Higher Secondary: HS-এ নবম, ৮২টা কেমো নেওয়া অদ্রিজার জীবনের পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার কাহিনি জানুন

Higher Secondary third semester: মানসিকভাবে মেয়েকে চাঙ্গা রাখতে কী করতেন? জ্যোতি গণ বলেন, "আমি কখনও ওর সামনে ভেঙে পড়িনি। ওর সামনে চোখের জল ফেলিনি। ওকে সবসময় একটা কথা বলতাম, জ্বর, অন্য অসুখের মতোই একটা অসুখ। কখনও অসুখের কাছে হার স্বীকার করবি না। ও গান খুব ভালবাসত। নানারকমভাবে ওর মনটাকে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করতাম। তখন ছোট ছিল তো। শরীরের কষ্ট অবশ্য ও নিজে ফেস করেছে।"

Higher Secondary: HS-এ নবম, ৮২টা কেমো নেওয়া অদ্রিজার জীবনের পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার কাহিনি জানুন
মেয়েকে ফলমুখ করাচ্ছেন অদ্রিজার মাImage Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: সঞ্জয় পাইকার

Nov 01, 2025 | 6:41 PM

নিমতা: পরীক্ষায় ভাল ফল করলে কৃতীকে মিষ্টিমুখ করান পরিবারের লোকজন। কিন্তু, ভাল ফল করলেও মা তাঁকে মিষ্টিমুখ করালেন না। ফলমুখ করালেন। মিষ্টিমুখ নয় কেন? কারণ, এই ফলমুখের মধ্যে হাজার লড়াই, হাজার যন্ত্রণা লুকিয়ে রয়েছে। ৮২টা কেমোথেরাপি নিয়ে অদ্যম জেদে এগিয়ে যাওয়ার কাহিনি রয়েছে। তাই, উত্তর ২৪ পরগনার নিমতার অদ্রিজা গণের সাফল্যে আজ মায়ের চোখে আনন্দাশ্রু।

উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সেমেস্টারে নবম স্থানে রয়েছেন রামকৃষ্ণ সারদা মিশন সিস্টার নিবেদিতা গার্লস স্কুলের ছাত্রী অদ্রিজা। নিমতায় তাঁর বাড়িতে রয়েছেন মা, বাবা ও দিদি। ষষ্ঠ শ্রেণির গণ্ডি পেরনোর আগেই শরীরে বাসা বেঁধেছিল মারণরোগ টি সেল লিম্ফোমা ক্যানসার। চার বছর মারণরোগের সঙ্গে দাঁতে দাঁতে চেপে লড়েছেন অদ্রিজা। সঙ্গ দিয়েছে পরিবার। ৮২টি কেমোথেরাপি হয়েছে তাঁর।

আজ ক্যানসার জয়ের পর পড়াশোনাতে তাক লাগিয়ে দিলেন নিমতার এই মেয়ে। আজ মেয়ের সাফল্যে গর্বিত মা জ্যোতি গণ। আজ তাঁর চোখে আনন্দাশ্রু। মেয়ের জন্য গর্বে চোখের কোণ চিকচিক করছে। বললেন, “এটা ওর নিষ্ঠার জয়। ওর স্কুলও পাশে থেকেছে। প্রত্যেকেই উৎসাহিত করেছেন। আমার থেকে বোধহয় ওর স্কুল বেশি করেছে।” মানসিকভাবে মেয়েকে চাঙ্গা রাখতে কী করতেন? জ্যোতি গণ বলেন, “আমি কখনও ওর সামনে ভেঙে পড়িনি। ওর সামনে চোখের জল ফেলিনি। ওকে সবসময় একটা কথা বলতাম, জ্বর, অন্য অসুখের মতোই একটা অসুখ। কখনও অসুখের কাছে হার স্বীকার করবি না। ও গান খুব ভালবাসত। নানারকমভাবে ওর মনটাকে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করতাম। তখন ছোট ছিল তো। শরীরের কষ্ট অবশ্য ও নিজে ফেস করেছে।”

এরপরই তিনি বলেন, “ও যেরকম পরিশ্রম করেছে, তার সামান্যতম ফল যাতে পায়, সেটা চেয়েছিলাম। তাই ভাল লাগছে। ও যে বিষয় নিয়ে পড়তে চাইবে, আমরা কোথাও বাধা দেব না।” অদ্রিজা সাইকোলজি নিয়ে পড়তে চান বলে তিনি জানালেন।

দিদির সঙ্গে অদ্রিজা

মেয়ের এই সাফল্যের দিনে ফলমুখ করালেন মেয়েকে। মিষ্টিমুখ নয় কেন? জ্যোতি গণ বলেন, “মেয়ে মিষ্টি একদম খায় না। খাওয়ায় অনেক বিধিনিষেধ রয়েছে।” বোনের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত অদ্রিজার দিদিও। বললেন আগামিদিনে সুস্থ ও সফল হিসেবে দেখতে চান তিনি।

উচ্চমাধ্যমিকে অদ্রিজার বিষয়গুলি হল ভূগোল, সাইকোলজি, অর্থনীতি এবং কম্পিউটার সায়েন্স। পড়াশোনার বাইরে আর কী করতে ভাল লাগে তাঁর? অদ্রিজা বললেন, পাহাড়ে ঘুরতে যেতে ভাল লাগে। গান শুনতে, গল্পের বই পড়তে ভালবাসেন। আর ভালবাসেন ওয়েব সিরিজ দেখতে। ভবিষ্যতে মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চান।