Calcutta High Court: ‘বাকস্বাধীনতা মানেই যা কিছু বলা যায়?’, শর্মিষ্ঠার জামিনের আবেদনে বলল হাইকোর্ট
Calcutta High Court: এদিন শুনানির সময় বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ভারতবর্ষের সংবিধানের কথা মাথায় রেখে যেকোনও মন্তব্য করার আগে প্রত্যেককে ভাবতে হবে, ভারত বৈচিত্র্যময় দেশ। এই মন্তব্য দেশের মানুষের একাংশকে আঘাত দিয়েছে।

কলকাতা: ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ তাঁকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন জানিয়ে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার শর্মিষ্ঠা পানোলি। কিন্তু, স্যোশাল মিডিয়ায় মন্তব্য করা শর্মিষ্ঠাকে এখনই জামিন নয় বলে জানাল হাইকোর্ট। পুলিশের কাছে কেস ডায়েরি চেয়ে পাঠালেন বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়। আগামী ৫ জুন ফের মামলার শুনানি।
বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের অবকাশকালীন বেঞ্চে এদিন বছর বাইশের আইনের ছাত্রী শর্মিষ্ঠার আবেদনের শুনানি হয়। বিচারপতি বলেন, শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে গার্ডেনরিচ থানার মামলাকে মুখ্য ধরতে হবে। বাকি তিনটি মামলায় স্থগিতাদেশ দিলেন। কোনও নতুন মামলা রুজু করা যাবে না বলেও নির্দেশ দিলেন বিচারপতি। এদিন শুনানির সময় বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ভারতবর্ষের সংবিধানের কথা মাথায় রেখে যেকোনও মন্তব্য করার আগে প্রত্যেককে ভাবতে হবে, ভারত বৈচিত্র্যময় দেশ। এই মন্তব্য দেশের মানুষের একাংশকে আঘাত দিয়েছে।
মামলাকারীর আইনজীবী ডিকে সিং বলেন, গত ৭ মে ইনস্টাগ্রাম ভিডিয়ো মন্তব্য করেন শর্মিষ্ঠা। FIR হয় ১৫ মে। ১৭ মে ওয়ারেন্ট জারি হয়। কোনও নোটিস দেওয়া হয়নি। আদৌ সত্যি কি না সেটা দেখা হয়নি। বাড়ির সামনে লোকজন জড়ো হয়ে হুমকি দিতে শুরু করে। পুলিশের কাছে সুরক্ষা চাওয়া হলেও দেওয়া হয়নি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, শর্মিষ্ঠা কি সন্ত্রাসবাদী? আদালতে তিনি সওয়াল করেন, গ্রেফতার অনৈতিক। FIR খারিজ করতে হবে। বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, বাকস্বাধীনতা আছে মানেই যা খুশি মন্তব্য করা যায় কি? বাকস্বাধীনতা মানেই আপনি কাউকে আঘাত করতে পারেন না।
রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নোটিস দেওয়ার জন্য বাড়িতে যাওয়া হয়। কিন্তু বাড়িতে কেউ না থাকায় নোটিস দেওয়া যায়নি। নিম্ন আদালতে বিচারক তাঁর জামিন নাকচ করেছেন। বিচারপতি তখন জানতে চান, ওই ছাত্রীকে কি আর জেলে রাখার প্রয়োজন আছে? তাঁর বিরুদ্ধে কটি মামলা দেওয়া হয়েছে? রাজ্যের আইনজীবী বলেন, মোট চারটি মামলা। শর্মিষ্ঠাকে রাখার দরকার আছে বলেও সওয়াল করেন কল্যাণ।
এদিন আদালতেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন শর্মিষ্ঠার আইনজীবী। তিনি বিচারপতিকে অভিযোগ করে বলেন, আদালতের মধ্যে আইনজীবীকে এভাবে হেনস্থা করা হলে ওই ছাত্রীর পরিবারকে কীভাবে হেনস্থা করা করা হয়েছে তা সহজেই অনুমেয়। দুই পক্ষের সওয়াল শেষে শর্মিষ্ঠা আবেদনের পরবর্তী শুনানি আগামী ৫ জুন হবে বলে নির্দেশ দেন বিচারপতি। আপাতত নিম্ন আদালতের নির্দেশে আগামী ১৩ জুন পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে থাকতে হচ্ছে পুনের এই আইনের ছাত্রীকে।

