করেছিলাম। এখনও সঞ্জয়ের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা পাব। স্ট্যাম্প পেপারে লেখা আছে।”
আরও পড়ুন: পর্ণশ্রীকাণ্ডে কালপ্রিট ‘কংস মামা’! চা কেক খেয়ে ঠান্ডা মাথায় বোন-বোনপোকে কুপিয়ে খুন