অপারেশন টেবিলে হৃদযন্ত্র স্তব্ধ রোগীর! ‘মৃত’ দেহে প্রাণ ফেরালেন মেডিক্যালের চিকিৎসকরা
Calcutta Medical College: বিরল অস্ত্রোপচারে সাফল্য। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন রোগী। গর্বিত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষক-চিকিত্সক থেকে কর্মী, সকলেই।
রোজ কত কী ঘটে যাহা তাহা! তা বলে এমন ঘটনা অতি সম্প্রতি কেন অতীতেও খুব একটা ঘটেছে বলে মনে করতে পারছেন না কেউই। অপারেশন টেবিলে হৃদযন্ত্র স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল রোগীর। কলকাতা মেডিক্যালের চিকিত্সকদের তত্পরতায় ফের বেঁচে ওঠেন তিনি। পরে অস্ত্রোপচারও হয়। গলায় ফুটো করে কৃত্রিম শ্বাসনালীর সাহায্যে বেশ কিছুদিন চিকিৎসাধীন রাখা হয় ওই বৃদ্ধকে। মেডিক্যালের মিরাক্যালে এখন সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিনি।
মুখে বিশাল টিউমার নিয়ে ঘুরছিলেন কাঁথির কাপাসদা গ্রামের বাসিন্দা বিনোদ বেরা। কোভিড আবহে ফিরিয়ে দেয় এইমস-ও। শেষমেশ চ্যালেঞ্জটা নেয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সার্জারি বিভাগের ২ নম্বর ইউনিটে ভর্তি হন সত্তর বছর বয়সি ওই বৃদ্ধ। বেশ কিছুদিন নানা পরীক্ষানিরীক্ষা, পর্যবেক্ষণের পর ঝুঁকির অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিত্সকরা। রীতিমতো একটি টিমও তৈরি করা হয় সেই অপারেশনের জন্য। চিকিৎসক শান্তনু সেনের নেতৃত্বে এই চিকিৎসকদের টিমে ছিলেন তমাল সেনগুপ্ত, ব্রতীশ দে, পুষ্পক দে, বিশ্বনাথ বর্মন, ঐষণা সিং ও কোয়েল মিত্র।
এই অস্ত্রোপচার যে কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল তা নিজের মুখেই জানান অস্ত্রোপচারের কাণ্ডারীরা। সার্জেন তমাল সেনগুপ্তর কথায়, “সাময়িক ভাবে হৃদস্পন্দন বন্ধ হওয়ার মতো উপক্রম হয়েছিল। যেটা অ্যানেসথেটিস্টদের তৎপরতায় তৎক্ষণাৎ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেন। এটা বলাই যায় মুহূর্তের জন্য হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অ্যানেসথেটিস্টদের তৎপরতায় এবং অবশ্যই গোটা টিমের তৎপরতায় আবার হার্ট রেট ফেরত আসে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে। তার পর আবার অস্ত্রোপচার করা হয়। খুব ভাল ভাবে অপারেশন হয়। একেবারে সফল অস্ত্রোপচার করে তাঁকে বাড়ি পাঠাতে পেরেছি।”
বিরল অস্ত্রোপচারে সাফল্য। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন রোগী। গর্বিত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষক-চিকিত্সক থেকে কর্মী, সকলেই। বিভাগীয় প্রধান প্রসূন ভট্টাচার্যের কথায়, “অপারেশন থিয়েটারের টেবিল। নিশ্চয়ই একটা মেজর সার্জারি হচ্ছিল। যার ফলে এটা কাটিয়ে উঠেছে এবং অপারেশন টেবিল থেকে রোগীকে বাইরে বের করে এনেছে, সম্পূর্ণ পর্যবেক্ষণে রেখেছে। নিঃসন্দেহে এই সফলতার সম্পূর্ণ দাবিদার টিম ওয়ার্ক।”
রোগীর হৃদযন্ত্র অকস্মাৎ স্তব্ধ হয়ে যায় অপারেশন টেবিলে। এমন ঘটনা হয়তো বিরল নয়। কিন্তু সেই স্তব্ধ হৃদযন্ত্র পুনরায় চালু করা নিঃসন্দেহে বিরল নজির তো বটেই, অতি বিরল বললেও ভুল বলা হবে না। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকদেরও এই অভিজ্ঞতা বিরল। আরও পড়ুন: গালিফ স্ট্রিটের হাটে উপচে পড়ছে মানুষের ভিড়, মুখে নেই মাস্ক!