কলকাতা : হাওড়ার জয়পুর থেকে গ্রেফতার করা হল বেহালা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে বাপনকে। গত মঙ্গলবার রাতভর গুলি-বোমা চলে বেহালার চড়কতলায়। আর সেই ঘটনায় যাঁর বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ ছিল, সেই বাপন ছিলেন তৃণমূলের যুব সভাপতি। তাঁকেই রবিবার গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার পরের দিন তৃণমূলের ওই নেতাকে এলাকায় দেখা গেলেও পরের দিন থেকেই বেপাত্তা হয়ে যান তিনি। তাঁকে দ্রুত গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর রবিবার সকালে হাওড়া থেকে বাপন সহ মোট সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই নিয়ে বেহালা-কাণ্ডে মোট ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে চড়কতলায় চলে তাণ্ডব। এলাকায় একাধিক গাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয়। তারপর থেকেই মূল অভিযুক্ত বাপনকে খুঁজছিল পুলিশ। জানা গিয়েছে প্রথমে ওড়িশার বালাসোরে চলে গিয়েছিলেন বাপন, সেখানেই লুকিয়ে ছিলেন তিনি।
তারপর সেখান থেকে বারবার জায়গা পরিবর্তন করতে থাকেন তিনি। মোবাইলের সিমও পরিবর্তন করেন। সেই কারণে তাঁর খোঁজ চালাতে বেগ পেতে হয়েছিল পুলিশকে। অবশেষে রবিবার তাঁকে হাওড়া থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই সাতজনের গাড়ি, মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাঁদের রবিবার আলিপুর আদালতে তোলা হবে। জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া চলছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে যে ঘটনা ঘটে তা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে ঘটে বলেই সূত্রের খবর। স্থানীয় লোকজনের দাবি, বাপন ও লালটু নামে দুই তৃমমূল নেতার দুই গোষ্ঠীর মধ্যেই ছিল পুরনো দ্বন্দ্ব। এলাকার লোকজন আগেও দেছেে সংঘর্ষের ছবি। আর মঙ্গলবার সেই দ্বন্দ্বই চরমে পৌঁছয় ও সংঘর্ষের আকার নেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকা দখল নিয়ে চলছিল দ্বন্দ্ব। চড়কতলা এলাকা কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে বিরোধ তৈরি হল দু পক্ষের। তোলাবাজির ভাগাভাগি নিয়েও সমস্যা ছিল বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার পরই প্রকাশ্যে আসে একটি অডিয়ো ক্লিপ, যাতে বাপনের গলা শোনা গিয়েছে বলেই দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের। সেখানে তোলার টাকার ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা করতেও শোনা গিয়েছে তাঁকে।
বেহালা পূর্বের ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল যুব সভাপতি ছিলেন এই বাপন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল শিবির। এরপরই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
বেহালা পূর্বের বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায় জানান ঘটনার পর তাঁকে ফোন করে খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রত্না জানান মমতাই বেহালা থানায় ফোন করে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে বাপনকে দ্রুত গ্রেফতার করা হয়। এবার ধরা পড়লেন সেই বাপন।
আরও পড়ুন : Jhalda Councillor Death: সিবিআই-এর নজরে ঝালদা থানার জেনারেল ডায়েরির খাতা, আরও চাপে পুলিশ?