পুরুলিয়া: তপন খুনের অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের রহস্যমৃত্যুর তদন্তে তৎপর সিবিআই।বুধবার জেলা পুলিশের থেকে এফআইআর কপি সংগ্রহ করবে সিবিআই। বুধবারই নিরঞ্জন বৈষ্ণবের রহস্যমৃত্যুর তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে দিয়েছে হাইকোর্ট। তদন্তভার হাতে পাওয়ার পর থেকেই তথ্য সংগ্রহের কাজে লেগে পড়েছে সিবিআই। বুধবার সকালে কলকাতায় স্পেশ্যাল ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিস থেকে একটি দল রওনা দেয় ঝালদার উদ্দেশে। রাঁচি থেকেও আরও একটি দল আসবে ঝালদায়। সূত্র মারফত তেমনটাই খবর পাওয়া যাচ্ছে। আজ মূলত রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে এই ঘটনার এফআইআর কপি নেবেন তদন্তকারীরা। ভাইয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে পুলিশি চাপের অভিযোগ তুলে থানায় সপ্তাহ খানেক আগেই ঝালদা থানায় এফআইআর করেছিলেন তাঁর দাদা। পুলিশ হেনস্থা, তার জেরে মানসিক চাপের যে অভিযোগ তুলছে নিরঞ্জন বৈষ্ণবের পরিবার, তা খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা।
তপন কান্দু মামলায় মূল অভিযুক্ত শাসকদল। তপন কান্দুর স্ত্রী বারবার অভিযোগ করছিলেন, খুনের আগে থেকেই পুলিশের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের চাপ আসছিল। ঝালদা থানার আইসির বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট করে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। সিবিআই তদন্তে উঠে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। তপন কান্দু যেসময় খুন হন, ঘটনাস্থল থেকে চারশো মিটার দূরেই ছিল পুলিশের আটি ভ্যান। সাব ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ঘটনাস্থলে যাননি বলে অভিযোগ। সুতরাং এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে।
এরই মধ্যে এই ঘটনার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের রহস্যমৃত্যু। বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় তাঁর ঝুলন্ত দেহ। তাতেও পুলিশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠছে। পুলিশ চাপেই আত্মঘাতী হয়েছেন নিরঞ্জন, দাবি পরিবারের। তবে সিবিআই এটাও খতিয়ে দেখবে, আদৌ একটি আত্মহত্যার ঘটনা কিনা। যদি আত্মহত্যা হয়েই থাকে তাহলে পুলিশের ভূমিকা কী? সূত্রের খবর, সিবিআই মূলত ‘মানসিক চাপ’ সংক্রান্ত বিষয়টির ওপর ফোকাস করছে। প্রশ্ন হচ্ছে, পুলিশ কি কোনওভাবে ঘটনার পরম্পরা সাজিয়ে নিরঞ্জনের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছিল? কারণ ঘটনাস্থলের কাছে উপস্থিত ছিলেন নিরঞ্জন। পেশায় গৃহশিক্ষক নিরঞ্জনের মানসিক চাপটা ঠিক কী কারণে তৈরি হয়েছিল, সেটাই জানতে চান তদন্তকারীরা।
এই দুটো মামলাই সম্পর্কযুক্ত। হাইকোর্টও তেমনটাই মনে করে। সেক্ষেত্রে দুটো ঘটনাই সমান্তরালভাবে তদন্ত করছে সিবিআই। এদিকে, ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এখনও আটক সত্যবান প্রামাণিক। ধৃত নরেন কান্দুর ঘনিষ্ঠ। তাঁর হোটেলেই খুনের পরিকল্পনা হয়েছিল বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: আজ পুলিশের থেকে তথ্য নেবে সিবিআই, হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে এবার শুরু অধরা সূত্রের খোঁজ