কলকাতা: দোমহনির ট্রেন দুর্ঘটনায় উঠে আসছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। ট্রেনের ইঞ্জিনের রক্ষণাবেক্ষণ কিংবা দেখভালে ত্রুটি ছিল। রেলের প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। গত বৃহস্পতিবার বিকালে, জলপাইগুড়ি থেকে গৌহাটি যাওয়ার পথে ময়নাগুড়ির কাছে বিকানের এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। মৃত্যু হয় ৯ জনের। এই রেল দুর্ঘটনার তদন্ত করছে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি। তাদের প্রাথমিক রির্পোটে রক্ষণাবেক্ষণের গলদের ইঙ্গিত।
কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির তদন্তে জানা যাচ্ছে, ইঞ্জিনের রক্ষণাবেক্ষণে ক্রুটি ছিল। উল্লেখ্য রক্ষণাবেক্ষণের অভিযোগ আগে থেকেই তুলে আসছিলেন ইউনিয়নের সদস্যরা। TV9 বাংলার কাছে সরব হয়েছেন হয়েছেন রেল ইউনিয়নের একাধিক কর্তা ব্যক্তিরা। ইস্টার্ন রেল মেনস ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি অমিত ঘোষ বলেন, “সাধারণ যাত্রীদের জানিয়ে রাখি, রেলের নিজের বলে আর কিছু নেই। না আছে কর্মী, না আছে রক্ষণাবেক্ষণ। রেলের ড্রাইভার, গার্ড, স্টেশনমাস্টার, সিগন্যালম্যানের ডিউটির কোনও শেষ নেই। ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন তাঁরা। লোক নেই। না আছে ট্র্যাক মেইনটেইন করার সঠিক ব্যবস্থা। আসলে লোক নিয়োগ করেনি সরকার। ভোট নিয়োগের কথা ভেবেই লক্ষ লোক নিয়োগের কথা বলেছিল। কিন্তু সবই ধাপ্পাবাজি।”
এই দুর্ঘটনার জন্য রেলের বেহাল পরিকাঠামোকেই দায়ী করেছেন তিনি। অন্যদিকে, নর্থ ফ্রন্টটিয়ার রেলওয়ে মজদুর ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি পরিতোষ পাল বলেন, “যান্ত্রিক ক্রুটির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। রেলমন্ত্রীও প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে সে কথা বলেছেন।”
তবে রেলের পরিকাঠামোর অবস্থা যে বেহাল, সেকথা উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “রেলের ট্র্যাক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব এখন বেসরকারি সংস্থার হাতে দিয়ে দেওয়া হয়। আদৌ সেই কাজ ঠিক মতো হচ্ছে কিনা, তা নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। রেলের গত তিন বছর ধরে কোনও নিয়োগ হচ্ছে না। প্রত্যেক বছর ৪-৫ শতাংশ লোক অবসর নেন। সেক্ষেত্রে সেই ঘাটতি পূরণ করবে কে? ”
রেলের তদন্তের বেহাল পরিকাঠামোর তত্ত্বই উঠে আসছে। তবে তদন্ত এখনও চলছে। রেলের বিরুদ্ধে সরব হন তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীরাও। তাঁদের একাংশ ইতিমধ্যেই অভিযোগ করেছেন, রেলের নিম্নমানের বগিগুলিকেই বাংলার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পিছনে রেলের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন অনেকে।
আরও পড়ুন: NIA Arrest: মাওবাদীদের অর্থ জোগানের অভিযোগ, দক্ষিণ কলকাতা থেকে গ্রেফতার ব্যবসায়ী