Jhalda Councillor Death: সিবিআই-এর নজরে ঝালদা থানার জেনারেল ডায়েরির খাতা, আরও চাপে পুলিশ?
Jhalda Councillor Death: ১৩ মার্চ থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত ঝালদা থানা থেকে জেনারেল ডায়েরির খাতা জমা নিল সিবিআই।
পুরুলিয়া: ঝলদা কাউন্সিলর খুনে অতি তৎপর সিবিআই। তপন কান্দুর খুনের দিন অর্থাৎ ১৩ মার্চ থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত ঝালদা থানার জিডি খাতা খতিয়ে দেখতে চান তদন্তকারীরা। কে কে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, ক’টা এফআইআর, ক’টা জেনারেল ডায়েরি দায়ের হয়েছিল, সবই খতিয়ে দেখবে সিবিআই। এই ঘটনা পুলিশি তদন্তের ওপর অনাস্থা প্রকাশ করছিলেন নিহত তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। এফআইআর সঠিকভাবে খতিয়ে দেখা হয়নি বলে অভিযোগ করছিলেন তিনি। সেই বিষয়টিতেই নজর দিচ্ছে সিবিআই। ঝালদার কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনে একই দিনে দু’বার তলব করা হয়েছিল আইসি সঞ্জীব ঘোষকে। টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলে জিজ্ঞাসাবাদ। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ প্রথম সিবিআই-এর অস্থায়ী ক্যাম্পে আসেন ঝালদার আইসি। সরকারি গাড়িতেই আসেন। তবে পরিচয় গোপন করতে গাড়ির কালো কাচ তুলে দেন। ও পুলিশের স্টিকারও সরিয়ে দেন। সেদিন কালো সেলুটেপ দিয়ে ‘পুলিশ’ স্টিকার ঢেকে রাখা হয়েছিল। দেড়টা পর্যন্ত চলে জিজ্ঞাসাবাদ। তারপর তাঁকে ফের বিকাল পাঁচটা নাগাদ সিবিআই-এর অস্থায়ী ক্যাম্পে ঢুকতে দেখা যায়। প্রায় সাড়ে ন’টা পর্যন্ত চলে জিজ্ঞাসাবাদ। একই দিনে দু’বার তলব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাহলে কি জেরায় কোনও ফাঁক থেকে গিয়েছিল? ঝালদার আইসির বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই অভিযোগ তুলছিলেন নিহত কাউন্সিলরের পরিবার। আইসি-কে নিয়ে রীতিমতো হোমওয়ার্ক করে নিয়েছিল সিবিআই। আইসি-র কলরেকর্ড ইতিমধ্যেই সিবিআই-এর হাতে। পাশাপাশি ওই থানার অনান্য পুলিশ কর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেছে সিবিআই।
ঝালদার আইসি-র ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ছিল কলকাতা হাইকোর্টেরও। কলকাতা হাইকোর্ট প্রশ্ন তুলেছিল, যেখানে আইসি-র ভূমিকা নিয়ে এত প্রশ্ন উঠছিল, সেখানে রাজ্য পুলিশ কেন আইসিকে হেফাজতে নেয়নি? তাঁর যে মোবাইল ফোন থেকে হুমকি ফোন গিয়েছিল, সেটি কেন বাজেয়াপ্ত করা হয়নি? তদন্তভার হাতে নেওয়ার তিন দিনের মধ্যে আইসি-কে তলব করল সিবিআই। সূত্রের খবর, আইসির বয়ান রেকর্ড করা হবে, ভিডিওগ্রাফি করা হবে। প্রশাসনিক পদে থেকে এক জন ব্যক্তি কীভাবে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে দল বদলের জন্য চাপ দিতে পারেন, সেটাই খতিয়ে দেখতে চাইছেন সিবিআই আধিকারিকরা।
সিবিআই তদন্তে উঠে এসেছে, মাঝরাস্তায় তপন কান্দু গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, এ খবর পুলিশের কাছে পৌঁছে যায় আগেই। তবুও সব শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে সেসময় যায়নি। ঘটনাস্থলের খুব কাছে ৪০০ মিটার দূরেই ছিল ঝালদা থানার আরটি ভ্যান। সেখানেই প্রথম খবর আসে কাউন্সিলরের গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি। কিন্তু সব জেনেও ওই আরটি ভ্যানের দায়িত্বে থাকা এক সাব ইন্সপেক্টর গাড়ি নিয়ে সেখানে যাননি। কাউকে পাঠানোর কথাও বলেননি। এমনকি আরটি ভ্যানের কোনও সদস্য যাতে সেখানে না যান,তার জন্য শাসানি দেন বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত ওই গাড়ির কেউ যাননি। ক্লোজ হওয়া পুলিশকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই।
পুলিশের ভূমিকা ও পুলিশি তদন্তের ওপর প্রথম থেকেই অনাস্থা জানিয়ে এসেছিল তপন কান্দুর পরিবার। এরপর অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের অস্বাভাবিক মৃত্যুতেও ওঠে পুলিশি চাপের অভিযোগ। সেক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধেই এফআইআর দায়ের করেছিলেন নিরঞ্জনের দাদা। দুটি কেসেরই তদন্ত করছে সিবিআই। ফলে বাড়ছে পুলিশের ওপর চাপ।
আরও পড়ুন: হাঁসখালিকাণ্ড: ‘বাইরের লোক এসে মেয়েটাকে বাঁশে বেঁধে কাপড়ে মুড়ে নিয়ে যায় শ্মশানে’