Burrabazar Fire: যতুগৃহ ঋতুরাজ হোটেল আসলে নিয়ম ভাঙার আতুঁড়ঘর, আটক ম্যানেজার
Burrabazar Fire: ১৯৯৩ সালে ৬ নম্বর মদনমোহন বর্মন লেনে তৈরি হয় এই হোটেল।প্রথমে চারতলা ছিল। তারপর সেই হোটেলের উপরে আরো দুই তলা করা হয়। কিন্তু গত কয়েক বছরে হোটেলে বেশ কিছু অংশ পুরসভার অনুমোদন ছাড়াই সম্প্রসারণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

কলকাতা: বড়বাজারের মেছুয়া বাজারে হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যুমিছিল! যতুগৃহ ঋতুরাজ হোটেল! প্রাণ চলে গিয়েছে ১৪ জনের। হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে একাধিক গাফিলতির অভিযোগ। ইতিমধ্যেই হোটেলের ম্যানেজারকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। মালিক পলাতক।
জানা গিয়েছে, ১৯৯৩ সালে ৬ নম্বর মদনমোহন বর্মন লেনে তৈরি হয় এই হোটেল।প্রথমে চারতলা ছিল। তারপর সেই হোটেলের উপরে আরো দুই তলা করা হয়। কিন্তু গত কয়েক বছরে হোটেলে বেশ কিছু অংশ পুরসভার অনুমোদন ছাড়াই সম্প্রসারণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
হোটেলের দোতলায় পানশালা তৈরির কাজ শুরু হয় গত তিন মাস আগে থেকে। সেখানে ছিল রেস্তোরাঁ। সেটিকেই পানশালায় রূপান্তরিত করে যাবতীয় নির্মাণ বদলে কাজ শুরু করেন হোটেলের মালিক। অভিযোগ, এলাকার মানুষের আপত্তি থাকলেও তা ধর্তব্যের মধ্যে আনেননি হোটেলের মালিক। আশপাশে রয়েছে স্কুল, ধর্মশালা, এমনকি মন্দির। কিন্তু তারপরও পানশালা কীভাবে তৈরি হয়, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন এলাকার বাসিন্দারা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, অর্থের দাপটে একের পর এক বেআইনি অংশ এই হোটেলে তৈরি করা হয়েছে। এই হোটেলে আবার রান্নাঘর ভেঙে তৈরি হচ্ছিল পানশালা, অভিযোগ, সেটাও বেআইনিভাবেই। পানশালা তৈরি করতে গিয়ে দোতলার যাবতীয় জানালা এবং দরজা ভেঙে, সেখানে ইটের গাঁথনি করা হয়েছিল সেখানে। আর মঙ্গলবার রাতে যখন আগুন লাগে, তখন হোটেলের এমার্জেন্সি গেট দিয়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু এমার্জেন্সি গেটের বাইরেও মজুত করা ছিল নির্মাণ সামগ্রী। নির্মাণ সামগ্রী স্তূপাকার করে রাখা ভিতর দিক থেকে এমার্জেন্সি দরজার সামনে।
যে দরজা খোলা থাকলে বা নির্মাণ সামগ্রী রেখে দেওয়া হলে, এই প্রাণহানির ঘটনা অনেকটাই এড়ানো যেতে বলেই মনে করছেন নির্মাণ বিশেষজ্ঞরা। কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই হোটেলের ছাদের উপরে প্রায় চার থেকে পাঁচটি বেআইনিভাবে ঘর তৈরি করা হয়েছে।
এমনকি আরও অভিযোগ, হোটেলের ভিতরে এক একটি ঘরের পরিধি বাড়ানো হয়েছে তাও কোনওরকম অনুমোদিত নকশা ছাড়াই। দমকল দফতর সূত্রে খবর, অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র কার্যত অকেজ ছিল।
দমকল আধিকারিক জানিয়েছেন, একাধিক অগ্নি নির্বাপণ সিলিন্ডার উদ্ধার হয়েছে। যেগুলি মেয়াদ উত্তীর্ণ। অর্থাৎ এই ধরনের হোটেলের ক্ষেত্রে, যে ফায়ার অডিট প্রয়োজন হয়, সেটাও দীর্ঘ সময় করা হয়নি। ফায়ার স্প্রিংকলার বেশ কয়েকটি অংশে ছিলই না। যেখানে হোটেলের প্রতিটি কোণে কোণে এই অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র থাকা প্রয়োজন।
এত বড় হোটেল একাধিক বেআইনি অংশ নির্মাণ করেও নিজের ব্যবসা বাড়িয়েছিল বছরের পর বছর। কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ সূত্রের খবর, হোটেলের ভিতরে দুটি ঘর ভেঙে একটি ঘর করা হয়েছে। এই ধরনের ছবি একাধিক ঘরের ক্ষেত্রেই পাওয়া গিয়েছে। দোতলায় একটি ছোট পানশালা ছিল। সেই পানশালার পরিধি বৃদ্ধি করা হয় এবং ডান্সবার তৈরি করা হচ্ছিল। যা আইন বহির্ভূত বলেই পুরসভার তরফে জানানো হলো।
কলকাতা পুরসভার সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ১৯৮০ সালের পর এখানে একটি গ্যারেজ ছিল। সেই গ্যারেজে অগ্নিকাণ্ডের পর গ্যারেজের মালিক বর্তমানে এই হোটেলের মালিকের বাবাকে জায়গাটি বিক্রি করে দিয়ে চলে যান। তারপর এখানে হোটেল তৈরি হয়।
