কলকাতা: ভোটের প্রচারের শেষ বেলায় কার্যত ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় যদুবাবুর বাজার। দুই পক্ষের ধস্তাধস্তিতে জখম দুই বিজেপি কর্মীকে এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ভরতি করা হয়েছিল। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকায় তাঁদের দু’জনকেই বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
জখম দুই বিজেপি কর্মীর নাম মুকুন্দ ঝাঁ এবং ভাগ্য নারায়ণ সিং। আজ দুপুরে তাঁদের এসএসকেএম থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে বাইপাসের ধারে ওই বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আজ সকালে ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের হয়ে নির্বাচনী প্রচারে এসেছিলেন দিলীপ ঘোষ। আর সেখানেই শুরু হল গন্ডগোল। তুলকালাম হয় যদুবাবুর বাজার এলাকা। প্রচারে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষকে। একদল বিক্ষুব্ধ তাঁকে ঘিরে ধরে স্লোগান দিতে শুরু করে। বিজেপির অভিযোগ, প্রত্যেকে তৃণমূলের লোক। আর সেই সময়েই আক্রান্ত হন দুই বিজেপি কর্মী।
উপনির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট এলাকায় সামলায় কমিশন। একই সঙ্গে রাজ্যের তরফেও আইনশৃঙ্খলার বিভিন্ন দিকে নজর রাখা হয়। ভবানীপুরের মতো ছোট একটি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোট। তবু তার জন্য ১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু তার পরও দেখা গেল, নির্বাচনের আগে শেষ প্রচারের দিন বিজেপির ঘোষিত কর্মসূচিতে এই বিশৃঙ্খলা। আর ঘটনাস্থলে কোথাও নেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। নেই পুলিশও।
কোনও রাজনৈতিক অশান্তির খবর এলে পুলিশকে কড়া ভূমিকা নিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা যাতে কার্যকরী হয়, সেই বিষয়েও পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছিল মুখ্যসচিবের তরফে। পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছিল কলকাতা পুলিশকেও। অথচ এত সব কিছুর পরেও সেই একই ছবি বাংলার ভোটে। অশান্তি। এমনকী যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল, তাদেরও কাউকে দেখা যায়নি আজ ঘটনার সময়ে।
এদিকে আক্রান্ত দুই বিজেপি কর্মীকে দেখতে দুপুরেই এসএসকেএমে এসেছিলেন বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। হাসপাতাল থেকে বেরোনোর সময় আইন – শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন সুকান্ত বাবু বলেন,”পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। এর মধ্যে গণতন্ত্রের যে উৎসব, ভোট তা হওয়া আদৌ সম্ভব কি না আমি সন্দিহান। সন্ধ্যাবেলায় আমাদের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে যাবে। তারা কথা বলবে। একজন সর্বভারতীয় সহ সভাপতির উপর যদি এ ধরনের আক্রমণ হতে পারে, কোন সাধারণ মানুষটা সাহস করবেন ভোট দিতে যাওয়ার?”
আজ সকালে দিলীপ বাবুর প্রচারে দুই পক্ষের মধ্যে যে সংঘর্ষ হয়, তাতে রঞ্জিত সিং নামে এক তৃণমূল কর্মীও জখম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তিনিও এসএসকেএম হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন। তৃণমূলের অভিযোগ, দিলীপ ঘোষের নিরাপত্তারক্ষীরা বন্দুকের বাট দিয়ে ওই কর্মীর বুকে আঘাত করেছে। ওই কর্মী মাথাতেও আঘাত পেয়েছে। অচৈতন্য অবস্থায় তাকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : Dilip Ghosh: দিলীপের উপর ‘হামলা’, কোথায় গেল ১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী! কেন ছিল না পুলিশ?