কলকাতা: একদিন আগেই লাইভে এসে বিজেপি রাজ্য সভাপতিকে কটূ কথা শুনিয়েছিলেন সৌমিত্র খাঁ। ২৪ ঘণ্টার মাথায় কড়ায়-গণ্ডায় সেই আক্রমণ ফিরিয়ে দিলেন দিলীপ ঘোষ। বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদকে ‘জোকার, পাগল’ বলে তুলোধোনা করলেন রাজ্য বিজেপির মুখিয়া। সঙ্গে এটাও জানিয়ে দিলেন, বেশি ‘পাগলামি’ করলে তা কোনওভাবেই দল মেনে নেবে না। বয়স বাড়লেও সৌমিত্রর এখনও ‘ম্যাচিওরিটি’ আসেনি বলেও এ দিন জোর খোঁচা দিয়েছেন দিলীপবাবু।
বুধের দুপুরে যুব মোর্চা সভাপতি পদ থেকে সৌমিত্রর ফেসবুকে পদত্যাগ, ও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফেসবুকেই পদত্যাগ প্রত্যাহার, এই দুই ঘটনা রীতিমতো সাড়া ফেলে দেয় রাজ্য রাজনীতিতে। তবে এর মাঝে একবার ফেসবুক লাইভে এসে শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষ সম্পর্কে বেশ কিছু কড়া মন্তব্য করেন সৌমিত্র। সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠলে এ দিন মেদিনীপুরের সাংসদ তীর্যক সুরে বলেন, “যুব নেতা তো…এই ধরনের অর্বাচিন কাজ করাটা খুব স্বাভাবিক। বিজেপিতে এসেছেন, বুঝতে সময় লাগছে, বুঝে যাবেন। প্রথম প্রথম ছোটদের দোষ মাফ করে দেই আমরা।”
কিন্তু এরপরই গলার স্বর ভারী করে কিছুটা হুঁশিয়ারির সুরে দিলীপ বলেন, “কারোর বয়সের সঙ্গে যদি ম্যাচিওরিটি (পরিপক্কতা) না আসে, তারও ব্যবস্থা দলে আছে। সব ব্যবস্থা হবে। পাগলামির একটা সীমা থাকে। রাজনীতিতে জোকারদের গুরুত্ব থাকে সবসময়। কিন্তু নিজের ওজন কমানোটা ঠিক নয়। তাঁকে দল যে মর্যাদা এবং সম্মান দিয়েছে, তা রক্ষা করা উচিত।” এরপরই দিলীপের সংযোজন, “দলের জন্য কেউ অপরিহার্য নয়। (এরকম চলতে থাকলে) দল ছেড়ে দেবে, সমাজও একদিন তাঁকে ছেড়ে দেবে। অনেক নেতাই এভাবে হারিয়ে গিয়েছেন।”
আরও পড়ুন: Fake Vaccine: দেবাঞ্জনের ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে বড় মোড়, তদন্তে এ বার কেন্দ্রীয় সংস্থা
সৌমিত্র নিজে অবশ্য গত কালকের ঘটনার পর থেকে এখনও পর্যন্ত মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন। ২২ ঘণ্টা আগে তাঁর পদত্যাগ প্রত্যাহারের বিজ্ঞপ্তি বাদে আর কোনও আপডেট নেই ফেসবুকে। সংবাদ মাধ্যমের থেকেও নিজেকে দূরেই সরিয়ে রেখেছেন। তবে বুধবার লাইভে এসে বিরোধী দলনেতা-সহ রাজ্য সভাপতিতে যে ভাষায় তিনি কটাক্ষ করেন, বিজেপিতে থেকে তেমন ভাষার প্রয়োগ একপ্রকার নজিরবিহীন বলা চলে।
সৌমিত্রকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “এখন যিনি বিরোধী দলনেতা হয়েছেন, তিনি পুরো ফোকাসটা নিজের দিকে নিয়ে চলে গিয়েছেন। বিজেপিতে এসেছি, কোনও লোভ নিয়ে আসিনি। কিন্তু দুঃখের বিষয় এটাই যে, তিনি বারবার দিল্লি গিয়ে নেতাদের ভুল বুঝিয়ে দেখাচ্ছেন যে তিনি বড় নেতা। তৃণমূলে থাকতেও তিনি দেখিয়েছিলেন তিনি বিরাট বড় নেতা।” এরপরই দিলীপ ঘোষের উদ্দেশ্যে ব্যঙ্গাত্মক সুরে সৌমিত্র বলেছিলেন, “আমাদের মাননীয় সভাপতিকে বললেও তিনি অর্ধেকটা বোঝেন, অর্ধেকটা বোঝেন না। বাংলায় বিজেপি যেভাবে চলছে, তাতে ভাল কিছু হবে না।”
আরও পড়ুন: জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে সৌরভের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী, হলুদ গোলাপ উপহার মমতার