CBI On Hanskhali Physical Assault Case: আজ পুলিশের থেকে তথ্য নেবে সিবিআই, হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে এবার শুরু অধরা সূত্রের খোঁজ
CBI On Hanskhali Physical Assault Case: গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর, প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন।
নদিয়া: হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে তদন্তভার হাতে নিল সিবিআই। বুধবারই জেলা পুলিশের তরফ থেকে এফআইআর কপি সংগ্রহ করবে সিবিআই তদন্তকারীরা। হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে রাজ্য পুলিশের ওপর আস্থা ছিল না বলে হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন সুস্মিতা সাহা-সহ কয়েকজন মহিলা আইনজীবী। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছিলেন। মঙ্গলবারই ছিল এই মামলার শুনানি। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর, প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন।
হাঁসখালি ঘটনায় ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য পুলিশ। মূল অভিযুক্ত অর্থাৎ প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার ছেলেকে গত রবিবারই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার গ্রেফতার করা হয় আরও এক জনকে। বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে। এই ঘটনায় এলাকার এক হাতুড়ে ডাক্তার ও শ্মশান কর্তৃপক্ষের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে।
প্রশ্নের মুখে চিকিৎসকের ভূমিকা
রবিবার রাতে মেয়ের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের সময় স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন কিশোরীর মা। সেই হাতুড়ে ডাক্তারের সঙ্গেও কথা বলতে চান তদন্তকারীরা। পুলিশের অনুমান, চিকিৎসক নিশ্চয় রোগী দেখে বুঝতে পেরেছিলেন, তাঁর সঙ্গে কী হয়েছে। তারপরও তিনি কেন রোগীকে ফেরত পাঠিয়েছিলেন, কেন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেননি। কেন পুলিশকেও বা স্বতঃপ্রণোদিতভাবে গোটা বিষয়টি জানাননি। সেই চিকিৎসকেরও ভূমিকা খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা।
শ্মশান কর্তৃপক্ষের ভূমিকা মারাত্মক
শ্মশান কর্তৃপক্ষের ভূমিকাও অত্যন্ত সন্দেহজনক। নির্যাতিতার মায়ের বয়ান অনুযায়ী, মঙ্গলবার ভোর রাতে যখন তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়, তখন পাড়ার কয়েকজন ছেলে তাঁদের বাড়িতে চলে এসেছিলেন। । তাঁরা কীভাবে খবর পেলেন, সেটাও স্পষ্ট নয় নির্যাতিতার বাড়ির লোকের কাছে। মেয়ের আকস্মিক পরিণতিতে কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন বাবা-মা। মাথা কাজ করছিল না কিছু। সেসময় পাড়ার ছেলেরাই সাহায্যের নামে তৎপরতার সঙ্গে নাবালিকার সৎকার্য করাতে উদ্যত হন। অভিযোগ, তাঁরাই দেহ নিয়ে শ্মশানের উদ্দেশে রওনা দেন। নাবালিকার বাড়ির হাফ কিলোমিটারের মধ্যে এক শ্মশান। সেখানেই কোনও ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া দাহ করা হয় দেহ। এমনকি আগুন নিভিতে দ্রুত সরিয়ে ফেলা হয় ছাইও। ঘটনার রাতেই শ্মশানের ওই এলাকা পুরো সাফ! রবিবার সকালে শ্মাশানে গিয়ে কারোরই দেখা মেলেনি। শ্মশান কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া পাওয়া সম্ভব হয়নি। এবার তাঁরই ডাক পড়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রেগন্যান্ট তত্ত্ব
হাঁসখালির গণধর্ষণ কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম প্রতিক্রিয়া, “পুলিশ এখনও বিষয়টাই জানতে পারেনি। এই যে বারবার দেখাচ্ছে, একটা বাচ্চা মেয়ে নাকি মারা গিয়েছে রেপড হয়ে। আপনি রেপড বলবেন? নাকি প্রেগন্যান্ট বলবেন? না লাভ অ্যাফেয়ার্স বলবেন? এটা ইনকোয়ারি করেছেন কি? আমি পুলিশকে বলেছি এটা।” এই ঘটনার নিন্দা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গ্রেফতার হয়েছে অভিযুক্ত। কিন্তু অভিযুক্তের সঙ্গে ওই মেয়ের প্রেম ছিল কি না প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সব দিক খতিয়ে দেখেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। স্থানীয় পুলিশকে তদন্ত সংক্রান্ত সব রিপোর্ট অবিলম্বে সিবিআই আধিকারিকদের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তের সব নথি তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে। যে সব অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদেরকেও সিবিআই-এর হাতে তুলে দিতে হবে। আগামী ২ মে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।