কলকাতা: এক প্রাক্তন শিক্ষককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল নারায়ণপুর এলাকায়। এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের সোমবার ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হবে। ওই শিক্ষকের অভিযোগ, যিনি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁকে রবিবার বাইক নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তা ছাড়া হয়নি বলেই এই হামলা। পাল্টা অভিযুক্ত পক্ষের দাবি, ওই শিক্ষকই দুর্ব্যবহার করেছেন তাঁদের সঙ্গে। দেখে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন।
নারায়ণপুর কাদিহাটি কালীনাথ মুখার্জি হাই স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক প্রভাসচন্দ্র সিনহা। প্রভাসচন্দ্র সিনহার অভিযোগ, বাড়িতে ঢুকে তাঁকে ও তাঁর পরিবারের লোকজনের উপর হামলা চালিয়েছেন ভিকি মজুমদার নামে এক যুবক। এই ঘটনায় বিজয় মজুমদার ও বিকাশ মজুমদার নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে নারায়ণপুর থানার পুলিশ। ধৃতদের এদিন ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হবে।
অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি চলছিল রবিবার সন্ধ্যায়। সেই সময় বিকাশ মজুমদার ও তাঁর দলবল সিনহা বাড়িতে হামলা চালান। এই ঘটনায় ৬৫ বছর বয়সী প্রভাসবাবু-সহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা আহত হন বলেই দাবি। শিক্ষকের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় ও তাঁর হাতের আঙুল ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার প্রভাসচন্দ্র সিনহা নারায়ণপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করলে রাতেই বিকাশ মজুমদার ও তাঁর বাবা বিজয় মজুমদারকে গ্রেফতার করে নারায়ণপুর থানার পুলিশ।
কী কারণে এই হামলা তা খতিয়ে দেখছে নারায়ণপুর থানার পুলিশ। নিছক রাস্তা ছাড়া নিয়ে বিবাদ নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, সবদিক খোলা রেখেই তদন্ত চলছে। সূত্রের খবর, রবিবার প্রভাসচন্দ্র সিনহার বাড়ির পাশ দিয়ে বাইক নিয়ে যাচ্ছিলেন বিকাশ মজুমদার। সেই সময় পাশ না দেওয়ার জন্য এই হামলা।
প্রভাসচন্দ্র সিনহার বক্তব্য, “আমার ছেলের বিয়ে আজ। চার পাঁচদিন ধরে এখানকার যোগাসেন্টারে বিয়ের প্রস্তুতির কাজকর্ম চলছিল। গতকালও সেই মতো কাজ চলছি। বাড়িতে আজকের অনুষ্ঠানের মাঙ্গলিক যা আচার তার প্রস্তুতি। রাত ৮টা সাড়ে ৮টা নাগাদ একদল লোক আমার বাড়ির মধ্যে ঢোকে এবং যেখানে মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছিল সেখানে মেয়েদের উপরে এবং ছোট ছেলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমি ওদের আটকাতে গেলে আমার উপরও হামলা করে। বিজয় মজুমদারের ছেলে ভিকি মজুমদার ঘুষি মারতে থাকে। আমার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। তিন চারটে ঘুষি মেরেছে। আমি হাত দিয়ে আটকাতে গেলে আমার ডান হাতের আঙুলে চোট লাগে। পরে ডাক্তার দেখে পরীক্ষা করায়। দেখলাম ওটা ভেঙে গিয়েছে। আমি এবং আমার ছোট ছেলে আহত হয়েছি। আমার মামাতো ভাই বিশ্বজিৎ রায় এবং ভায়রাভাই নির্মল সরকার শারীরিকভাবে হেনস্থার শিকার হয়েছে। মেয়েদেরও ধাক্কাধাক্কি করেছে। থানায় জানাই।”
মূল অভিযুক্তের বান্ধবী পায়েল দে বলেন, “ওনাকে কোনওভাবেই মারধর করা হয়নি। আমরা যখন আসছিলাম রাস্তাঘাটের খুবই খারাপ অবস্থা। ওনাদের বাড়িতে লোক ভর্তি। রাস্তায় সরে দাঁড়াতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ওনারা ইচ্ছা করে সরেননি। গাড়ির লুকিং গ্লাসটা যেহেতু ওনার সোয়েটারে লেগেছে উনি তখন চেচামেচি শুরু করেন। ওনার ছোড়া ঢিলে আমাদের বাড়ির ছেলের মাথা ফেটেছে। আমি বলতে যাওয়ায় বলছেন, ‘তোকে ফাঁকা রাস্তায় পেলে দেখবি কী করব’। অভিরূপ সিনহা, অভিষেক সিনহা, বিশ্বজিৎ রায় জঘন্য ব্যবহার করেছেন। আমি থানাতেও জানিয়েছি।”
আরও পড়ুন: Omicron Variant: স্বাস্থ্য দফতরের হাতে এল ব্রিটেন ফেরত তরুণীর জিনোম সিকোয়েন্সিং রিপোর্ট!