কলকাতা: দেউচা পাচামি (Deucha Pachami) প্রকল্প নিয়ে বড় ঘোষণা রাজ্য সরকারের (State Government)। জমিদাতাদের পরিবারের একজনকে কনস্টেবল (Constable) পদে নিয়োগ করা হবে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে সোমবারই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নে এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সেখানেই তিনি বলেন, ৫ হাজার ১০০ জনকে কনস্টেবল পদে নিয়োগ করা হবে। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছে। জুনিয়র কনস্টেবল, সিনিয়র কনস্টেবল দুই পদেই লোক নেওয়া হবে। যার যেমন যোগ্যতা, সেই অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হবে। মূলত দেউচা পাচামি দেওয়ানগঞ্জ হরিণসিঙা কয়লা খনি প্রকল্পের জমিদাতাদের পরিবার থেকে এই চাকরি পাবে।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বীরভূমের মহম্মদবাজার থানা এলাকার দেওয়ানগঞ্জ হরিণসিঙা কোল ব্লক নিয়ে আমরা মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রতি জমিদাতা পরিবারের একজনকে চাকরি দেব। কাউকে সিনিয়র কনস্টেবল, কাউকে জুনিয়র কনস্টেবল করা হবে। কোয়ালিফিকেশন অনুযায়ী করা হবে। ৫১০০ পোস্ট আজ অনুমোদন পেল। ১৩৯ জন জমি দিতে রাজি হয়েছেন।”
একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যদিও প্রথম পর্যায়ে কাজ আমাদের জমিতেই হবে। যারা জমি দিতে রাজি, তাদেরটাই নেওয়া হবে শুধু। তাছাড়া আমরা নেব না। আমাদের হাতে ১ হাজার একরের মতো জমি আছে। আমাদের জমিতেই আমরা কাজটা শুরু করব। তবে স্থানীয় ছেলেমেয়ের সাপোর্ট আমাদের দরকার। তাই নতুন নিয়োগ হবে কনস্টেবল পদে। ৫১০০ কনস্টেবল নেব যাঁরা জমি দিতে চান তাদের থেকে। যারা জমি দেবে তাদের পাট্টাও দেব। জমির বদলে জমি, পাট্টা, ক্ষতিপূরণ সবই থাকবে।”
২০১৯ সালে দিঘায় বাণিজ্য সম্মেলন থেকেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে দেউচা পাচামি প্রকল্পের জন্য ছাড়পত্র এসেছে। ফলে দেউচা পাচামি দেওয়ানগঞ্জ হরিণসিঙা কোল ব্লকে কয়লা উত্তোলন করা যাবে। এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা খনি প্রকল্প হতে চলেছে বলেও জানান তিনি। এখানে মাটির নিচে যে পরিমাণ কয়লা রয়েছে, তা উত্তোলন করা সম্ভব হলে আগামী ১০০ বছর কয়লার অভাব ভুগতে হবে না রাজ্যকে।
প্রাথমিকভাবে সরকারি খাসজমিতে কাজ শুরু করলেও এলাকার লোকজন জমি দিতে চাইলে তাও নেবে রাজ্য। তার জন্য পুনর্বাসন প্যাকেজ, ক্ষতিপূরণ, চাকরির কথাও বলা হয়। সম্প্রতি একাধিকবার দেউচা পাচামির প্রকল্প নিয়ে সেখানকার লোকজনের একটা অংশ বেঁকে বসেন। আদিবাসী অধ্যুষিত এই এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, কয়লা শিল্প হলে তা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। মানুষের শরীরের জন্যও ভয়ঙ্কর হবে। ফলে ভৌগলিক ও সামাজিক পরিবেশ বদলে যাওয়ার আশঙ্কা করেন তাঁরা।