উত্তর ২৪ পরগনা ও কলকাতা: নেতাজি জন্মজয়ন্তী পালনকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ভাটপাড়া। চলে ৭ রাউন্ড গুলি। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশাল পুলিশবাহিনী নামে। ভাটপাড়ার সাংসদ অর্জুন সিংয়ের ছেলে পবন সিং নেতাজি প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করতে গেলেই এই সংঘর্ষ শুরু হয়। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার বিবরণ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফোন করেছেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। পাল্টা, তৃণমূলের পক্ষ থেকে সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh) ও বিধায়ক পবন সিং-এর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ভাটপাড়ার সংঘর্ষ নিয়ে সরব বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder) থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দিলীপ ঘোষও (Dilip Ghsoh)।
দিলীপের প্রতিক্রিয়া:
ভাটপাড়ায় সুভাষ-স্মরণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় রাজ্যকেই নিশানা করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বর্ষীয়ান বিজেপি সাংসদের কথায়, “রাজ্যে আদৌ কোনও গণতন্ত্র রয়েছে? এটা কী ধরনের আচরণ! আমাদের কোনও নেতা কোথাও গেলেই সেখানে বাধা দেওয়া হবে! শুভেন্দুবাবু মালা দিতে গিয়েছেন, তাঁকে বাধা দেওয়া হয়েছে। নেতাই যেতে গিয়েছেন বিরোধের মুখে পড়েছেন। সবসময় কি হাইকোর্ট থেকে অনুমতি আনতে হবে!”
সুকান্তর প্রতিক্রিয়া:
একইভাবে সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সুকান্তর কথায়, “কেউ নেতা হোন, সাংসদ হোন, রাজনীতিক হোন, বা যেই হোন না কেন, তিনি যদি নেতাজির জন্মদিনে তাঁকে সম্মান জানাতে চান, তাহলে সেটা কি অন্যায় হবে? কেন বারবার আমাদের দলের নেতা সাংসদদের বাধা দেওয়া হবে? নেতাজি কি রাজ্যের শাসকদলের একার? আমাদের যেকোনও কর্মসূচিতে কেন বাধা দেওয়া? রাজ্য গণতন্ত্র কোথায়?”
শুভেন্দুর প্রতিক্রিয়া:
ভাটপাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় চুপ করে থাকেননি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর মন্তব্য, “পশ্চিমবাংলায় গণতন্ত্র নেই, একথা আমি আগেও অনেকবার বলেছি। আমাকেও বাধা দিয়েছি। নেতাইয়ে গিয়েছি হাইকোর্টের অনুমোদন নিয়ে। তাতেও আমায় আটকেছে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সন্ত্রাসরাজ চলছে। ভাটপাড়া নতুন কিছু নয়। এর আগেও আমাদের সাংসদের উপর বোমাবাজি করে প্রাণে মারার চেষ্টা হয়েছিল।”
ভাটপাড়ায় সংঘর্ষ
রবিবার সকালে নেতাজি সুভাষচন্দ্রের জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল বিজেপি। সেই অনুষ্ঠানে নেতাজির প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করতে যান ভাটপাড়ার তৃণমূল সাংসদ অর্জুন সিংয়ের ছেলে ভাটপাড়ার বিজেপি বিধায়ক পবন সিং। মালা দিয়ে বেরোনোর সময় তাঁর পিছনে তিন-চারজন ধাওয়া করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন অর্জুন সিং। তারপরই অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে ধস্তাধস্তি লেগে যায়। বোমাবাজিও শুরু হয়। অর্জুন সিংকে ঘিরে ইট বৃষ্টির অভিযোগও ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। বিজেপি সাংসদকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি ও বোমাবাজির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায় দলীয় কর্মীরা।
বিজেপির অভিযোগ, পুলিশ এই ঘটনায় নিষ্ক্রিয় ছিল। পরিস্থিতি খারাপ দেখে অর্জুন সিংয়ের নিরাপত্তা রক্ষীরা বন্দুক বের করে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। শেষে শূন্যে পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায় সিআইএসএফ। নেতাজি জয়ন্তীতে রীতিমত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ভাটপাড়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস চালায় পুলিশ। যদিও এই ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
আরও পড়ুন: ‘পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু একই ক্যারেক্টার…নিজেদের সবসময় আলাদা মনে করেন!’