কলকাতা: ধৃত সিভিকই মদ্যপ অবস্থায় তিলোত্তমার খুন-ধর্ষণ করেছে। ৫৫ দিনের মাথায় প্রথম চার্জশিটে এ কথা উল্লেখ সিবিআইয়ের। কিন্তু, একার পক্ষে কী এই কাণ্ড ঘটনো সম্ভব? এখনও প্রশ্ন তুলছে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ। প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। প্রশ্ন শিল্পী মহলেও। নাট্য ব্যক্তি চন্দন সেন তো এখনও ধৃত সিভিককেই একমাত্র দোষী বলে মানতে নারাজ। সাফ বলছেন, “রাজ্য সরকার দু’দিন বাদে ওর জামা কাপড় নিয়েছিল কেন? তাঁর ফরেন্সিক রিপোর্ট কোথায়? ও মত্ত অবস্থায় ধর্ষণ করেছে এর ফরেন্সিক রিপোর্ট কোথায়? কীভাবে এটা প্রমাণিত হচ্ছে তাহলে? যতক্ষণ না এই ফরেন্সিক রিপোর্ট আসছে ততক্ষণ আমি বিশ্বাস করি না একমাত্র ওই এই খুন এবং ধর্ষণ করেছে।”
প্রশ্ন তুলছেন আন্দোলনকারীরাও। এক আন্দোলনকারী স্পষ্টতই বলছেন, “একজনের পক্ষে এতটা করা অসম্ভব বলেই মনে হয়। তাছাড়াও এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে বাঁচাতে কত চেষ্টার কথা শোনা যাচ্ছে। খোদ প্রিন্সিপাল জড়িত। কিন্তু, শুধু একজন সিভিককে বাঁচাতে এত বড়বড় লোক এগিয়ে এলেন? এটা আমার প্রশ্ন। এটা সিবিআইয়ের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট। আশা করি আরও তদন্ত হলে আরও দোষীদের খোঁজ মিলবে।” তবে সিবিআইয়ের উপর এখনও পূর্ণ আস্থা রয়েছে বিজেপি নেতা সজল ঘোষের। তিনি ৫৫ দিন দেরি নয় বরং তদন্ত প্রক্রিয়ার দ্রুততা হিসাবেই দেখতে রাজি।
সজল বলছেন, “আমি বিশ্বাস করি সিবিআই নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে। প্রকৃত অপরাধীদের ধরার জন্য যা যা করতে হয় তাঁরা সেটা করবে। ৫৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট পেশ বাংলার ইতিহাসে খুব কমই হয়েছে। তার জন্য আমাদের সবার উচিৎ সিবিআইকে ধন্যবাদ বলা। আমরা চাই এবার প্রকৃত আসামীদের সকলের নাম সামনে আসুক।” মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলছে সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর তরফে। তিনি বলছেন, “সিভিক পুলিশকে ধর্ষক হিসাবে চিহ্নিত করেছে সিবিআই। কিন্তু, মানুষ অপেক্ষা করবে কেন এই ঘটনা ঘটল, কারা তথ্য-প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করল, কারা প্রশ্রয় দিল সবটা জানতে।”
খোঁচা দিয়েছেন তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। বলছেন, “এই চার্জশিটে ধৃত সিভিককেই একমাত্র ধর্ষক এবং খুনি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সঙ্গে লেখা রয়েছে মত্ত অবস্থায় সেই এই ধর্ষণ এবং খুন করেছে। অর্থাৎ, ১২ ঘণ্টার মধ্যে কলকাতা পুলিশ যাকে গ্রেফতার করেছিল, সেই এক এবং একমাত্র ধর্ষক এবং খুনি। মেনে নিল সিবিআইও! আশা করি এবার সমস্ত রকম কনসপিরেসি থিওরিতে যবনিকা পতন হবে!”
কলকাতা পুলিশকে মানত্য দিচ্ছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও। লিখছেন, ‘যাঁরা CBI চেয়েছিলেন, দেখুন, মূল ধর্ষণ, খুনের মামলায় তারা শুধু সিভিকের নামে চার্জশিট দিল, যাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। তদন্ত চলুক। ডাক্তারদের গোষ্ঠী রাজনীতির নাটক, নানা গল্প চলবে। হয়তো পরে অন্য নাম জুড়বে। মানুন, কলকাতা পুলিশ ঠিক পথেই ছিল।’