Dilip Ghosh on IAS Cadre Rules: ‘পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু একই ক্যারেক্টার…নিজেদের সবসময় আলাদা মনে করেন!’
Kolkata: সম্প্রতি, আইএএস ক্যাডার সংশোধনী প্রস্তাবকে কেন্দ্র করেও কেন্দ্র ও অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত হয়েছে।
কলকাতা: ট্যাবলো বিতর্ক থেকে আইএএস ক্যাডার সংশোধনী প্রস্তাব। কেন্দ্রের সঙ্গে অ-বিজেপি রাজ্যগুলির বিরোধ থামছে না। সম্প্রতি, ক্যাডার সংশোধনী প্রস্তাবের তীব্র প্রতিবাদ করেছে বাংলা। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) প্রধানমন্ত্রীকে এই নিয়ে দুটি চিঠি লিখেছেন। কেন্দ্রের বিরোধিতা করেছে তামিলনাড়ু-সহ অন্য একাধিক রাজ্যও। প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলো অনুমোদনকে কেন্দ্র করেও কম জলঘোলা হয়নি। এ বার, সেই নিয়েই মুখ খুললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
দিলীপ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ আর তামিলনাড়ু একই ক্যারেক্টার! সব বিষয়ে নিজেদের পৃথক মনে করে! টাকা চাওয়ার বেলায় প্রধানমন্ত্রী, আর সে প্রয়োজন মিটলেই ভোল পাল্টে যায়! ওরা নিজেদের পৃথক রাষ্ট্র মনে করে!”
বস্তুত, প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলো বিতর্ক বা আইএএস ক্যাডার সংশোধনী, কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে সংঘাত অব্যাহত। প্রজাতন্ত্র দিবসে যে তিনটি ট্যাবলো বাতিল হয়েছিল, সেই তালিকায় ছিল বাংলা, তামিলনাড়ু ও কেরল। কেন বাতিল করা হল ট্যাবলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-কে চিঠি লিখেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজির ট্যাবলো কেন বাদ তা নিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দেন মমতা। কিন্তু চিঁড়ে ভেজেনি। বাতিল হয় ট্য়াবলো।
এখানেই বিরোধের শেষ নয়, সম্প্রতি, আইএএস ক্যাডার সংশোধনী প্রস্তাবকে কেন্দ্র করেও কেন্দ্র ও অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত হয়েছে। সরব পশ্চিমবঙ্গ। ইতিমধ্যে দু’দুটি খোলা চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে পাঠিয়ে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগও করেন, এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। কী আছে কেন্দ্রের এই খসড়া প্রস্তাবে? কেনই বা কেন্দ্র তৎপর হচ্ছে আইএএস আইন সংশোধন করতে?
১৯৫৪-র আইএএস (ক্যাডার) আইনের ৬(১)ধারা অনুযায়ী রাজ্যের অধীনে থাকা কোনও ক্যাডার অফিসারকে ডেপুটেশন চাইলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অনুমতি বাধ্যতামূলকভাবে নিতে হবে। রাজ্য ও কেন্দ্রের আলোচনার ভিত্তিতে সেই আধিকারিককে বদলি করা যাবে। তবে আধিকারিকের ইচ্ছাকেও যথেষ্ট প্রাধান্য দিতে হবে।
যদি বিরুদ্ধমত তৈরি হয়, তবে আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে। অর্থাৎ কেন্দ্র চাইলেই কোনও আধিকারিককে তলব করতে পারবে না, সেক্ষেত্রে রাজ্যের অনুমতি প্রয়োজন।
কিন্তু, এতে সমস্যা কোথায়? কেন বদল চাইছে কেন্দ্র? মোদী সরকারের যুক্তি, কেন্দ্রের হাতে আইএএস ক্যাডার যথাযথ নেই। ফলে ব্যাহত হচ্ছে প্রশাসনিক কাজ।
ক্যাডারবিধি সংশোধন হলে বদলির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে কেন্দ্রের উপর। রাজ্য নিজের ইচ্ছে মতো ভিটো প্রয়োগ করে কোনও আধিকারিককে আটকাতে পারবে না। যদি, কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে কোনও মতান্তর হয়, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রই। অন্তত, সংশোধনী আইনে সেই ক্ষমতা থাকবে কেন্দ্রের হাতে।
পাশাপাশি, কেন্দ্র যখনই আধিকারিককে তলব করে, রাজ্যের অনিচ্ছা সত্ত্বেও চলে আসতে হবে সেই আধিকারিককে। অর্থাৎ, সংশোধনী আইনে রাজ্যের অধিকার খর্ব হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। ইতিমধ্যেই, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ওড়িশা, বিহার, মেঘালয়, মধ্য প্রদেশ প্রস্তাবিত খসড়ার বিরোধিতা করে জানিয়েছে, বর্তমান আইন পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই। সূত্রের খবর, রাজ্যের তরফে সহযোগিতা না মিললে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
আরও পড়ুন: অমিত শাহকে ফোন করে ‘নালিশ’ অর্জুনের, ভাটপাড়ায় গুলিসংঘর্ষে বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে দায়ের FIR