কলকাতা: বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে তাঁর প্রাপ্য নিরাপত্তা দিতেই হবে রাজ্য সরকারকে। পুরোনা একটি মামলার শুনানি করতে গিয়ে সোমবার এই কথাই জানাল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্য সরকারকে শুভেন্দুর প্রাপ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ২০০৭ সালের একটি মামলার প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে।
২০০৭ সালে তখন সদ্য তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই সময় মেদিনীপুরে একাধিকবার তাঁর প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু। বিচারপতি দিপঙ্কর দত্ত রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন, শুভেন্দুর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। সেই মতো রাজ্যের পক্ষ থেকেও নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়।
কিন্তু চলতি বছর বিধানসভা ভোটের কয়েকমাস বাকি থাকতে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে সেই মেদিনীপুরের মাটিতেই বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপর রাজ্যের তরফে দেওয়া নিরাপত্তার পরিমাণও ক্রমশ কমতে থাকে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা এসে পৌঁছয় শুভেন্দুর জন্য। কিন্তু এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাওয়ার সময় রাজ্যের পক্ষ থেকে যে নিরাপত্তা দেওয়া হয়ে থাকে, তা তুলে নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে ফের আদালতে হাজির হন শুভেন্দু। সেই মতো রাজ্য সরকারকে তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলে আদালত।
কিন্তু আদালতের নির্দেশের পরও রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। সেই মর্মে প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আরেকটি মামলা করেন শুভেন্দু। সোমবার ২০০৭ সালের মামলাটি বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাসে উঠলে ফের শুভেন্দুর জন্য নিরাপত্তা চান তাঁর আইনজীবী।
সবদিক খতিয়ে দেখে বিচারপতি জানান, শুভেন্দু অধিকারীর প্রাপ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাজ্য তথা জেলা প্রশাসনকে করতেই হবে। আদালতের নির্দেশ, শুভেন্দুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সিএপিএফ জওয়ানরা রাজ্যের কাছে যা আর্জি জানাবে, সেটাই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করতে হবে। আদালতের আজকের রায় শুভেন্দু অধিকারীর জন্য একপ্রকার বড় জয় বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
উল্লেখ্য, এর আগে কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের মামলাতেও একই ভাবে জয় পেয়েছিলেন শুভেন্দু। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে স্পেশাল অডিটের দাবি জানানো হয়েছিল। কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কে আর্থিক দুর্নীতির ঘটনায় চেয়ারম্যান শুভেন্দু অধিকারী ও সৌমেন্দু অধিকারীর নাম জড়িয়ে গিয়েছিল। যা নিয়ে স্পেশাল অডিটের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল অর্থ দফতরের পক্ষ থেকে। কিন্তু বিচারপতি শম্পা সরকারের সিঙ্গেল বেঞ্চে মামলাটি উঠলে স্পেশাল অডিটের নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করা হয়। অর্থ দফতরের নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করে শুক্রবার বিচারপতি শম্পা সরকার জানান, আপাতত হিসেব-নিকেশের আলাদা করে অডিটের প্রয়োজন নেই। আরও পড়ুন: বিজেপির ‘পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও’ কর্মসূচি ঘিরে ধুন্ধুমার, দিলীপ ঘোষকে ধরে টানাহ্যাঁচড়া পুলিশের