
কলকাতা: তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব কঠোর হলে, কসবার ল কলেজের মতো ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্র নেতাদের জন্ম হত না। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অভিরূপ চক্রবর্তীকে সেন্সর করা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধেও একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। বললেন, “এই রাজনৈতিক নেতাদের প্রশ্রয়েই এই জিনিসগুলো বাড়ছে। আমি ওর মায়ের থেকেও সিনিয়র। তাঁকে সমালোচনা করতে গিয়ে তাঁর মুখে এই কথা আটকাচ্ছে না। তাঁর নেতারা তাঁকে সংশোধন করছে না। এর জন্যই কিন্তু ওই ল কলেজের ধর্ষণের ঘটনার অভিযুক্ত ছাত্র নেতাদের মতো ছেলেরা জন্মায়। ওরা তো জন্মে ছোট থেকে এত খারাপ ছিল না। দায়িত্ব নিয়ে খারাপ করা হয়েছে তাঁদের।”
শান্তার সাফ কথা, উপাচার্যের চেয়ারের মর্যাদাহানি হয়েছে। সে কারণেই বিশ্ববিদ্য়ালয় সিন্ডিকেট এই কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে। বলছেন, “কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় একটা দৃষ্টান্ত প্রতিবাদে রাখছে। ৫ বছরের জন্য ওকে সেন্সর করা হল। ৫ বছরের জন্য এমফিল, পিএইচডি সহ কোনও উচ্চশিক্ষার প্রবেশিকার মাধ্যমে এখানে রেজিস্ট্রার করতে পারবে না। কোনও চাকরির জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সে আবেদন করতে পারবে না।”
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন পরীক্ষা ফেলা নিয়েই মূল ঘটনার সূত্রপাত। তবে কোনওভাবেই ওইদিন পরীক্ষা স্থগিত হবে না বলে জানিয়ে দেয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। এরপরই তোপের পর তোপ দাগতে দেখা যায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অভিরূপ চক্রবর্তীকে। সেই দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শান্তা দত্ত বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের বাইরে একটা মঞ্চ বেঁধে উপাচার্যের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত কুরুচিকর কথাবার্তা বলতে থাকে। এগুলো বলার সময় ওর একবারও মনে হয়নি যে যাঁরা এগুলো শুনছে তাঁরা ওকেই ছোট ভাবছে। আমার কাছে কিন্তু কথাগুলো পৌঁছায়নি। পৌঁছে দিয়েছে মিডিয়া। আমার কোনও ব্যক্তিগত ভাবাবেগ নেই। আমি এখানে ব্যক্তি নই। আমি একজন উপাচার্য। আমি আইনসম্মতভাবে এই পোস্টে বসে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে নেতৃত্ব দিচ্ছি। আমাকে এইভাবে আক্রমণ করা মানে উপাচার্য আর উপাচার্যের চেয়ারের মর্যাদাহানি করা।”
এদিকে অভিরূপ বলছেন তাঁর শিক্ষার অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। তিনি আদালতে যাওয়ার কথাও বলছেন। শান্তা দত্ত যদিও বলছেন, “ওরা অধিকার আছে। যেতে পারে। কিন্তু বিশ্ববিদ্য়ালয় সিন্ডিকেট সেদিন যেমন পরীক্ষার পক্ষে ছিল। পরীক্ষা করিয়ে ছেড়েছে। তাতে জনসাধারণ খুশি হয়েছে। তেমনই এটাও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক অধিকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য ও তাঁর চেয়ারের মর্যাদাহানির জন্য সিন্ডিকেট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”