Calcutta High Court: বিষাক্ত রক্তে মৃত্যু হয়েছিল মায়ের! সেদিনের সেই কিশোর ছেলে আজ আইনজীবী, ১৫ বছর পর বিচার চেয়ে হাইকোর্টে প্রাঞ্জল
Calcutta High Court: তখন ওই মহিলার ছেলে প্রাঞ্জলের বয়স ছিল মাত্র ১৬। ওই ঘটনার পর কেটে গিয়েছে ১৫ বছর। চোখের সামনে মায়ের মৃত্যু দেখা সেই ছেলে আজ আইনজীবী।

কলকাতা: ১৬ বছর বয়সে মাকে হারিয়েছিলেন প্রাঞ্জল। মায়ের শরীরে ঢুকে গিয়েছিল বিষাক্ত রক্ত! সময় থেমে থাকেনি। পড়াশোনা করে সেই ছেলে আজ আইনজীবী হয়েছেন। মায়ের মৃত্যুর বিচার চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ তিনি।
২০১০ সালে বাগুইআটির বাসিন্দা সীমা পাল এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বছর ৪৩-এর ওই মহিলা স্ত্রীরোগজনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন। ওই বছরের ১৭ এপ্রিল প্রথমে সীমাকে পরীক্ষা করেন এক চিকিৎসক। তার ঠিক ছ’দিন পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন ছিল তাঁর। আর সেইজন্য রক্তের প্রয়োজন বলে জানানো হয় হাসপাতালের তরফে।
অভিযোগ, মোট পাঁচ বোতল রক্ত দেওয়া হয় সীমাকে। শেষ বোতলের রক্ত দেওয়ার পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। তাঁর স্বামী ওই হাসপাতাল থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে চিকিৎসক তাঁকে অনুমতি দেননি বলেও অভিযোগ। এই ঘটনার ঠিক পরের দিনই মৃত্যু হয় সীমার।
তখন ওই মহিলার ছেলে প্রাঞ্জলের বয়স ছিল মাত্র ১৬। ওই ঘটনার পর কেটে গিয়েছে ১৫ বছর। চোখের সামনে মায়ের মৃত্যু দেখা সেই ছেলে আজ আইনজীবী।
ঘটনার দু বছর পর ২০১২ সালে ওই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে রাজ্য কনজিউমার ফোরামের দ্বারস্থ হয়েছিল মামলাকারী। ফোরামে মামলা চলার সময় চিকিৎসক স্বীকার করে নিয়েছিলেন যে পাঁচ বোতল রক্ত অস্ত্রোপচারের আগের দিন নিয়ে আসা হয়। দু বোতল ব্যবহার করা হলেও বাকি তিন বোতল ওই ওয়ার্ডের ফ্রিজে সংরক্ষণ করেই রাখা হয়।
নিয়ম অনুসারে লাইসেন্স ছাড়া রক্ত সংরক্ষণ করা যায় না। নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ না করলে ওই রক্ত বিষাক্ত হয়ে যেতে পারে। আর এ ক্ষেত্রে পরের দিন সেই রক্তই দেওয়া হয় সীমাকে। এরপরই চিকিৎসককে আট লক্ষ টাকা ও নার্সিংহোমকে চার লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয় ফোরাম।
সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ন্যাশনাল কমিশনের দ্বারস্থ হয় পরিবার। সেখানে হাসপাতালকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেয় কমিশন। আজ এত বছর বাদে মায়ের মৃত্যুর কড়া সাজা চায় সেই মহিলার ছেলে তথা আইজীবী প্রাঞ্জল।
তাঁদের হয়ে মামলা করছেন আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী। তিনি জানান, কলকাতা হাইকোর্টে প্রায় এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়েছে। প্রাঞ্জলের কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, মাত্র ৪৩ বছর বয়সে তাঁর মায়ের মৃত্যু। তাই পরিবার চায় নজিরহীন শাস্তি। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হীরন্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চে হবে সেই মামলার শুনানি।
