কলকাতা: দিল্লি থেকে ফিরে এসে সংবাদ মাধ্যমে ‘স্পিকটি নট’ দিলীপ ঘোষ। কিন্তু লাগাতার কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। দিল্লি থেকে ফিরে আসার পরে বর্ধমান, মেদিনীপুর, খড়গপুর ব্যারাকপুর, বারাসত, মুর্শিদাবাদে কর্মসূচি করেছেন দিলীপ। সোমবারও মালদহে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি। তাঁর সোমবারের কার্যসূচির তালিকায় রয়েছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জও। যেখানে আবার ১০ জুলাই উপনির্বাচন রয়েছে। সন্ধ্যায় জলপাইগুড়িতে কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। গোটা রাজ্যজুড়ে দিলীপের এভাবে ‘ছড়িয়ে পড়া’ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিজেপির কর্মী সমর্থকদের মধ্যেও প্রশ্ন, তবে কি দল তাঁকে ভিন্ন ভাবে কাজে লাগাতে চাইছে? আবার তাঁর এই চুপচাপ থাকা নিয়েও প্রশ্ন নানা মহলে। দলই কি আপাতত সংবাদমাধ্যম এড়িয়ে কর্মী সংযোগে মন দিতে পরামর্শ দিয়েছে?
বিজেপির অন্দরে কান পাতলে যার সত্যতা মেলে। কেন্দ্রীয় নেতারাই পরামর্শ দিয়েছেন, দল ভাল ফল করেনি। এহেন আবহে রোজ রোজ বিতর্ক বাড়িয়ে কি লাভ? তারপরে থেকেই সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখে কুলুপ এঁটেছেন দিলীপ। তাই কি উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গের সব প্রান্তেই দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করছেন, আড্ডা দিচ্ছেন, গল্প করছেন, মন খুলে কথা বলছেন? আবার টার্গেট, লক্ষ্য পূরণের কথাও শোনা যাচ্ছে দিলীপের মুখে।
খেলা জিততে ক্যারামে ঘুঁটি ফেলার জন্য পকেট টার্গেট করেন খেলোয়াড়রা। দিলীপের জন্যও কি টার্গেট বেধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব? যা পূরণে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) কাছের মানুষটি। জোর আলোচনা চলছে। তবে দিলীপকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা বলছেন প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি কোনও লক্ষ্য পূরণ ছাড়া এভাবে দৌড়ে বেড়াবেন, তা বিশ্বাস করা কষ্টসাধ্য। প্রসঙ্গক্রমে, উঠে আসছে বঙ্গ বিজেপি সভাপতি থাকাকালীন গোটা রাজ্যের বিভিন্ন জেলা চষে ফেলা দিলীপের কথা।
২০১৯-এর লোকসভা ভোটের সময় বিজেপির রাজ্য সভাপতি ছিলেন দিলীপ ঘোষ। তখন এ রাজ্যে বিজেপি সবেমাত্র মাটি তৈরি করছে। অথচ ১৮টি আসন জিতে নেয় তারা। যদিও একুশের ভোটের পর থেকে দিলীপ আর রাজ্য সভাপতি পদে নেই। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোট যখন হল, এ রাজ্যে বিজেপির রমরমা, প্রধান বিরোধী দল তারা। তবু এক ধাক্কায় ১৮ থেকে ১২-এ নেমে এসেছে দল। এমন ফলাফল যে অকল্পনীয়, তা মেনেছেন বিজেপির নেতানেত্রীরাও। এবার সংগঠন সামাল দিতে নতুন করে বিজেপি ময়দানে নামছে বলে খবর। রাজ্য সভাপতি বদলের সম্ভাবনা নিয়েও জল্পনা জোরাল। আর এসবের মাঝেই দিলীপ ঘোষ আবারও নতুনভাবে সংগঠনের কাজে ঝাঁপিয়েছেন। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি নয়া বার্তা নিয়েই দিল্লি থেকে ফিরলেন দিলীপ ঘোষ।