Bratya Basu: মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার ‘ভাবনা’ রাজ্যের, কী বললেন শিক্ষামন্ত্রী?
Bratya Basu: "চ্যান্সেলর পদে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে আসা যায় কিনা, সেটা দেখা হবে। এরকম করলে আমরা ভাববো, কিছু দিনের জন্য ওঁর বদলে মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যান্সেলর করা যায় কি না!"
কলকাতা: রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা ভয়াবহ। উপাচার্য নিয়োগে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিস্ফোরক টুইট করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এবার তাঁর পাল্টা দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বললেন, “এ রাজ্যে শিক্ষার অবস্থা ভয়াবহই হবে যদি এরকম চ্যান্সেলর থাকেন। ওঁর মত চ্যান্সেলর থাকা সত্ত্বেও শিক্ষাব্যবস্থা ভালোই রয়েছে রাজ্যে।”
পাল্টা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “ওঁ সহযোগিতা করেন না। ফাইল আটকে রাখেন।” কটাক্ষ করেন বলেন, “ওঁ শিশ দেন, ট্যুইট করেন, বিবৃতি দেন।”
শিক্ষাব্যবস্থায় রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। শুক্রবার সকালে বিষয়টি নিয়ে টুইট করেছেন তিনি। সেখানেই এই অভিযোগ করেছেন। রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘মমতা সরকারের আমলে শিক্ষাব্যবস্থায় চিত্রটা ভয়াবহ। রাজ্যের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আচার্য এবং উপাচার্য রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকে এলেন না। রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থায় সংগঠন বিস্তারের চেষ্টা চলছে।’ সেই প্রসঙ্গে পাল্টা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “চ্যান্সেলর পদে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে আসা যায় কিনা, সেটা দেখা হবে। এরকম করলে আমরা ভাববো, কিছু দিনের জন্য ওঁর বদলে মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যান্সেলর করা যায় কি না!”
সমস্যার সূত্রপাত একটি বৈঠক নিয়ে। চলতি মাসের ২০ তারিখ রাজ্যপাল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ জন উপাচার্য ও আচার্যকে ডাকেন একটি বৈঠকে যোগদানের জন্য। শিক্ষার মানোন্নয়ন বিষয়ক আলোচনার জন্য ডেকেছিলেন তিনি। উপাচার্য ও আচার্যরা সম্মিলিতভাবে একটি চিঠি করেন রাজ্যপালকে। তাঁরা জানিয়েছিলেন, ওমিক্রনের কারণে তাঁরা এই মুহূর্তে রাজভবনে যেতে পারছেন না। রাজ্যপাল তাঁর প্রত্যুত্তরে বলেন. কোভিডের কথা মাথায় রেখে রাজভবনে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে। তাতে বৈঠকে যোগদানের বিষয়ে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। ২৩ তারিখ আসার কথা বলেন।
কেন আচার্য ও উপাচার্যরা আসছেন না, তা ক্ষোভ উগরে একটি চিঠি লেখেন রাজ্যপাল। সেটিও টুইট করেন তিনি। গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই সাড়ে তিনটের সময়ে রাজভবনে যাওয়ার কথা ছিল উপাচার্য ও আচার্যদের। কিন্তু দেখা যায়, তাঁরা কেউই রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যাননি।
রাজভবনে ফাঁকা আসনের ছবি তুলে ধরে পাল্টা টুইট করেন রাজ্যপাল। তিনি টুইটে লেখেন, এর আগে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের তিনি ডেকেছিলেন, তাঁরাও কেউ আসেননি। উপাচার্য নিয়োগে আচার্যকে অবহেলা করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যপাল হচ্ছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটর। ভিজিটর হিসাবে তাঁর বিশেষ ক্ষমতা নেই, এটা ঠিক কথা। কিন্তু ভিজিটর হিসাবে তিনি যদি উপাচার্যদের সঙ্গে দেখা করতে চান, তাহলে যেতে অসুবিধা কোথায়? এটা মনে রাখতে হবে রাজ্যপাল হচ্ছেন রাজ্যের প্রশাসনিক মাথা। তিনি যদি একটু কথা বলতে চান, দেখা করতে চান, তাহলে যেতে কোনও সমস্যা হওয়ার কোনও কথা নয়। তিনি তো কোনও নির্দেশ দিচ্ছেন না। এর আগেও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের ডাকেন, তাঁরাও যাননি। এটা শিষ্টাচারের অভাব দেখা দিচ্ছে।”
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, “বাংলায় এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক, যে একটা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চলছে। সরকারি কাজে, প্রশাসনিক কাজে, শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চলছে। উপাচার্যরা আতঙ্কিত হয়েই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করছেন না। শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনীতিকে মেলালে চলবে না। “
আরও পড়ুন: Jagdeep Dhankhar: আচার্যকে না জানিয়েই উপাচার্য নিয়োগ কীভাবে? রাজ্যের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট রাজ্যপাল